সংক্ষিপ্ত
হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম, কাটরা মসজিদ, কাঠগোলা বাগান, নসিপুর রাজবাড়ি, মোতিঝিল (প্রকৃতি তীর্থ) প্রভৃতি দর্শনীয় স্থানগুলিতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়াতে 'বিধিবদ্ধ ভ্রমণ' চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উৎসবের মরশুম দীপাবলি (Diwali) উপলক্ষ্যে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) শহরকে পর্যটক (Tourist) ও দর্শনার্থীদের সামনে নতুনভাবে তুলে ধরতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে 'মুর্শিদাবাদে হেরিটেজ সোসাইটি' (Murshidabad heritage society)। সেইমতো শহরের বিভিন্ন অভিজাত আবাসিক হোটেল (Hotel) থেকে শুরু করে, ট্যুর অপারেটর, গাইড ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এতেই হাসি ফুটেছে হোটেল মালিক, গাইড, টাঙ্গাচালক, স্থানীয় ছোট বড় ব্যবসায়ী সহ পর্যটনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত বিভিন্ন পেশার কয়েক হাজার মানুষের মুখে।
হাজারদুয়ারি (Hazarduari) প্যালেস মিউজিয়াম, কাটরা মসজিদ, কাঠগোলা বাগান, নসিপুর রাজবাড়ি, মোতিঝিল (প্রকৃতি তীর্থ) প্রভৃতি দর্শনীয় স্থানগুলিতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়াতে 'বিধিবদ্ধ ভ্রমণ' চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী দিনে করোনার ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে প্রতিদিন পর্যটকরা কীভাবে উৎসবের মরসুমে মুর্শিদাবাদে আসবেন তার একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে। ভাইফোঁটার সময় মুর্শিদাবাদে পর্যটক সমাগম থাকবে বলে আশায় বুক বাঁধছেন পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই।
একদা বাংলার রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। দুই শতাধিক বছর আগে নবাবি শাসনের অবসান হলেও মুর্শিদাবাদ শহরে রয়েছে নবাবি আমলের প্রাসাদ, মসজিদ, স্মৃতিসৌধ সহ একাধিক স্থাপত্য নিদর্শন। নবাবি স্থাপত্য নির্দশনের পাশাপাশি সম্প্রতি মোতিঝিল মসজিদ সংলগ্ন বিশাল সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প, বিনোদন পার্ক মোতিঝিল বা প্রকৃতি তীর্থ।
এক দশক আগে হাজারদুয়ারি, ইমামবাড়া, কাটরা মসজিদ, খোসবাগে সিরাজের সমাধি সহ নবাবি আমলের স্থাপত্য নিদর্শনের টানে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা মুর্শিদাবাদে আসতেন। প্রকৃতি তীর্থ উদ্বোধনের পর থেকে হাজারদুয়ারির প্যালেস মিউজিয়ামের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে সেটা আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। কিন্তু করোনার কোপে প্রায় দেড় বছর ধরে মুর্শিদাবাদ পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ায় পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পেশার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিন গুজরান করতে হয়েছে তাঁদের।
আরও পড়ুন- ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, চিকিৎসা চলছে দিল্লিতে
এবার সকলেই তাঁদের মূল পর্যটন ব্যবসায় ফিরতে চাইছেন। আর এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা আরও জোরদার হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সময়ে মুর্শিদাবাদে পর্যটকের ঢল নামে। শহরের ছোটবড় সব হোটেলে ঘর পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। করোনার জেরে গত বছর পুজোর মরশুমে অধিকাংশ ঘর ফাঁকা ছিল। চলতি বছরে কালীপুজো (Kalipuja) পর্যন্ত প্রায় সব ঘর বুকিং হয়ে রয়েছে।
হোটেল মালিকরা বলেন, গত দেড় বছর ধরে ব্যবসা ধুঁকছিল। পুজোর মরশুম শুরু হতেই ব্যবসা চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। গাইড বাসির খান, বাসুদেব দাসরা বলেন, মাস খানেক আগেও হাজারদুয়ারিতে এসে দিনের বেশিরভাগ সময় বসে থাকতে হত। দিনের শেষে যা রোজগার হতো, তা দিয়ে সংসার চলত না। পুজোর মরশুম শুরু হতে ভালোই রোজগার হচ্ছে। এইভাবে চললে অসুবিধা হবে না।
আরও পড়ুন- ফাটল অবৈধভাবে মজুত করা বোমা, বিস্ফোরণের তীব্রতায় ভাঙল তৃণমূল কর্মীর বাড়ির ছাদ
মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, "বৈঠকের পরে আগামী দিনে নবাব নগরীতে ফের পর্যটন ব্যবসায় জোয়ার আসতে চলেছে। একসঙ্গে মিলে নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে তাহলেই আমরা পূর্বের অবস্থায় ফিরে পেতে পারব।"