সংক্ষিপ্ত

চাহিদার অভাবে বিলুপ্তির মুখে  মুর্শিদাবাদের জগৎবিখ্যাত কাঁসা শিল্প। এক সময়ে জগৎজোড়া সুখ্যাতি থাকলেও, চাহিদা আর আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে এখন ধুঁকছে মুর্শিদাবাদের বিখ্যাত কাঁসা শিল্প। 

চাহিদার অভাবে বিলুপ্তির মুখে  মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) জগৎবিখ্যাত কাঁসা শিল্প ( Kansa Industry)। এক সময়ে জগৎজোড়া সুখ্যাতি থাকলেও, চাহিদা আর আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে এখন ধুঁকছে মুর্শিদাবাদের বিখ্যাত কাঁসা শিল্প।জেলার বহু শিল্পী তাই কাজ হারিয়ে পেটের টানে বিকল্প রুজী বাছছেন।আর হাতে গোনা কয়েক জন যারা এখনও বাপ-ঠাকুরদার আমলের এই ঐতিহ্যকে কোনওরকমে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাঁদের অবস্থাও ক্ষীয়মান।

আরও পড়ুন, Murder Case: পরকীয়ায় মত্ত হয়ে স্বামীকে গলা টিপে খুন ভাঙড়ে, ধৃত স্ত্রী

আফসোস করে অন্য শিল্পে যোগদানকারী এক সময়ের কাঁসা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পাঁচুগোপাল দাস বলেন, 'একদিকে কাঁচা মালের অভাব,পাশাপাশি আধুনিক বড় বড়  মেশিনে তৈরি নিত্য নতুন ডিজাইনের  বাসনপত্র বাজার দখল করে ফেলেছে।তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পের ওঠার মত পরিকাঠম আমাদের মত ক্ষুদ্র শিল্পীদের নেয়,এমনকি  সরকারের এই গ্রামীণ হস্তশিল্পে কোন লক্ষ্য নেই। সরকারি কোনও রকম সাহায্য মিললে টিকে যেতে পারে প্রাচীন কালের এই ঐতিহ্যশালি নবাবী আমলের কাঁসা  শিল্প।' মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজার,বহরমপুর,লালবাগে এক সময় রমরমিয়ে ছিল প্রাচীন এই গ্রামীণ কাঁসা শিল্পের বাজার।আজ তা ক্রমশ ছোট হয়ে এসেছে।সামান্য কিছু এলাকাতেই এখন জীবিত জেলার এই প্রাচীন  কাঁসা শিল্প। যার মধ্যে জঙ্গিপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁসারী পাড়া । এখান থেকেই এক সময়  শয়ে শয়ে কাঁসা  শিল্পের শিল্পীরা বসবাস করতেন ।এখন কেবল নামটাই   আছে  'কাঁসারীপাড়া'। কিন্তু দেখা নেই সেই নিয়ম করে কাকভোরে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা-পেতলের খটখটানি শব্দ আর আফোরের ধুঁয়োরও। পাড়ার মাঝে দিয়ে আছে কাঁচা পাকা রাস্তা । এই রাস্তা ধরেই বছর কয়েক আগেও গরুর গাড়িতে করে থালা কলসি তৈরির  কাঁচা মাল আসতো । এমনকি কাঁসারি ছাড়াও  বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এই শিল্পের কাজের সঙ্গে  যুক্ত ছিলেন। কাঁসা -পেতল -দস্তা আফোরে পুড়িয়ে আগুনের গোলা তৈরি করে পিটে পিটে তৈরি হত  চাহিদা মত নানান নক্সার থালা কলসি।আজ অবশ্য আদিকালের বহু প্রতিষ্ঠিত সেই কাঁসা-পেতলের থালা,কলসি, বাটি থেকে শুরু করে  রকমারি বাসন তৈরি  শিল্পটি আজ বিলুপ্তি প্রায়। কয়েক পুরুষ ধরে এই শিল্পে যুক্ত  মানুষেরা বংশ পরস্পর  এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাই ঘরে ঘরে এখন  রকমারি  কাঁসা-পেতলের বাসন মেলে। জীবন জীবিকা পালনের এক মাত্র উৎস ছিল এই শিল্প । এখানকার তৈরি বাসন পত্র রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হাটে বাজারে রপ্তানিও করা হত ।

আরও পড়ুন, Durga Puja: দশমীতেও হামলা বাংলাদেশের মন্দিরে, বেধড়ক মার ভক্তদেরও

বর্তমানে মেশিনে তৈরি অত্যাধুনিক রকমারি বাসন বাজার দখল করে নেওয়ায়  এই শিল্পে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে । এই শিল্পের শিল্পীরাও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন। যেমন সমর দাস এখন কাঁসা ছেড়ে আর্ট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। এরই মাঝে দেখা মিলল এক চিলতে ঘরে ভ্যাপসা গরমে  এক কোনে  সাধু চরন দাস, কাশি চরন দাসেরা  আজও বাপ-ঠাকুর দার শিল্পটিকে  আঁকড়ে ধরে পরে রয়েছেন । জিজ্ঞাসা করতে একটাই উত্তর,"জীবনের শেষ পর্যন্ত এই কাজ ছাড়বো না।'

আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ  

আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা  

আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়  

আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে  

YouTube video player