Crime News: স্ত্রীর প্রেমিককে খুন। দেহ লোপাটের অভিযোগ  স্বামীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘ সাতবছর পর মামলার রায় দিলো আদালত। বিশদে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…

Madhyamgram Crime News: পরিকল্পনা করে স্ত্রীর প্রেমিকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ। ধৃত স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড। স্ত্রীর ৫ বছরের জেল হেফাজতের সাজার নির্দেশ বারাসাত জেলা আদালতের। ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৮ সালে ৬ নভেম্বর। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের রোহন্ডা-চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ যোজরা গ্রামে।

ওই গ্রামেরই এক গৃহবধূ আর্জিনা বিবি ৬ নভেম্বর একাই বাড়িতে ছিলেন। তার সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল পড়শি যুবক আব্দুল হাসানের। ঘটনার দিন রাতে স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রেমিককে বাড়িতে ডাকে গৃহবধূ বলে অভিযোগ। এরপর তারা দু’জন অবাধ যৌনতায় লিপ্ত হন। সেই সময় বাড়িতে চলে আসেন স্বামী জাকির হোসেন। হাতেনাতে স্ত্রীর কীর্তি ধরে ফেলেন তিনি। 

কার্যত বেকায়দায় পড়ে গিয়ে পাল্টি খেয়ে যান আর্জিনা। জোর করে তাকে ধর্ষণ করছে আব্দুল হাসান বলে দাবি করে আর্জিনা। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা। সেই সময়ই আব্দুল হাসানকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণ পর তারা সিদ্ধান্ত নেয় প্রমাণ লোপাটের। সেইমতো ধারালো চপার দিয়ে প্রথমে দুটি পা কেটে ফেলা হয়।

শুধু তাই নয়, মৃতের পরিচয় যাতে কোনওভাবে কেউ বুঝতে না পারে সেই জন্য মুণ্ডুও কেটে রেখে দেওয়া হয় জাকিরের গোপন আস্তানায়। দেহাংশ খণ্ডবিখণ্ড করে ভাসিয়ে দেওয়া হয় গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নোয়াই খালে। এদিকে, ৬ নভেম্বর রাতেই আব্দুলের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয় মধ্যমগ্রাম থানায়। পুলিস তল্লাশি শুরু করে। ৭ নভেম্বর মধ্যমগ্রামের নোয়াই খালে একটি দেহ ভেসে উঠতে দেখে স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।পরবর্তীতে অর্জিনা ও জাকিরকেকে আটক করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিকার করে নেই এই খুনের ঘটনা।

বিগত ৭ বছর যাবত ধরে চলছিল এই মামলা। মোট ১৯ জন সাক্ষী ও সমস্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার জাকির ও অর্জিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আজ দোষী জাকির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০০০টাকা জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ বছর জেল হেফাজত ও স্ত্রী আর্জিনা খাতুনের ৫ বছর কারাদণ্ড ও ১০০০ টাকা অনাদায়ে ১ মাসের জেল হেফাজতের সাজার নির্দেশ দেয় বারাসাত জেলা আদালতের(ADJ 5th)বিচারক দিপালী শ্রীবাস্তব।

এ বিষয়ে মামলার সরকারি আইনজীবী সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘’এই ঘটনাটি অত্যন্ত নক্কারজনক। আইনি ভাষায় রেয়ারেস্ট অব দা রেয়ারেস্ট। খুন, প্রমাণ লোপাট ও কমন ইন্টেনশন এই তিনটি ধারায় মামলা চলেছে।আজ দোষীদের এই নৃশংস ঘটনার সাজা দিয়েছে আদালত।''

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।