সংক্ষিপ্ত
কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র আরজি করের নির্যাতিতার জন্য সহানুভূতি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নির্যাতিতার পরিবারকেও কটাক্ষ করেছেন।
কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) নির্যাতিতার পরিবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল খুন ও ধর্ষণকাণ্ডে (RG Kar case)দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy) সর্বোচ্চ সাজা চান না। তারা আরও বলেছেন, এই ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের প্রত্যেকের সাজা চান। সঞ্জয় একা এই ঘটনায় যুক্ত নয় বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারের এই বক্তব্যের পরই রাজ্যের শাসক দলের নেতা নেত্রীরা তাদের টার্গেট করেছে। কুণাল ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম, কল্যণ বন্দ্যোপাধ্যায় - তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা নির্যাতিতার পরিবারকে রীতিমত কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন মদন মিত্র (Madan Mitra)। সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি না চাওয়ায় তিনি রীতিমত একহাত নিলেন নির্যাতিতার পরিবারকে।
কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র আরজি করের নির্যাতিতার জন্য সহানুভূতি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নির্যাতিতার পরিবারকেও কটাক্ষ করেছেন। মদন মিত্র বলেছেন, 'তিলোত্তমার জন্য আমরাও চোখের জল ফেলেছি। আমি মদন মিত্র নিজেও মোমবাতি মিছিল করেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। প্রথমে তিলোত্তমার মা-বাবা বললেন ফাঁসি চাই। তারপর বললেন, কলকাতা পুলিশ যথেষ্ট নয়। সিবিআই চাই। সেটা হল। সিবিআই আড়াই তিন মাস রগরালো। কলকাতা পুলিশ যা তদন্ত করেছে সিবিআই তাই করল। এরপর কোর্ট বলল এটা বিরল থেকে বিরলতম কেস নয়। তাই ফাঁসি হতে পারে না। এর কোনওটার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জড়িত নয়।' তারপরই মদন মিত্র বলেন, 'তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করবেন? ওরা কিছু চাই না বলেছেন। রাতারাতি প্রতিদিন কথা বদলে যাচ্ছে। বিজেপি-সিপিএম-এর মতো কথা ওদের মুখে তোতাপাখির বুলি। তাহলে কি ক্ষতিপূরণ চান? সেটা মুখে বলুন। একটা বাচ্চা মেয়ের ষোলো কোটি টাকা লাগবে ইঞ্জেকশনের। ইতিমধ্যে সাত কোটি উঠেছে। একশো চল্লিশ কোটি দেশের লোক আছেন তাঁরা দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-নরেন্দ্র মোদী দেবেন। আপনারা পরিষ্কার করে যদি না বলেন কী চান হবে কী ভাবে?' তবে এখানেই থেকে থাকেননি মদন মিত্র। তিনি আরও বলেছেন, 'আমি ওদের বলেছি মেয়ের ক্ষতিপূরণে টাকা লাগবে? সেটা পরিষ্কার করে বলুন। এমনিতেই কয়েকশো কোটি টাকা ডাক্তারদের আন্দোলনে উঠে গেছে। আপনারা চাইলে এই মুহূর্তে হাজার-হাজার কোটি টাকা উঠে যাবে। সেটা যদি চান ওই টাকা দিয়ে মেয়ের নামে ভাল কাজ করবেন। তাহলে করতে হবে।'
তবে মদন মিত্রর এই মন্তব্য সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তবে এর আগে নির্যাতিতার পরিবারকে নিশানা করেছিলেন ফিরহাদ। তিনি বলেছেন, এমন এমন হয়েছে উনি যাদের পাল্লায় পড়েছেন এবার ওনারা পলিটিক্স করেছে তাকে নিয়ে। কুণাল বলেছিলেন কিছু অতৃপ্ত আত্মা এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী, মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী রাজনীতি করছে, তাদের পাল্লায় পড়বেন না। প্ররোচনায় পা দেবেন না। সেক্ষেত্রে এই গোটা ব্যাপারটাও তদন্তে আসা উচিত। ওনারা কার কার সঙ্গে কথা বলছেন, কারা কী শেখাচ্ছে, কোন কারণে বলছেন, কীসের ভিত্তিতে বলছেন, এটা গোটা বিষয়টাই তদন্তে আসা উচিত। আর কল্যাণ বলেছিলেন, আজকে উনি ফাঁসি চাইলেন না! তাহলে উনি কী চাইছেন? অন্য মহিলাদের ক্ষেত্রে যদি রেপ করে খুন করে, তাহলে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না, এটাই উনি চাইছেন? যেহেতু ওনার মেয়ে রেপড হয়ে মারা গিয়েছেন বলে, অন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে যদি এরকম ঘটনা ঘটে, তাহলে দোষীর ফাঁসি সাজা হবে না বলা হচ্ছে। আসলে ওনারা এখন রাজনীতি করছেন।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।