শ্রীকৃষ্ণের এই মন্দির অলৌকিক ঘটনা সাক্ষী , জন্মাষ্টমীতে জানুন কেন মাত্র ২ মিনিটের জন্য পর্দা ওঠে দেবতার

এখনও প্রায় প্রতিদিনই মথুরা বৃন্দাবনের বঙ্কু বিহারীর মন্দিরে আসেন প্রচুর ভক্ত। দেশের ভক্তরা যেমন আসেন তেমনই এখানে আসেন বিদেশী ভক্তরা। জন্মাষ্টামীতে এই মন্দিরে এখনও উপচে পড়া ভিড় হয়। কিন্তু এই মন্দিরের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে - যার রহস্য আজও অধরা বলেও দাবি করেন কৃষ্ণভক্তরা।


জন্মাষ্টমী মানেই শ্রীকৃষ্ণের পুজো বা আরাধনা। অনেকেই এই সময়টি কৃষ্ণের লীলাভূমি মথুরা বা বৃন্দাবনে বেড়াতে যান। শ্রী কৃষ্ণের লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত বৃন্দাবনেই রয়েছে বঙ্কুবিহারীর মন্দির। এই মন্দির নিয়ে কিছু অলৌকিক ঘটনা রয়েছে। যা আজও কৃষ্ণভক্তদের শিহরিত করে। 

এখনও প্রায় প্রতিদিনই মথুরা বৃন্দাবনের বঙ্কু বিহারীর মন্দিরে আসেন প্রচুর ভক্ত। দেশের ভক্তরা যেমন আসেন তেমনই এখানে আসেন বিদেশী ভক্তরা। জন্মাষ্টামীতে এই মন্দিরে এখনও উপচে পড়া ভিড় হয়। কিন্তু এই মন্দিরের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে - যার রহস্য আজও অধরা বলেও দাবি করেন কৃষ্ণভক্তরা। 

Latest Videos

মন্দিরের মূর্তি
বঙ্কু বিহারী মন্দিরে শ্রী রাধাকৃষ্ণের মন্দিরের রাধা-কৃষ্ণ একসঙ্গে পুজিত হন। কিন্তু মন্দিরে রয়েছে মাত্র একটি দেবতা - সেটি হল কৃষ্ণের। কিন্তু মূর্তিতে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ের পোশাক পরানো হয়।  লোককথা অনুযায়ী এই মন্দিরে রাধা ও কৃষ্ণের যুগল মিলেমিশে একেকার হয়ে গিয়েই নতুন এই মূর্তি তৈরি করেছে। 

মন্দিরে নেই শঙ্খ ও ঘণ্টা
এই মন্দিরের পুজো শঙ্খ ও ঘণ্টা ব্যবহার করা হয় না। জনশ্রুতি শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রী রাধা মন্দিরের স্রষ্টা স্বামী  হরিদাসের কাছে শান্তিতে থাকতে চেয়েছিলেন। শোনাযায় এই মন্দিরে তাঁদের লীলাখেলা এখনও হয়। তাই মন্দিরে শান্তি যাতে বিরাজ করে সেই জন্যই মন্দিরে শঙ্খ-ঘণ্টার ধ্বনী দেওয়া হয় না। 

স্বামী হরিদাস-
স্বামী হরিদাস রাধা অষ্টমীর দিনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। জনশ্রুতি অনুযায়ী তাঁর গানে মোহিত হয়ে রাধা-কৃষ্ণ তাঁকে দেখা দিতেন। আর রাধা-কৃষ্ণ তাঁর কাছে থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করার পরই বৃন্দাবনে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। 

মঙ্গালারতি হয় না-
বিহারীজীর সেবাই অনন্য। শ্রিংগার, রাজভোগ এবং শয়ন এই তিনটি অংশে প্রতিদিন এটি অনুষ্ঠিত হয়। শ্রিংগারের মধ্যে রয়েছে স্নান, পোশাক, মুকুট এবং গয়না। রাজভোগে বিহারীজীকে ভোগ নিবেদন করা হয় এবং সন্ধ্যায় শয্যা সেবার ব্যবস্থা করা হয়। এই মন্দিরে মঙ্গলা সেবার কোন প্রথা নেই, কারণ স্বামী হরিদাস মঙ্গলা সেবার পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন ঈশ্বর এই সময়ে সম্পূর্ণরূপে একটি শিশুর মত বিশ্রাম করুন। এত সকালে গভীর ঘুমে তাদের বিরক্ত করা উচিত নয়। এই মন্দিরে বছরে শুধুমাত্র জন্মাষ্টমীর দিনে মঙ্গলা আরতি করা হয়, তাই এই দিনটি মন্দির দেখার জন্য বিশেষ।

মন্দিরের পর্দা প্রথা- 
এই মন্দিরে প্রতি দুই মিনিট অন্তর পর্দা ফেলে দেওয়া হয়। একটানা বঙ্কু বিহারীকে কেউ দর্শন করতে পারে না। মাত্র দুই মিনিটের জন্য দর্শন করতে দেওয়া হয়। 

কিন্তু কেন?
এই প্রশ্নের সঠিক কোনও উত্তর নেই। অনেকেই বলেন এই মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণের রূপ একটানা অনেকক্ষণ দেখলে সেই ব্যক্তির সঙ্গে কোনও না কোনও অলৌকিক ঘটনা ঘটে। অনেকেই আবার বলে এই মন্দিরে কৃষ্ণমূর্তি দেখলেই ভক্তরা প্রেমে পড়ে যান। আর তারপরই বঙ্কু বিহারী সেই ভক্তের সঙ্গে চলে যান। কৃষ্ণ এখানে প্রেমের প্রতীক হিসেবে পুজিত হন। তাই দেবতা যাতে মন্দির ছেড়ে না যেতে পারেন তার জন্যই প্রথম থেকেই এই ব্যবস্থা। 

তবে সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে প্রাচীন এক জনশ্রুতি। মন্দিরের প্রতিষ্ঠা স্বামী হরিদাস একদিন শ্রীকৃষ্ণের ভোগের জন্য ভিক্ষে করতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময়ই এক মহিলা কৃষ্ণের মন্দিরে এসে তাঁর কাছে কান্নাকাটি করেন আর বলেন তাঁর কোনও সন্তান নেই। তাই তিনি যে ঘি ননী সন্দেশ তৈরি করেছেন সেগুলি যেন মন্দিরের দেবতা ভক্ষণ করেন। মহিলার প্রার্থনা শেষ হলেই তিনি দেখেন বঙ্কু বাহারী এক শিশুর বেশে তাঁর আঁচল ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর বলছে  'তাড়াতাড়ি চল বুড়ো (স্বামী হরিদাস) এসে পড়লে আর যেতে দেবে না। তোমার বাড়িতে গিয়ে তোমার হাতের রান্না খাব।' দুজনে তড়িঘড়ি মহিলার বাড়িতে যান। তারপর খাওয়া দাওয়া সেরে কৃষ্ণ দ্রুত মন্দিরে ফিরে আসেন। কিন্তু দেখেন স্বামী হরিদাস মন্দিরে পৌঁছে গেছেন আর লাঠি হাতে মূল দরজার সামনে বসে রয়েছেন। তখন বালকবেশী কৃষ্ণ তাঁকে সব জানান। তারপর হরিদাস বলেন, 'আমি তোমার জন্য এই বুড়ো বয়সে সারাদিন ভিক্ষা করে চাল, ডাল সংগ্রহ করি, এবং নিজের হাতে রান্না করে তোমাকে খাওয়াই। আর তুমি আমাকে না বলে যেখানে সেখানে যখন তখন চলে যাও। যাও মন্দিরে যাও। আজ থেকে জেনে রাখ, তোমাকে আর কেউ প্রণাম করে প্রার্থনা শেষ করার সময় পাবে না। তার আগেই মন্দিরের পর্দা টেনে দেওয়া হবে। এবার দেখি তুমি কিভাবে মন্দির থেকে বের হও।' সেই থেকে আজ অবধী উক্ত মন্দিরে এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে। বঙ্কু বিহারীর এই দিব্য লীলা আজ অবধী ভক্তবৃন্দদের আনন্দিত ও রোমাঞ্চিত করে যাচ্ছে। 
 

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

প্রয়াগে ডুব দিয়ে পবিত্র স্নান সারলেন যোগী আদিত্যনাথ | CM Yogi | Prayagraj | Mahakumbh 2025 |
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury