সংক্ষিপ্ত
দলীয় ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক করে কড়া বার্তা দিয়েছে আরএসএস।
১৫ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জন্মদিন। বঙ্গ বিজেপিতে তিনি একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুখও বটে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের অন্দরে এই তাবড় নেতার ঘোষণা করা তিনটি তারিখ নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছে সমগ্র পদ্ম শিবির। তিনটি তারিখ হল, ১২ ডিসেম্বর, ১৪ ডিসেম্বর এবং ২১ ডিসেম্বর। তাঁর ঘোষণার পরেই দেখা যায়, ১২ ডিসেম্বর সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে শুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর আসছে ২১ ডিসেম্বর। বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, কোনওরকম গণ্ডগোলের ভয়ে রাজ্য দলের কোনও নেতা এখন শুভেন্দুর পাশে দাঁড়াতে চাইছেন না।
অপরদিকে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর হাজরা মোড়ের দলীয় সভা থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষকে পরোক্ষভাবে আক্রমণ করে একটি মন্তব্য করেছেন। ফলত, বিজেপির অন্দরে একটি ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেছে। শুভেন্দু বনাম দিলীপের সমর্থকদের মধ্যে ভেতর ভেতর একটা রেষারেষি চলছে বলেই জল্পনা শুরু হয়েছে। শুভেন্দু নাম না করে দিলীপের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমি রাজনীতিতে গিমিকে বিশ্বাস করি না। মর্নিং ওয়াকে গিয়ে মিডিয়াতে স্টেটমেন্ট করা আমার অভ্যাস নয়।’ এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে দিলীপ বলেছিলেন, ‘আরে, মর্নিং ওয়াক করতে দম লাগে। সকাল সকাল উঠতে হয়।’
দিলীপের সাথে দ্বন্দ্বের পাশাপাশি বজায় রয়েছে তারিখ ঘোষণার বিড়ম্বনা। শুভেন্দুর দেওয়া তারিখগুলিকেই এখন ‘গিমিক’ বলে মনে করছে বঙ্গ বিজেপি। জানা গেছে, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে দিলীপ ঘোষ এবং অন্যান্য বিধায়করাও শুভেন্দুর এই মন্তব্য সম্পর্কে প্রকাশ্যে আর কিছুই বলছেন না। তাঁর কার্যকলাপের জেরে ২০২৩-এর আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পদ্ম শিবিরকে কড়া মাশুল গুনতে হবে বলে মনে করছেন দলের নেতারাই। সরগরম পরিস্থিতিতে এবার হাল ধরতে নেমেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। জানা গেছে, শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর পদক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক করে কড়া বার্তা দিয়েছে আরএসএস।
দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নেতারা শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে পাঠান। সেখানে আরএসএসের পক্ষ থেকে কড়া ভাষায় শুভেন্দুকে ভর্ৎসনা করে বলা হয়, ‘আপনি যেভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল চালাচ্ছেন, সেটা আমরা অনুমোদন করি না। আপনার একার কোনও সিদ্ধান্তে কর্মসূচি হবে না। সবটাই হবে দলের কর্মসূচি। সুকান্ত মজুমদার সহ দল যাঁকে যেখানে মনে করবে, সেখানে পাঠাবে। আপনি বাইরে থেকে কিছু করতে পারবেন না। দলের কাঠামোর মধ্যে থেকে কাজ করার চেষ্টা করুন।’
নন্দীগ্রামের ‘ভূমিপুত্র’ শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল শিবির ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন প্রায় দু’বছর আগে। এর মধ্যেই তাঁর সঙ্গে দলের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ নেতাদের মতবিরোধ একেবারেই কাম্য নয় এবং তা দলের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকারকও বটে। এই বিষয়েই নয়াদিল্লিতে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বদের সতর্ক করেছে আরএসএস।
আরও পড়ুন-
গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত শুধুই এনামুল হকের ভাগ্নেরা? জবাব যাচাই করতে রাইস মিলে হানা দিল সিআইডি
‘অজানা’ কোনও ব্যক্তিই অপরাধমূলক তথ্য ঢুকিয়েছিলেন স্ট্য়ান স্বামীর কম্পিউটারে, মৃত্যুর পরে কি প্রমাণ হবে তিনি ‘নির্দোষ’?
চলতি সপ্তাহেই পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে মহাকাশের গ্রহাণু, এর কী প্রভাব পড়তে পারে নীল গ্রহের ওপর?