বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যৌন সহবাস, তারপর 'চোর' অপবাদে প্রেমিকাকে বেধড়ক পিটিয়ে চুল কেটে দিলেন মল্লিকপুরের যুবক

নারীহেনস্থার ঘটনায় নজির গড়লেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরের যুবক। দীর্ঘ দিন ধরে যে প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন, তাকেই ছলছুতোয় চোর অপবাদ দিয়ে পাড়ার লোকের সামনে রাস্তায় বের করে বেধড়ক মারধর করলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, এরপর নিজের প্রেমিকার চুলও কেটে দেন ওই অপরাধী। চুল কেটে দেওয়ার ভিডিও রেকর্ডও করেন তিনি। এই ঘৃণ্য লজ্জাজনক ঘটনার চরমতম শাস্তির দাবি তুলেছেন কিশোরীর পরিবারের লোকজন।

দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরের ১৭ বছর বয়সি কিশোরীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয় হয় মল্লিকপুরের যুবক শেখ রাজের। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পরেই শেখ রাজ ওই কিশোরীর সঙ্গে জোর করে শারীরিক মিলনে লিপ্ত হন। এরপর ওই নাবালিকা কিশোরী তার বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের কাছে সব ঘটনা জানায়। তখন পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করার উদ্যোগ নিলে শেখ রাজ ভয় পেয়ে গিয়ে নাবালিকাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে নাবালিকা পূর্বের যৌন নির্যাতনের কথা ভুলে যান এবং বারবার প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে থাকেন।

নাবালিকার বয়স যখন ১৮ ছুঁইছুঁই, তখন তিনি আবার প্রেমিক শেখ রাজকে বিয়ের করার কথা মনে করিয়ে দিতে থাকেন। তখনই আচমকা কিশোরীর ওপর তার প্রেমিকের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ওই কিশোরী প্রেমিকের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ করেননি। ২৩ জুন, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা তাঁকে আলমারি থেকে কিছু টাকা বের করতে বলেন শেখ রাজ। কিশোরী কিছু না বুঝে আলমারি থেকে টাকা বের করে দেন। কিন্তু, তাঁর অলক্ষ্যে এই কাজটার ভিডিও রেকর্ড করেন তাঁর প্রেমিক। এরপরেই তাঁকে বলা হয় যে, তিনি আলমারি থেকে টাকা ‘চুরি’ করেছেন। ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা শুরু করেন শেখ রাজ। তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন তাঁর মা মিনা বেগমও। 

মারধর করতে করতে ওই কিশোরীকে টেনে রাস্তায় বের করে আনেন মা এবং ছেলে। সকলের সামনেই ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে ব্যাপক মারধর করতে থাকেন শেখ রাজ এবং মিনা বেগম। তারপরই নাবালিকার চুল কেটে দেন ওই যুবক। এখানেই শেষ নয়, চুল কেটে দেওয়ার ভিডিও-ও রেকর্ড করেন তিনি। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেন। বিয়ে করতে ইচ্ছুক ‘প্রেমিক’-এর এই রূপ দেখে একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন নাবালিকা কিশোরী। তিনি বাড়িতে ফিরে এসে সব কথা জানানোর পর বারুইপুর থানায় শেখ রাজ, তাঁর মা মিনা বেগম ও পরিবারের মানুষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাঁর পরিবার। তৎক্ষণাৎ যুবক ও তাঁর মা-কে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বারুইপুর থানার পুলিশ।