সংক্ষিপ্ত
শনিবার দেওয়ানগঞ্জের মাঠে হবে সভা। কয়লা খনি নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে ধরেই এই সভা ডেকেছে দেউচা পাঁচামী আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটি।
আশিস মণ্ডল, সিউড়ি- দেউচা-পাঁচামী প্রস্তাবিত কয়লা খনি (Deucha Panchami coal mine) ঘিরে উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে। প্রস্তাবিত কয়া খনির বিরোধিতায় ক্রমশই সুর চড়াচ্ছে স্থানীয় আদিবাসী তরুণ তরুণীরা। স্থানীয়দের উদ্যোগে আগামী ১৮ ডিসেম্বর অর্থাৎ শনিবার একটি সভা ডাকা হয়েছে। সেই সভার প্রচারের জন্যই বৃহস্পতিবার বীরভূম (Birbhum) দেউচা-পাঁচামী প্রস্তাবিত কয়লা খনির এলাকার হাটগাছা, হরিনশিঙা, দেওয়ানগঞ্জ, চান্দা, নিশ্চিন্তপুর প্রভৃতি মৌজার পঁচিশ-তিরিশ গ্রামে ঘুরেছে এলাকার আদিবাসী যুবকদের বাইক মিছিল। সেই মিছিল থেকেই গ্রামের পর গ্রামে বিলি করা হয়েছে ছাপানো হ্যান্ডবিল।
আহ্বান জানানো হয়েছে শনিবারের সভায় উপস্থিত। শনিবার দেওয়ানগঞ্জের মাঠে হবে সভা। কয়লা খনি নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে ধরেই এই সভা ডেকেছে দেউচা পাঁচামী আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটি। সেই সভায় অন্যান্য নানা সংগঠনের সাথে সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরামও সামিল হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভূমিরক্ষা কমিটির নামে ছাপানো হ্যান্ডিবিলে কি উল্লেখ আছে ? তাতে ছাপানো হরফে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, ‘দয়া নয়, অধিকার চাই, কয়লা খনি নয়, আদিবাসী সংস্কৃতি-জঙ্গল-জন জীবনের উন্নয়ন চাই।’ হ্যান্ডবিলে আরও লেখা হয়েছে, ‘যেখানে যেখানে কয়লা খনি হয়েছে সেখানে মানুষ ধ্বংস ছাড়া আর কি পেয়েছে ? এমন কোন খনি-খাদান এলাকা আছে যেখানকার শিশুরা লেখাপড়া শিখেছে, স্বাস্থ্যবান শরীর পেয়েছে, সম্মানের সাথে কাজ পেয়েছে, চিকিৎসা পেয়েছে, মেয়েরা নিরাপত্তা পেয়েছে, ভাষা-সংস্কৃতি রক্ষা পেয়েছে ? বরং জুটেছে ২০০-৩০০ টাকার রোজে অনিশ্চিত কাজ আর সিলিকোসিস রোগ।
যদিও অনেক আগেই স্থানীয় জেলা শাসক বিধান রায় বলেছিলেন, “এই প্রকল্পের মোট খাস জমির পরিমাণ ৫৯৬.০২ একর। বিভিন্ন সরকারি দফতরের জমি ৭২.৯২ একর। বনভূমি ৩০৯.৭০ একর। ব্যক্তি মালিকানাধীন রায়তি জমি ২৩৯২.১৩ একর। মোট ৩৩৭০.৭৭ একর জমির উপর কয়লাখনি করা হবে। বনভূমি ধ্বংস এবং খাস জমিতে যারা রয়েছেন তাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যত গুলি গাছ কাটা হবে তার দ্বিগুণ গাছ লাগানো হবে। ১৫ টি পরিবার খাস জমিতে বসবাস করছেন। তাদের তিন মাস পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। অন্যত্র যাওয়ার জন্য দশ হাজার টাকা, বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি, জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিবার পিছু এক বছর দশ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
২৮৫ জন ক্রাসার মালিকদের ৫০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা করে কাঠা প্রতি পাবেন। এছাড়াও অন্যান সুবিধা রয়েছে। তিন হাজার পাথর খাদান ও ক্রাসার শ্রমিকদের এক্কালিন ৫০ হাজার টাকা ভাতা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিবার পিছু ১০ হাজার টাকা করে এক বছর দেওয়া হবে”। জেলা শাসকের কথায়, সরকার সবার জন্য ভালো প্যাকেজ করেছে। এনিয়ে আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বৈঠক করব। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি যাব। এই কয়লা খনি সরকারের একটা স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে কাউকে বঞ্চিত করা হবে না”। কিন্তুর সরকারের এই প্রস্তাব বর্তমানে নাকোচ করে দিয়েছেন আদিবাসীরা। তাঁরা ভূমি আর জঙ্গলের অধিকার ছাড়তে নারাজ।
প্রতিবাদীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই লড়াই শুধু আদিবাসীদের নয়। এ লড়াই আদিবাসী,গরিব হিন্দু মুসলমান, দলিত সহ গতরে খাটা সব মানুষের।’ এমনই আওয়াজ তুলে কয়লা খনির প্রতিবাদে শনিবার সকলকে দেওয়ানগঞ্জের মাঠে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছে ভূমিরক্ষা কমিটির। কমিটির তরফে সুনীল মুর্মু বলেছেন, ‘‘আমরা গ্রামে গ্রামে বসে কয়লা খনি নিয়ে মানুষের মতামত নিয়েছে। তাতে উঠে এসেছে কেউ কয়লা খনি চায় না। মানুষের সেই মত জানানোর জন্যই এদিন আমরা এলাকার গ্রামে গ্রামে হ্যান্ডবিল দিয়েছি। শনিবার সভায় আসার আহ্বান জানিয়েছি সব স্তরের মানুষকে।’’
Saheb Bandh Corruption: এশিয়ানেট নিউজ বাংলার খবর হাতিয়ার, আন্দোলনে পুরুলিয়ার বিজেপি
Hockey Championship: গ্রাম বাংলায় হকি-আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগী মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, শুরু প্রতিযোগিতা
TMC Vs BJP: 'মমতা দুর্গাপুজো করেন না', ইউনেস্কোর স্বীকৃতি নিয়ে কটাক্ষ বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারের