সনাতন হিন্দু ধর্মে সকল মন্ত্র কেন 'ওম' দিয়ে শুরু হয়, জেনে নিন এই ধ্বনির গুরুত্ব

  • 'ওম' শব্দটি সংস্কৃত ‘অব’ ধাতু থেকে উৎপন্ন
  • 'ওম'-কারকে ত্র্যক্ষরও বলা হয়
  • এটি সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয় সংঘটনকারী ঈশ্বরের প্রতীক
  • হিন্দু ধর্মের সমস্ত মন্ত্রের শুরু হয় এই ধ্বনি দিয়ে

deblina dey | Published : Oct 17, 2019 3:29 AM IST / Updated: Oct 17 2019, 09:43 AM IST

'ওম' শব্দটি সংস্কৃত ‘অব’ ধাতু থেকে উৎপন্ন। এই বুৎপত্তি অনুযায়ী 'ওম'-কার এমন এক শক্তি যা সর্বজ্ঞ, সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের শাসনকর্তা, রক্ষাকর্তা, মনোবাঞ্ছাপূর্ণকারী, অজ্ঞাননাশক ও জ্ঞানপ্রদাতা। 'ওম'-কারকে ত্র্যক্ষরও বলা হয়, কারণ 'ওম' তিনটি মাত্রাযুক্ত – ‘অ-কার’, ‘উ-কার’ ও ‘ম-কার’। ‘অ-কার’ ‘আপ্তি’ বা ‘আদিমত্ত্ব’ অর্থাৎ প্রারম্ভের প্রতীক। ‘উ-কার’ ‘উৎকর্ষ’ বা ‘অভেদত্ব’-এর প্রতীক। ‘ম-কার’ ‘মিতি’ বা ‘অপীতি’ অর্থাৎ লয়ের প্রতীক। অন্য ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এটি সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয় সংঘটনকারী ঈশ্বরের প্রতীক।

আরও পড়ুন- সামান্য লবন এইভাবে ব্যবহার করেই আপনার খারাপ পরিস্থিতি কাটিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারবেন সৌভাগ্য

হিন্দু ধর্মের প্রতিটি সম্প্রদায় ও উপসম্প্রদায়ের নিকটেই এটি পবিত্র। স্বামী বিবেকানন্দের মতে, 'ওম'-কার “সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের প্রতীক, ঈশ্বরেরও প্রতীক।” রামকৃষ্ণ পরমহংসের মতে, “...ওঁ হইতে ‘ওঁ শিব’, ‘'ওম' কালী’, ‘'ওম' কৃষ্ণ হয়েছেন।” হিন্দুশাস্ত্র মনে এই মন্ত্রের কাজ মনকে সকল ব্যকুলতা বা চঞ্চলতা থেকে ত্রান দেওয়া। মনের সার্বিক উন্নতির জন্য এই মন্ত্রের কোনও বিকল্প নেই। হিন্দু ধর্মের সমস্ত মন্ত্রের শুরু হয় এই ধ্বনি দিয়ে। কেন এই ধ্বনি দিয়েই সমস্ত মন্ত্রের সূচণা হয়। এই বিষয়ে কি বলছে সনাতন ধর্ম, জেনে নেওয়া যাক।

আরও পড়ুন- ধনতেরাসে কিনুন এর মধ্যে যে কোনও একটি, ফল পান হাতনাতে

ধর্ম মতে ওঁ মন্ত্রে ব্রহ্মা,  বিষ্ণু এবং মহেশ্বর এই তিন দেবতাকে একত্র প্রতীক রূপে গন্য করা হয়। তাই যে কোনও মন্ত্র উচ্চারনের আগে এই ধ্বনি উচ্চারণ করে এই তিন দেবতাকে স্মরণ করা হয় বলেই সকল মন্ত্রের আগে এই  ধ্বনি উচ্চারন করা হয়। "'ওম'" শব্দটি তিন অক্ষরে তৈরী। "অ উ ম্।" "অ" এর অর্থ উৎপন্ন হওয়া, "উ" এর অর্থ উড়তে পারা বা বিকাশ, "ম" হলো মৌন হওয়া অর্থাৎ ব্রহ্মলীন হয়ে যাওয়া। "ওঁ" সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি একইসঙ্গে সৃষ্টির দ্যোতক। "ওঁ" এর উচ্চারণ শারীরিক লাভ প্রদান করে। এই ধ্বনি বিশ্বের আদি ধ্বনি বলে মনে করে হিন্দু সনাতন ধর্ম। শাস্ত্র মতে যে কোনও মন্ত্র উচ্চারণের আগে এই ধ্বনি উচ্চারন করলে সেই মন্ত্রকে মহাজগতের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়।

Share this article
click me!