মথুরা এবং বৃন্দাবনে ভগবান কৃষ্ণের বহু মন্দিরের কথা আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন। এই স্থানগুলির সঙ্গে জড়িত অনেক বিশ্বাস এবং ঐতিহ্য রয়েছে, যা আজও প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু ওড়িশার পুরীতে অবস্থিত ভগবান জগন্নাথের মন্দির সারা বিশ্বে বিখ্যাত।
পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার পরে, ভগবান জগন্নাথ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এই কারণে মন্দিরের দরজা ভক্তদের দর্শনের জন্য ১৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকে। এই সময় ভগবানকে নির্জনে রেখে বিশেষ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। মথুরা এবং বৃন্দাবনে ভগবান কৃষ্ণের বহু মন্দিরের কথা আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন। এই স্থানগুলির সঙ্গে জড়িত অনেক বিশ্বাস এবং ঐতিহ্য রয়েছে, যা আজও প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু ওড়িশার পুরীতে অবস্থিত ভগবান জগন্নাথের মন্দির সারা বিশ্বে বিখ্যাত।
জগন্নাথের মূর্তি সাধারণত কাঠে তৈরি করা হয়। নিম গাছের কাঠ দিয়ে। জগন্নাথদেবের প্রধাণ বিগ্রহটি নির্মিত এই কাঠেই। এই মূর্তির চোখদুটি বড়ো বড়ো ও গোলাকার। হাত অসম্পূর্ণ। মূর্তিতে কোনও পা দেখা যায় না। বিগ্রহে অসম্পূর্ণ হাত ও পায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে নানা ধরনের মতবাদ এবং পবিত্র বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। জগন্নাথের পূজা পদ্ধতিও অন্যান্য হিন্দু দেবতাদের পূজাপদ্ধতির চেয়ে আলাদা। ওড়িশা রাজ্যের পুরীতে জগন্নাথের প্রধান মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দির হিন্দুধর্মের চারধামের অন্যতম।
এখানে রথযাত্রা অত্যন্ত আড়ম্বর সহকারে পরিচালিত হয়, যেখানে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। এর প্রস্তুতিও শুরু হয় কয়েক মাস আগে থেকে। রথযাত্রা আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে শুরু হয় এবং শুক্লপক্ষের ১১ তারিখে ভগবান জগন্নাথের প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এই বছর, রথযাত্রার উত্সব ২০ জুন মঙ্গলবার পালিত হবে এবং পুরী-সহ দেশের অন্যান্য রাজ্য ও অঞ্চলে রথযাত্রা বের করা হবে। কিন্তু রথ যাত্রার আগেই ভগবান জগন্নাথ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন- রথযাত্রায় জগন্নাথদেব কেন ভাইবোনদের সঙ্গে তাঁর মাসির বাড়ি যান, জেনে নিন এর ঐতিহাসিক কারণ
আরও পড়ুন- এই দিন থেকে রথের নির্মাণ কাজ শুরু, জেনে নিন জগন্নাথ পুরী রথযাত্রার পুরো নিয়মকার্য
ভগবান জগন্নাথ অসুস্থ কেন?
ভগবান জগন্নাথ প্রতি বছর ১৫ দিন অসুস্থ থাকার পিছনে অনেক জনপ্রিয় গল্প রয়েছে। এমনও একটি বিশ্বাস রয়েছে যে, জ্যেষ্ঠ পূর্ণিমার দিন ভক্তরা স্নান করলে রাতে ভগবান অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের সুস্থ করার জন্য, ডাক্তার দ্বারা তাদের ক্বাথ দেওয়া হয়। ১৫ দিনের জন্য তারা শুধুমাত্র ক্বাথ এবং ফলের রস পান করে। সেই সঙ্গে শীতল পেস্টটিও পুরো ১৫ দিন ভগবানকে মাখিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে মিষ্টি দুধ নিবেদন করা হয়। এই সময়ে, মন্দিরে ঘণ্টা বাজে না, ভক্তরা দর্শন করতে পারে না, ভগবানকে খাবার দেওয়া হয় না।
কবে ভক্তদের দর্শন দেবেন জগন্নাথ
ভগবান জগন্নাথের চিকিত্সা ১৫ দিন চলবে এবং বৈদ্য প্রতিদিন তাঁর চিকিত্সা করবেন। ঈশ্বর এই ১৫ দিন নির্জনে থাকবেন। এরপর ১৯ জুন ভগবান জগন্নাথ সুস্থ হবেন এবং সুস্থ হয়ে ভক্তদের দর্শন দেবেন। এরপর ২০ জুন মহা আড়ম্বর সহকারে রথযাত্রা বের করা হবে।