সংক্ষিপ্ত

সাংসদ দেবকে পদত্যাগ করার দাবি তুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে জেলার গেরুয়া শিবির। সমগ্র ঘাটাল এলাকা জুড়ে দেওয়ালে দেওয়ালে জবাব চাওয়ার পোস্টার পড়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে আবাস যোজনায় শাসক দল তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। কিন্তু, সেই দুর্নীতির ছায়া যে ঢুকে পড়বে একেবারে শাসক দলের সাংসদের ঘরের ভেতর, তা বোধহয় আঁচ করতে পারেননি সাংসদ নিজেও। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর বানানোর জন্য ‘কাটমানি’ খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং সাংসদ দেব অধিকারীর ভাই। তৃণমূলকে কাটমানির টাকা দিতে দিতে আবাস যোজনায় বাড়িই তৈরি করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন কেশপুরের মহিষদার বাসিন্দা বিক্রম অধিকারী। সম্পর্কে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের তৃণমূল তারকা-সাংসদ দীপক অধিকারী অর্থাৎ জনপ্রিয় অভিনেতা দেবের জেঠতুতো ভাই। খোদ শাসকদলের পরিবারের তরফে এমন অভিযোগকে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গের রাজনীতি।

যাঁর দাদা নিজে একজন সাংসদ, তাঁকেও শাসকদলের নেতাদের কাছে কাটমানি দিতে হচ্ছে ! তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে? এই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলকে জোরালো আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিরোধী দল বিজেপি। সাংসদ দেবকে পদত্যাগ করার দাবি তুলে সরব হয়েছে জেলার গেরুয়া শিবির। সমগ্র ঘাটাল এলাকা জুড়ে দেওয়ালে দেওয়ালে জবাব চাওয়ার পোস্টার পড়েছে। অন্যদিকে, এই অভিযোগকে ঘিরে বিজেপিকে পাল্টা নিশানা করেছে শাসকগোষ্ঠীও।

বিক্রম অধিকারীর অভিযোগের পর ঘাটালের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা এবং সাংসদ দেবকে কটাক্ষ করে বিজেপির পোস্টার ছেয়ে গেছে। সেগুলিতে লেখা রয়েছে, “ঘরের ছেলে সাংসদ থাকা সত্ত্বেও বাড়ির টাকা নেওয়া হল কেন, দীপক অধিকারী জবাব দাও”। আরেকদিকে শিউলি সাহাকে উদ্দেশ করে লেখা হয়েছে, “‘বিক্রম অধিকারীর আবাস যোজনার টাকা নেওয়া হল কেন, শিউলি সাহা জবাব দাও।” ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের বক্তব্য, “সাংসদ দেবের ভাই স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আবাস যোজনার বাড়ি পেতে টাকা দিতে হয়। দেবের পরিবারের এক সদস্যই এ কথা বলছেন! তাই এই পোস্টার ফেলা হয়েছে। আমরা দেবের পদত্যাগ দাবি করছি।”

বিজেপিকে পালটা নিশানা করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেছেন, “বিজেপির মুশকিল হচ্ছে, কখন কী বলবে, বুঝতে পারছে না। দেব এদের কুৎসার জবাব দেয় না। তাই এরা আরও উঠে পড়ে লেগেছে! এ সব পোস্টার রাজনীতি করে কিছু হবে না। মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করতে হবে।”

দেবের ভাই প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে তিনি আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েছিলেন। কিন্তু হাতে পাওয়া ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে ৬০ হাজার টাকাই তৃণমূল নেতাদের দিয়ে দিতে হয়েছে। যে কারণে বাড়ি তৈরি করতে পারেননি বিক্রম, প্রায় ২ বছর ধরে তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেও এবং বিধায়ক শিউলি সাহাকে এই সমস্যার কথা জানিয়েও তিনি কোনও সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন বিক্রম অধিকারী। এ প্রসঙ্গে বিধায়ক শিউলি সাহার দাবি, “আমার কাছে কেশপুরের বাকি সব মানুষের গুরুত্ব যতটা, ওঁর গুরুত্বও ঠিক ততটাই। দেবের ভাই বলে এতটুকু বেশি নয়। কেউ যদি ওঁর থেকে টাকা নিয়ে থাকে, তার নামে এফআইআর করেনি কেন?’’ বিক্রমের অভিযোগ প্রসঙ্গে কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁর নামে কয়েক বছর আগে বাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল। বাড়ি তৈরি সংক্রান্ত সমস্যার কথা উনি জানাননি।”

আরও পড়ুন-

গাঁজাই কি থাইল্যান্ডকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ করে তুলবে? মাত্র ৯ মাসের লাভেই টগবগ করছে গোটা দেশ 
ছাত্রীদের শৌচাগারে লুকিয়ে লুকিয়ে ভিডিও তুলছেন ছাত্র, ধরা পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে

মল্লিকবাজারের ফুলের ব্যবসায় বড়সড় ক্ষতি, রাজ্য সরকারের কাছে বাঁচার আর্তি ফুলবিক্রেতাদের