সংক্ষিপ্ত
কলকাতা হাই কোর্টের ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তের পরই, প্যানেলে ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার কথা ভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
গ্রুপ ডি-এর ১৯১১টি শূন্যপদে এক্ষুণি নিয়োগ নয়। আজই এই বিষয় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিছুদিন আগেই এই শূন্যপদগুলিতে নতুন করে নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিল কমিশন। কিন্তু আপাতত সেই নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ঋষিকেশ রায় এবং সঞ্জয় করলের যৌথ বেঞ্চ। তবে ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তের কোনও রকমের বদল হয়েনি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই ঘোষণায় কোনও রকমের স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্টের ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তের পরই, প্যানেলে ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার কথা ভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে শীর্ষ আদালত মনে করছে ও শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ করা হলে আইনি জটিলতা আরও বাড়বে।
সম্প্রতি অপেক্ষমান চাকরিপ্রার্থীদের নিয়েও প্রশ্ন তুলছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। ওয়েটিং লিস্ট গঙ্গা জলের মতো শুদ্ধ নয়, সেখানেও কারচুপি থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে এবার স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সতর্ক করলেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের জেরে এবার নতুন প্রার্থীদের নিয়োগের বিষয় বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে কমিশনকে। ওএমআর শিটে বা কোনও রকমের কারচুপি থাকলে তৎক্ষনাৎ বাতিল হবে সেই প্রার্থী।
মঙ্গলবার গ্রুপ ডি-এর শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসির উদ্দেশে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বললেন,'গ্রুপ ডি বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের ওয়েটিং লিস্ট কিন্তু গঙ্গা জলের মতো স্বচ্ছ নয়। এটা মনে রাখতে হবে। নিয়োগের সময় কমিশনকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।' সম্প্রতি, গ্রুপ ডি-এর খালি পদে কাউন্সেলিং-এর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে প্রথম পর্যায়ে মোট ৪০ জন চাকরি প্রার্থীর নাম, রোল নম্বর লিখে বিস্তারিত তথ্য। এই ৪০ জনের মধ্যে কারোর ওএমআর শীট যদি টোম্পারিং-এর ঘটনায় অভিযুক্ত হন, তবে তাঁদের আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বাতল বলে গণ্য করা হবে। আগামী ২ মার্চ চাকরিপ্রার্থীদের কাউন্সেলিং হবে বলে জানানো হয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কল লেটার ডাউনলোড করতে পারবেন চাকরি প্রার্থীরা। সেইদিনই কাউন্সেলিং-এর স্থানও জানতে পারবেন তাঁরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইট কল লেটার ডাউনলোড করা যাবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গ্রুপ-ডি পদে চাকরি যায় ১,৯১১ জনের। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অবিলম্বে এই চাকরি প্রাপকদের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছিল কমিশন। এই মর্মে আদালতে হলফনামা জমা দিয়েছিল কমিশন। বিচারপতি এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে প্রার্থীদের সুপারিশপত্র বাতিল করা হবে, তাঁরা অন্য কোনও চাকরির পরীক্ষায় আর বসতে পারবেন না। শুক্রবার স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর আইনজীবী নিজে মুখেই স্বীকার করেন যে ১,৯১১ জন গ্ৰুপ-ডি প্রার্থীকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই সময় এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, আদালতকে তাও জানান আইনজীবী। কমিশনের দেওয়া তথ্য যাচাই করার পর ওই সব প্রার্থীর চাকরির জন্য যে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল তা হলফনামা দিয়ে স্বীকার করা হয়। চএই তথ্য সামনে আসার পরই চারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওয়েব সাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রার্থীদের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিল এসএসসি। আইন মেনে এসএসসিকে অবিলম্বে ওই প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিল আদালত। শুধু তাই নয় তৎকালীন এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে নিয়েও কড়া পদক্ষেপ নিল আদালত। সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে এই মামলায় যুক্ত করার পাশাপাশি কাদের কথায় এত বেআইনি নিয়োগ হয়েছে অবিলম্বে তাঁদের নাম জানাতে নির্দেশ দিল আদালত।
আরও পড়ুন -
WBPSC WBCS পরীক্ষা ২০২৩, সিভিল সার্ভিসের জন্য রেজিস্টার করুন আজই, জানুন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ