সংক্ষিপ্ত

নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন কাকলি। দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বা তাঁর ছেলে কিছুই জানতেন না বলে দাবি কাকলির।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইতিমধ্যে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতা শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল। তদন্তে উঠে এসেছে অয়ন শীলের একের পর এক দুর্নীতির কথা। একাধিক কোম্পানি, ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে টালিগঞ্জে টাকা ঢালা, বেনামে সম্পত্তি ইত্যাদি একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। অয়ন শীলের সূত্রে দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেরও। নাম জড়িয়েছে শ্বেতা চক্রবর্তী নামের এক মহিলারও। যাবতীয় জল ঘোলার মাঝেই এবার মুখ খুললেন অয়ন শীলের স্ত্রী কাকলি শীল। একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন কাকলি। দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বা তাঁর ছেলে কিছুই জানতেন না বলে দাবি কাকলির।

কী বললেন অয়ন শীলের স্ত্রী কাকলি?

সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন,'আমি ২০০ ভাগ নিশ্চিত আমি এব্যাপারে জড়িত নই। অয়নের ব্যবসার ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। আমায় ডিরেক্টর করে রাখা হলেও আমি পুরোটাই অন্ধকারে ছিলাম।' অয়ন শীলের একাধিক কোম্পানির মধ্যে বেশ কিছু ছিল তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে। তবে এবিষয় তাঁর ছেলেও কিছু জানতেন না বলেই দাবি করেছেন কাকলি। তাঁর কথায়,'ছেলে এসবের কিছুই জানে না। ও তো পড়াশোনা করত। ওর বাবা হয়ত ওকে সই করতে বলেছে ও করে দিয়েছে।' তবে পার্টনারশিপে পেট্রল পাম্প কেনার কথা স্বীকার করেন তিনি। কাকলি আরও বলেন,'গত চার বছর তো আমি নিজেই দিল্লিতে থাকি। কলকাতা ছাড়ার আগেও প্রায় চার বছর আমরা আলাদা থাকি। ও কনস্ট্রাকশন সাইটেই থাকত। আমি ঘর সামলাতাম। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকলেও একসঙ্গে থাকতাম না।'

প্রসঙ্গত, তদন্তে জানা গিয়েছে পুরসভায় চাকরির জন্য এজেন্ট মারফত তালিকা আসত অয়নের কাছে। মোট ৬০টি পুরসভায় অন্তত ৫ হাজার চাকরি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এবার অয়নের ল্যাপটপ, মোবাইল ঘেটে মিলল একাধিক এজেন্টের নাম ও চাকরি প্রার্থীদের তালিকাও। এখনও পর্যন্ত চারজন এজেন্টের নাম জানা গিয়েছে। অয়নের মোবাইলে তপনদা, লালদা, কানুদা, এমডি- এইরকম নাম থেকে তালিকা আসত চাকরিপ্রার্থীদের। ইডি সূত্রে খবর, তপনদা নামের এজেন্টের কাছ থেকে ১৫ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম এসেছিল। লালদা পাঠিয়েছিলেন ৬৪ জনের নাম৷ কানুদা একাই ৯৬ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকা দিয়েছিলেন এবং এমডি ৪৩ জনের তালিকা পাঠিয়েছিলেন অয়নকে।

অন্যদিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে এবার উঠে এল নতুন নাম। রবিবার অয়নকে গ্রেফতার করার আগে তাঁর সল্টলেকের অফিসে ৩৭ ঘন্টার ম্যারাথন তল্লাশি চালায় ইডি আধিকারিকরা। সেখানেই ইডির হাতে এসেছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি। এবার অয়ন শীলের সূত্র ধরে সামনে এল আরও এক রহস্যময়ীর নাম। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের শুরু থেকেই বার বার উঠে এসেছে মহিলাদের নাম। পার্থর অর্পিতা, গোপালের হৈমন্তী, কুন্তলের সোমার পর এবার অনয় শীলের সূত্রে মিলল আরও এক মহিলার হদিশ। কিন্তু কে এই রহস্যময়ী?

ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে অয়নকে গ্রেফতার করে তাঁর ফোনের হোয়াটস্যাপ চ্যাট ঘেঁটে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডির হানা দেওয়ার আগেই অয়নকে সতর্কবার্তা দিয়েছিল ওই মহিলা। অয়নকে হোয়াটস্যাপে মেসেজ করে বলা হয়েছিল,'পালিয়ে যাও। জিনিসপত্র সরিয়ে দাও। ইডি আসতে পারে।' এই চ্যাট দেখে চোখ কপালে উঠেছে ইডি অফিসারদের। কিন্তু এবিষয় মুখ খোলেননি অয়ন। ইতিমধ্যেই ওই মহিলার খোঁজ শুরু করেছে ইডি। জানা যাচ্ছে মহিলার নাম শ্বেতা চক্রবর্তী। পেশায় মডেল এবং পাশাপাশি রাজ্যের একটি পুরসভায় কর্মরত তিনি। অয়নের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বান্ধবী শ্বেতা। তবে অয়নের কাছ থেকে এখনও এবিষয় পরিষ্কার করে কিছু জানা যায়নি। কীভাবেই বা ইডি হানার সতর্কবার্তা অয়নকে দিলেন শ্বেতা সেবিষয়ও ধোঁয়াশা কাটেনি।

আরও পড়ুন - 

বগটুই নিয়ে দলীয় বৈঠকে আক্ষেপ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতার, 'ওনার রাগ হয়েছে' বলে পাল্টা তোপ শুভেন্দুর

'নজর ঘোরাতেই বাম আমলের দুর্নীতির কথা ', ব্রাত্য বসুর মন্তব্যের কড়া জবাব সুজন চক্রবর্তীর

তিহার-বন্দি কেষ্ট বীরভূমের দায়িত্বে , কাজল শেখকে সতর্ক করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা