সংক্ষিপ্ত

শিক্ষার মানের ব্যাপক অবনমন ঘটেছে এবং সরকারি বিদ্যালয়গুলো দীর্ঘদিন ছাত্রছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে। তাই বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী কম ছাত্র-ছাত্রী বিশিষ্ট বিদ্যালয়গুলোকে মার্জ করবার কথা ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ করছে শিক্ষক সমিতি।

আজ রাজ্য শিক্ষা দপ্তর তৃতীয়, পঞ্চম, অষ্টম ও দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের 'স্টেট এলিজিবিটি সার্ভে' বা 'স্যাস' গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই এবং বিদ্যালয়গুলোর পরিস্থিতি নির্ধারণ করবার জন্য নাকি এই পরীক্ষা। কিন্তু এই পরীক্ষায় চক্র পিছু মাত্র ১০টি করে প্রাথমিক ও ৫টি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্বাচন করা হয়েছে। অর্থাৎ নামে মাত্র কয়েকটি বিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সমস্ত মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন তাও মাত্র ৩০ নম্বরের জন্য দেড় ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইংরাজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের এই পরীক্ষাকে প্রহসন বলা হয়েছে। পূর্বতন রাজ্য সরকার বহির্মূল্যায়ন (Diagnostic Achievement Test- DAT) এবং কেন্দ্রীয় সরকারও ন্যাস (National Achievement Survey- NAS) এর মাধ্যমে সমীক্ষা করেছে। কিন্তু শিক্ষার মানের পরিবর্তনের জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় পাশ ফেল নেই, শ্রেণীভিত্তিক শিক্ষক নেই, প্রাথমিকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার শিক্ষক পদ শূন্য, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষাকর্মী না থাকায় শিক্ষাদানটাই গৌণ হয়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষার মানের ব্যাপক অবনমন ঘটেছে এবং সরকারি বিদ্যালয়গুলো দীর্ঘদিন ছাত্রছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে। তাই বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী কম ছাত্র-ছাত্রী বিশিষ্ট বিদ্যালয়গুলোকে মার্জ করবার কথা ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ করছে শিক্ষক সমিতি।

এক প্রেস বিবৃতিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা বলেন, এই সার্ভের নামে পরীক্ষা ব্যবস্থাকে প্রহসনে পর্যবসিত করা হয়েছে। অন্যদিকে মুখে বিরোধিতা করে জাতীয় শিক্ষানীতিকে এ রাজ্যে কার্যকর করে ন্যাসের মতোই রাজ্যে স্যাস এবং ইংরেজি ভাষাকে লঘু করা হয়েছে।

তিনি এহেন প্রহসন বন্ধ করে শিক্ষার মানোন্নয়নের স্বার্থে সব শ্রেণীর সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা গ্রহণ, পাশফেল প্রথা পুনরায় চালু করবার পাশাপাশি সার্ভে অনুযায়ী শিক্ষার পরিকাঠামোকে আধুনিক মানে উন্নীত করার দাবি করেন।