সংক্ষিপ্ত
আমেরিকা, রাশিয়া, আফ্রিকা, আফগানিস্তান সহ মোট ১৮২ টি দেশের নোট ও মুদ্রা রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। রয়েছে বাবর, টিপু সুলতান, আকবরের মত সম্রাটের আমলে বহু প্রাচীন মুদ্রাও।
করোনা আবহে যখন সারা দেশ উত্তাল, তখন নিজের বাড়িতে বসে আপন মনে দেশ-বিদেশের মুদ্রা সংগ্রহে ব্যস্ত মালদহ শহরের মকদমপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ গুপ্ত। কি নেই তাঁর সংগ্রহশালায়? এশিয়ার বিভিন্ন দেশ তো বটেই আমেরিকা, রাশিয়া, আফ্রিকা, আফগানিস্তান সহ মোট ১৮২ টি দেশের নোট ও মুদ্রা রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। রয়েছে বাবর, টিপু সুলতান, আকবরের মত সম্রাটের আমলে বহু প্রাচীন মুদ্রাও।
মালদহের একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত বিশ্বজিৎ ১৯৮৩ সাল থেকে এই নেশার সঙ্গে যুক্ত। দিল্লিতে বসবাসকারী বিশ্বজিতের এক আত্মীয় যতীন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত তাঁকে বেশ কিছু বিদেশী মুদ্রা দিয়েছিলেন। সেই থেকেই মুদ্রা জমানোর নেশা তৈরি হয়েছিল তাঁর মধ্যে। তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে, এই সব সংগ্রহ করেন। কখনও রাজ্যের বাইরে গেলে সেখান থেকেও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন। কখনও বা তাঁর আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত দেশের বাইরে ঘুরতে গেলে তাদের মাধ্যমেও বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- পুজোর পরই খুলতে পারে স্কুল, করোনা পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রস্তুত করবেন সন্তানকে, রইল টিপস
এই মুহূর্তে বিশ্বজিতের সংগ্রহে রয়েছে ১২২৫ সালে টিপু সুলতান প্রচলিত মুদ্রা, যা লিঙ্গা মুদ্রা নামে প্রচলিত ছিল। এছাড়াও রয়েছে ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট বাবর এবং ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে আকবর প্রচলিত মুদ্রা। আছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একাধিক মুদ্রাও। ১৯১৭ সালে প্রবর্তিত ভারতীয় এক টাকার দুর্লভ নোটের সংগ্রহও রয়েছে তাঁর কাছে। তাঁর দাবি, 'এই নোট অল্প কিছুদিনের জন্য ভারতে চালু থাকলেও তা পরবর্তীতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এই নোটের মূল্য এক টাকা হলেও, সংগ্রহকারীদের কাছে আজ এই নোটের মূল্য লক্ষাধিক।'
এছাড়াও তাঁর সংগ্রহে রয়েছে ১০০ টাকার এমন একটি নোট যার জয়েন্ট এর প্রতিটি নম্বর ১১১। পৃথিবীর বিখ্যাত মনীষীদের জন্মদিনের তারিখ সম্মলিত বিভিন্ন নোটও রয়েছে তাঁর সংগ্রহশালায়। বিশ্বজিৎ বলেন, "আমি বিদেশে কোনও দিন ঘুরতে যেতে পারিনি। কিন্তু ভালো লাগে বর্তমানে বিশ্বের ১৮২ দেশ আমার বাড়িতে বন্দি।" অভিনব এই শখের কারণেই, কোন খোঁজ পেলেই যেকোনও জায়গায় ছুটে যান তিনি। এছাড়াও আত্মীয়-স্বজন, পরিচিত, জেলার চিকিৎসকরা যখন ভারতবর্ষের বাইরে যান তখন বিশ্বজিতের কথা মনে রেখে তাঁরা সঙ্গে করে সেই দেশের টাকা নিয়ে আসেন। এভাবেই ধীরে ধীরে ৩৮ বছরে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে এই সংগ্রহশালা।
আরও পড়ুন- চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে, মাথায় আঘাত করে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট, চাঞ্চল্য হাওড়ায়
এত বড় সংগ্রহ, কী করবেন আগামীতে? এর উত্তরে বিশ্বজিৎ বলেন, "আগামী প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জন্য এই সব দুর্লভ জিনিসপত্র আমি একটি সংগ্রহশালা করে সংরক্ষণ করতে চাই। স্কুল-কলেজ ছাড়াও সাধারণ মানুষ যদি এই সংগ্রহের প্রতি নিজেদের আগ্রহ দেখান, জানতে চান দেশ-বিদেশের মুদ্রার কথা, সেখানেই আমার এই সংগ্রহের সার্থকতা।"