সংক্ষিপ্ত
সাধারণ বাংলার লালমাটি এলাকায় পলাশ ফুলের দেখা পাওয়া যায়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমানের একাংশের পলাশের গাছ রয়েছে।
সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja)লআর বাঙালির ভ্যালেন্টাইন ডে- প্রায় সমার্থক। কিন্তু এই দুই উৎসবের কারণে গোলাপকেও টেক্কা দিল পলাশ ফুল (Palash flowers)। কারণ সরস্বতী পুজোয় যেসব উপকরণ প্রয়োজন তারমধ্যে রয়েছে পলাশফুল। পুরাণ অনুযায়ী এই ফুল ছাড়া পুজো হয় না। কিন্তু এবার আবহাওয়ার কারণে পলাশ বাড়ন্ত। ফুল তো দূরের কথা কুঁড়িরও দেখা মেলা ভার। তাই এই উৎসবের মরশুমে দামে পলাশ ফুল টেক্কা দিল গোলাপকেও।
সাধারণ বাংলার লালমাটি এলাকায় পলাশ ফুলের দেখা পাওয়া যায়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমানের একাংশের পলাশের গাছ রয়েছে। কলকাতা-সহ হাওড়া-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় এই গাছ দেখা যায়। কিন্তু উৎসবের মরশুমে বাংলার পলাশ ফুলের চাহিদা মেটায় পুরুলিয়া , বাঁকুড়া আবর বর্ধমান। কিন্তু এবার সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে পলাশ ফুল বাড়ন্ত। তাই কলকাতার ফুল বাজারেও দাম আকাশ ছোঁয়া। সরস্বতী পুজোর আগের দিন থেকেই চড়ছে পলাশফুলের দাম। মল্লিকঘাট ফুল হাডাকে লাল পলাশের কুঁড়ির বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ২ হাজার টাকা কিলো দরে। আজ , রবিবার আর সোমবার লাল পলাশের কুঁড়ি ৩ হাজার টাকা কিলো দরে বিক্রি হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। অর্থাৎ মাত্র ১০০ গ্রাম লাল পলাশের কুঁড়ি কিনতে হলে গ্যাঁট থেকে ২০০-৩০০ বা আরও বেশি টাকা খরচ করতে হবে। বাকদেবীকে তুষ্ট করার ব্যাপার রয়েছে। তাই টাকা খরচ করতে অনেকেই পিছপা হবে না। তাই পলাশের দাম আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
বাকদেবী বা সরস্বতীর আরাধনায় পলাশ ফুল জরুরি। প্রজনন ও উর্বরতার সঙ্গে বিদ্যার দেবীর বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এটা আমরা সকলেই জানি যে ঋতুমতী নারী গর্ভধারণে সমর্থ হয়। ঋতুমতী নারীর রজোদর্শনের রংও কিন্তু লাল। আর পলাশের রঙও লাল। সেই প্রতীক হিসেবেই শ্বেতশুভ্র বসন পরিহিতা দেবী পলাশপ্রিয়া হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে সরস্বতী পুজো হয় পঞ্চমী তিথিতে। সরস্বতী পুজোর পরের দিনই শীতল ষষ্ঠী। মা ষষ্ঠীর আশীর্বাদে সন্তান হয়। আর সেই কারণেই প্রাচীন বিশ্বাস সরস্বতী পলাশ প্রিয়া দেবী। তাই পলাশ ছাড়া দেবীর পুজো সম্পন্ন হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই প্রাচীন কালে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ একাধিক জেলার মানুষ সরস্বতী পুজোর ঠিক পরের দিনই পলাশের পাতা বেটে খেতেন সন্তান লাভের জন্য।
তবে পলাশ ছাড়াও সরস্বতী পুজোয় প্রয়োজন হয় গাঁদা ফুল, লাগে নীল রঙের অপরাজিতা, চন্দ্রমল্লিকাও। কিন্তু পুজোর আগের দিনও সেইসব ফুলের দাম তেমন বাড়েনি। পলাশের দাম আকাশছোঁয়া। কিন্তু পলাশেক দাম কেন আকাশ ছোঁয়া তার কারণও জানিয়েছেন ফুল ব্যবসায়ীরা।
ফুল ব্যবসায়ীদের কথায় সরস্বতী পুজো এবার সপ্তাহ দুয়েক আগে হচ্ছে। তাই এই সময়টা খুব একটা পালশ ফোঁটে না। পলাশ ফুল ফোটা শুরু হয় এই সময়। তাই পুজো এগিয়ে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় যোগান অনেকটাই কম। আর সেই কারণেই পলাশের দাম আকাশ ছোঁয়া। বাংলায় সবথেকে বেশি পলাশ ফোটে পুরুলিয়া জেলা। এবার লেই জেলাতেও পলাশের আকাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। অনেকেই মনে করছেন চলতি বছর আবহাওয়ার কারণেও পলাশ ফুল কম ফুটতে পারে। যদিও এখনও এই বিষয়ে নিশ্চিত নন ফুল ব্যবসায়ীরা। পলাশ ফুল সরস্বতী পুজো আর দোলের সময়ই প্রয়োজন হয়।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।