সংক্ষিপ্ত

  • মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে নিয়ে রোজ অভিযোগ আসছিল
  • প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করছিল ছেলে
  • নিরুপায় বাবা-মা ছেলের পায়ে শিকল বেঁধে দেন 
  • এমনই অমানবিক ছবি ধরা পড়ল রায়গঞ্জের সীসগ্রামে

মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে। যেখানে সেখানে চলে যায়। প্রতিবেশীরা তা নিয়ে আপত্তি জানান। সেই কারণেই ছেলের পায়ে শিকল বাঁধলেন বাবা-মা। এভাবেই ছেলেকে বন্দী করলেন তাঁরা। এমনই অমানবিক ছবি ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের সীসগ্রামে। 

আরও পড়ুন- সলিসিটর জেনারেলের সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠক, তুষার মেহতার অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি তৃণমূলের

বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের সীসগ্রামে নিজের বাড়ির একচিলতে ভাঙাচোরা বারান্দায় মধ্যেই বসে থাকে বাপি রায়। তার পা বাঁধা রয়েছে লোহার শিকল দিয়ে। সারাক্ষণ শিকল বাঁধা থাকায় পায়ে কালশিটে পরে গিয়েছে। পা বাঁধা থাকায় ঠিক মতো চলাফেরাও করতে পারে না। একদৃষ্টে শুধু তাকিয়ে থাকে। কিন্তু, ১০ বছর কয়েক আগেও ছবিটা এইরকম ছিল না। 

 

আগে প্রাণবন্ত ছিল বাপি। বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে যেত। গ্রামের মাঠে খেলাধুলো করত। কিন্তু, তারপরই ধীরে ধীরে তার আচরণে পরিবর্তন আসে। মানসিক রোগ ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসার জন্য ছেলেকে নিয়ে শিলিগুড়ি যান বাবা-মা। কিন্তু, অর্থের অভাবে পেশায় দিনমজুর খোকন রায় ছেলের চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। তারপর স্থানীয় হাসপাতালেও দেখান। তবে সেখানে ছেলের স্বাস্থ্যের কোনও উন্নতি হয়নি। বরং রোগ বাড়তেই থাকে। বাধ্য হয়েই ছেলের পায়ে লোহার শিকল বেঁধে দেন। বাবা-মা এখন অসহায়। ছেলের কষ্ট দেখেও নীরবে চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেন না। 

আরও পড়ুন- এড়ানো গেল বড়সড় দুর্ঘটনা, বর্ধমানে লাইনচ্যুত আপ হাওড়া রাধিকাপুর এক্সপ্রেস

খোকন বাবু বলেন, "গতকয়েক মাস ধরে প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র ভাঙচুর করত বাপি। বাধ্য হয়েই শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি। জমিজমা বেচে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছি। এখন হাতে পয়সা নেই। সরকার এগিয়ে এলে ছেলেটাকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারব।"

আরও পড়ুন- সেন্ট্রাল অ্য়াভিনিউতে BJP-র মিছিল আটকাতেই ধুন্ধুমার, আটক অগ্নিমিত্রা সহ বিধায়ক-নেতারা

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা লক্ষী বর্মন বলেন, "ঘটনাটা শুনেছি। বাপি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় লোকজনের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করত। বাধ্য হয়েই পরিবারের সদস্যরা তাকে আটকে রেখেছে। তবে ওর চিকিৎসার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।"