Durga Puja Bijoya Dashami: প্রতিবছরের মতো এ বছরের বিজয়া দশমীতে উৎসবের আমেজ ইছামতীর তীরে। শুরু প্রতিমা বিসর্জন। বিশদে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…
Durga Puja Bijoya Dashami: অবশেষেবিদায়বেলা আসন্ন উমার। প্রথা মেনে ইছামতিতে বিসর্জন টাকি রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমার। পান্তা ভাত, কচুশাক, চালতার চাটনি খাইয়ে কৈলাসের পথে উমাকে বিদায় জানালো একে একে রাজবাড়ি। প্রতিবছরের মতো ইছামতিতে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন। ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের শতাব্দী প্রাচীন রেওয়াজ। প্রথা মেনে প্রতিমা নিরঞ্জন হল টাকি রাজবাড়ির।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার টাকের উপর দিয়ে দুই বাংলার বুক চিরে বয়ে গেছে ইছামতি নদী আর এই ইছামতি নদীতেই মূলত দুই দেশের প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয় প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে দুই বাংলার মানুষ বিয়ের জমান ইছামতি নদী পাড়ে।
চিরাচরিত প্রথা মেনে আজও শতাব্দী প্রাচীন টাকি রাজবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন হয়ে আসছে । যার ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারও। দশমীর সকালে মা দুর্গাকে প্রথমে বরণ করা হয় এখানে। এরপর ঠাকুর দালানে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন রাজবাড়ির মহিলারা । নিয়ম মেনে আজও টাকি রাজবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জনে কোনও যানবাহনের ব্যবহার হয় না । ২৪ বেয়ারার কাঁধে করেই ইছামতির জলের দিকে নিয়ে যাওয়া প্রতিমাকে ।
সেই রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য এখনও বহন করে চলেছেন রাজবাড়ির বর্তমান বংশধররা । প্রতিমা নিরঞ্জনের পর ঠাকুর দালানে বসে সকলে মিলে পান্তা ভাত, কচু শাক, আলু সিদ্ধ, আলু ভাজা ও মিষ্টি খেয়ে থাকেন । পঞ্জিকা মতেই টাকি রাজবাড়ি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে ইছামতিতে।
রাজবাড়ির সদস্য শর্মিষ্ঠা ঘোষ বলেন, নিয়ম নিষ্ঠা এবং সমস্ত উপাচার মেনেই পুজো হয়ে আসছে টাকি রাজবাড়িতে । আজ দশমী । উমার বিদায়ের দিন । যার ফলে সকলের মন ভারাক্রান্ত । সকালে মা দুর্গাকে বিধি মেনে পুজো করা হয়েছে । তিনি আরো বলেন ভোগে মাকে নিবেদন করা হয়েছে পান্তা ভাত ও কচু শাক । এছাড়া ভোগ আরতি, যাত্রামঙ্গল পাঠ এবং মায়ের তর্পণ বিসর্জন হয়েছে । ২৪ জন বেয়ারার কাঁধে চেপে মাকে রাজবাড়ির ঘাটে নিয়ে গিয়ে নিরঞ্জন করা হয়েছে ৷"
এদিকে, প্রতিমা নিরঞ্জন ঘিরে টাকির ইছামতি নদীতে সকাল থেকেই তুমুল ব্যস্ততা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে । চলছে প্রতিবেশী দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া নজরদারিও । ইছামতির মাঝ বরাবর লক্ষণ রেখা টেনে দিয়ে অর্থাৎ ইছামতি নদীবক্ষে জলের মধ্যেই দুই বাংলার সীমান্ত নির্ধারণ করা হয়েছে এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারিতে দুই দেশের প্রতিমা বিসর্জন হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে । যার অন্যথা হয়নি এবছরও ।
ইছামতীতে প্রতিমা বিসর্জন:-
প্রশাসন সূত্রে খবর, ইছামতিতে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের শতাব্দী প্রাচীন রেওয়াজ । ভৌগলিক বিভাজন ভুলিয়ে দিয়ে দুই দেশের মানুষকে এক করে দেয় এই দিনটা । এই নিরঞ্জনকে ঘিরে একেবারে অন্যরকম আবেগ এবং অনুভূতি কাজ করে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মানুষের । যেহেতু বিসর্জনের সাক্ষী থাকতে বাইরে থেকেও বহু মানুষ আসেন টাকিতে । সেহেতু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয় বিএসএফ এবং বিজিবি-র তরফে । তৎপর থাকেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এপারের প্রতিমা ভারতীয় সীমান্তের মধ্যে বিসর্জন হয়ে থাকে । অন্যদিকে, ওপারের প্রতিমা বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যে ভাসান হয়ে থাকে । চিরাচরিত এই রীতি বজায় রাখতে ইছামতিতে স্পিড বোর্ডে করে সীমানা বরাবর চক্কর দেয় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন এবং বসিরহাট জেলা প্রশাসনের মধ্যে ইছামতি নদীপক্ষে একটি উচ্চপর্যায় বইটা হয়েছে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ প্রতিমা নিরঞ্জন করতে তার পাশাপাশি গোটা টাকি শহর ঘিরে রয়েছে পটল নিরাপত্তা অর্থাৎ গোটা টাকি শহরকে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
দুই বাংলার বুক চিরে বয়ে গেছে ইছামতি নদী আর এই ইছামতি নদীতেই মূলত টাকির বিসর্জন হয় এবং এই বিসর্জন কে ঘিরে রয়েছে দুই বাংলার আবেগ ইছামতি নদীপক্ষে এই প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে দেশ-বিদেশ তথা বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকরা ভিড় জমান তার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মূলত বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে ইছামতি নদী পাড়ে ভিড় জমান ভক্তরা।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


