সংক্ষিপ্ত
শুক্রবার কালীঘাটের দলীয় বৈঠক থেকে প্রায় ৮ মাস পর ভিন্ন সুর শোনা গেল তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়।
২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়ে বন্দি রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতারির সময় তিনিই ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব। সমস্ত দলীয় সিদ্ধান্তে তাঁর রায় ছিল অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, তাঁর গ্রেফতারির পর দিন বদলেছে। তাঁকে সমস্ত দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। খারিজ করা হয়েছে মন্ত্রিত্বের পদ থেকেও। দলগতভাবে তাঁর কাছ থেকে বিশাল দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্যে কার্যত তাঁর নামটিও উচ্চারণ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, প্রায় ৮ মাস পর দলীয় সভায় যা ঘটল, তাতে পাহাড় টলে গেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দলীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূলের বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম নেওয়া তো বটেই, তার সঙ্গে তাঁকে রীতিমতো ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করে তাঁর দোষও লঘু করে দেখিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দল যতই তাঁর থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে নিক, দলের প্রতি আনুগত্যে এতটুকুও ছেদ ফেলেননি সুবিবেচক রাজনীতিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতারির পর থেকে বরাবরই তিনি তৃণমূল এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন, এমনকি ত্রিপুরা ভোটে তৃণমূলের পরাজয়ের দিনও তাঁর অনুপ্রেরণাদায়ী বার্তা দলকে সাহস জুগিয়েছে। আগামী শুনানির দিন আদালতে দাঁড়িয়ে বিশেষ কোনও কথা বলার জন্য ৫ মিনিট সময় চেয়ে নিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালত তাতে সম্মতিও দিয়েছে। এর পরেই তৃণমূল নেত্রীর মুখে শোনা গেল তাঁর দোষের লঘুতা। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “পার্থ ও অনুব্রতকে ওরা জেলে ভরে রেখেছে। পার্থদার তো দশ শতাংশ দোষ। বাকি তো কোঅর্ডিনেশন কমিটি করেছে।”
উল্লেখ্য, এর কিছুদিন আগেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, তিনি শুধুমাত্র মন্ত্রী ছিলেন। শিক্ষক নিয়োগ তো করেছে শিক্ষা পর্ষদ। আসল দোষ পর্ষদেরই। সেই বক্তব্যকেই মান্যতা দিয়ে শুক্রবার মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি গরুপাচার কাণ্ডে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলেরও পক্ষ নিয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই সাথে অনুব্রতর নাম নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো প্রশ্ন তোলেন, ‘অনুব্রতকে ওরা দীর্ঘদিন ধরে জেলে ভরে রেখেছে। ওরা কি এখনও কিছু প্রমাণ করতে পেরেছে?’ বলা বাহুল্য, এখানে ‘ওরা’ বলতে তৃণমূল নেত্রী কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং তার অধীনস্থ সংস্থা ইডি-র দিকেই আঙুল তুলেছেন। এই সরকারি তদন্তকারী সংস্থা যে শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের দুর্নীতি নিয়েই তদন্ত করছে এবং গ্রেফতারি চালাচ্ছে এবিষয়ে কংগ্রেস বা অন্যান্য কেন্দ্র-বিরোধী দলগুলির সাথে একমত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারও সেই বিষয়টিই আরও একবার উসকে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।
আরও পড়ুন-
ডিএ-র দাবিতে সরকারি কর্মীদের ডিজিটাল ধর্মঘট, শনিবার সকাল হতেই অনশনে যোগ দিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী
বিশ্ব জুড়ে আবার ফিরে আসছে আতঙ্ক, ইজ়রায়েলে পাওয়া গেল করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট
জ্বালানির দামে কি মধ্যবিত্তের পকেটে টান? জেনে নিন কলকাতা-সহ অন্যান্য শহরগুলিতে আজ কতয় বিকোচ্ছে পেট্রোল ডিজেল