কসবা কাণ্ডে অভিযুক্তের বাবা ছেলের কাজে বিস্মিত এবং ছেলের দোষ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ছেলের আইনি লড়াই লড়ার আর্থিক সামর্থ্য তাঁর নেই। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে ছেলের সাথে তাঁর কোনও যোগাযোগ ছিল না।

ছেলে যে এমন কাজ করতে পারে তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র-র বাবা। যদি ছেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। মনোজিতের হয়ে আইনি লড়াই করার আর্থিক সামর্থ যে তাঁর নেই, শনিবার নির্দ্বিধায় সে কথাও জানিয়েছেন মনোজিতের বাবা।

খবর পেতেই আকাশ থেকে পড়েছে মনোজিতের পরিবার। ছেলে আইনের শিক্ষা নিয়ে তা রক্ষা করবে এটাই ছিল স্বপ্ন। ছেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মেনে নিতে পারছেন না মনোজিতের বাবা। দীর্ঘদিন তিনি পুরোহিতের কাজ করেন। একটি ৬ বাই ৮ ফুটের ঘরে থাকেন। ছেলেকে পড়াতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে তাঁকে।

তিনি এক সংবাদ সংস্থায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে, ও এই ধরনের কিছু করতে পারে। তবে যদি ও দোষী প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে ওকে কঠিন সাজা দেওয়া হোক। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ সাজাও দেওয়া হোক। বিষয়টি মাথা পেতে নেব।

তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ থেকে ছয় বছর আমাদের কোনও কথা হয়নি। ওর কিছু মক্কেল এখানে এলে আমি তাঁদের বলি, এটা ওর চেম্বার নয়। এই ঠিকানাতেই ওর চিঠি বা এটিএম কার্ড আসে, যা ও পরে নিয়ে যায়।

…আমি চেয়েছিলাম, ছেলে বড় উকিল হোক। এখন দেখা যাক, কী হয়। বুঝতে পারছি না আমি কোথায় যাব। লোকে আমার দিকে না আঙুল তোলে।

তিনি আরও বলেন, ছেলের জন্য আইনি লড়াই আমি লড়ব না। সত্যি বলতে সেই খরচ আমি জোগাতে পারব না।

প্রসঙ্গত, খবরে পূর্ব কলকাতার কসবা। ঘটনাস্থল সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ। গত বুধবার প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক কলেজ ছাত্রী। সে শাসলদলের ছাত্র সংগঠনের কর্মী। মূল অভিযুক্তও ছাত্র সংগঠনের নেতা।

অভিযোগ, গত ২৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ১০টা ৫০ মিনিট, প্রায় ৩ ঘন্টা ২০ মিনিট ধরে কলেজের গার্ডস রুমে অকথ্য নির্যাতন চলে আইনের ছাত্রীদের ওপর। নির্যাতিতা শাসকদলের ছাত্র সংগঠনে কর্মী। পুলিশকে দেওয়া অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, কলেজের প্রাক্তনী তথা প্রভাবশালী নেতার প্রেম তথা বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার অপরাধে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তকে সহায়তা করেছেন আরও দুজন।