সংক্ষিপ্ত
আবার মেয়ে সন্তানের জন্ম হওয়ায় বারংবার নিজের স্ত্রীকে লাঞ্ছনা করছিল রিন্টু। রবিবার, রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তার মেয়ের দেহ।
বাবা-মায়ের নৃশংসতার শিকার হতে হল মাত্র ৩ মাসের শিশুকে। রক্তাক্ত কাণ্ড ঘটে গেল মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ভাতশালায় । আছড়ে ফেলে নিজের সন্তানকে খুন করার দায়ে গ্রেফতার করা হল মা এবং বাবাকে।
স্থানীয় মানুষজন এবং পুলিশের সূত্রে জানা গেছে যে, ভাতশালার শ্রমিক রিন্টু শেখ কেরলে কাজ করে। ৩ মাস আগে জন্ম নেয় তার তৃতীয় কন্যাসন্তান। প্রায় ১ মাস আগে নিজের গ্রামে ফিরে এসেছিল সে। আবার মেয়ে সন্তানের জন্ম হওয়ায় বারংবার নিজের স্ত্রীকে লাঞ্ছনা করছিল রিন্টু। ৪ ফেব্রুয়ারি, রবিবার, রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তার মেয়ের দেহ।
রিন্টুর বাবা দবির শেখ স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, তাঁর ছেলেই আছড়ে ফেলে খুন করেছে সদ্যোজাত সন্তানকে। তাঁর পুত্রবধূও এই খুনের সঙ্গে জড়িত। দু’জনের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দবির শেখ। রিন্টু এবং তার স্ত্রী বেলুয়ারা বিবিকে রবিবার দুপুরেই আটক করেছে ডোমকল থানার পুলিশ। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে চাপের মুখে ভেঙে পড়ে সন্তানকে খুনের কথা স্বীকার করেছে মা এবং বাবা। এদিন রাতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর সাতেক আগে ডোমকলের কামুড়দিয়াড়ের বাসিন্দা বেলুয়ারার সঙ্গে ভাতশালার রিন্টু শেখের বিয়ে হয়েছিল। ৪ বছর আগে তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্মা হয়, প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ার পর দ্বিতীয় সন্তানও মেয়েই জন্মায়। প্রথম দুই মেয়েকে ঘরে প্রচণ্ড মারধর করত রিন্টু। কিছু দিন আগে মেরে ৪ বছর বয়সি বড় মেয়ের হাতও ভেঙে দিয়েছিল সে, দীর্ঘদিন মেরে শয্যাশায়ী করে রেখেছিল মেজো মেয়েকেও। গত নভেম্বর মাসে আগে তৃতীয় সন্তান হয় আরেকটি মেয়ে।
-
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রত্যেক দিনই নেশা করে অভিযুক্ত। চুরির অভিযোগে আগে একবার গ্রেফতারও হয়েছিল তাকে। রবিবার দুপুরে তিন মাসের সদ্যোজাতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তারপর রিন্টুর ঘরে লেপের তলায় রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। বেলুয়ারাকে চেপে ধরা হলে সে জানায় যে, সে মেয়েকে খাটে শুইয়ে দাওয়ায় রান্না করতে গিয়েছিল। কী ঘটেছে, সেটা তার জানা নেই। কিন্তু, রিন্টুর বাবা বলতে থাকেন, তৃতীয় বার মেয়ে হওয়ার পর থেকে প্রায়ই ছেলে আর বৌমার মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। ছেলে নিয়মিত নেশা করে। ছেলেই ছোট নাতনিকে খুন করেছে। পুত্রবধূ সব জেনে তাকে আড়াল করছে।
-
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।