সারা বিশ্বে যেখানে শ্রীকৃষ্ণের ভক্তরা ছড়িয়ে আছেন, তাঁরা সবাই জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করেন। মথুরা, বৃন্দাবন সহ একাধিক এলাকা জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে।
রাত পোহালেই জন্মাষ্টমী। গোটা দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখন থেকেই সেজে উঠেছে। বিভিন্ন মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণের পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি মেনে এবার কিছুটা বিধিনিষেধ জারি থাকলেও সব জায়গাতেই বিধিনিষেধ মেনে মেতে উঠবেন কৃষ্ণ ভক্তরা। পুরাণ অনুযায়ী, ৫,২০০ বছর আগে মথুরায় জন্ম নেন শ্রীকৃষ্ণ। দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালনের জন্যই ভগবান শ্রী বিষ্ণুর মানুষরূপে মর্ত্যলোকে আবির্ভাব হয়। সারা বিশ্বে যেখানে শ্রীকৃষ্ণের ভক্তরা ছড়িয়ে আছেন, তাঁরা সবাই জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করেন। মথুরা, বৃন্দাবন সহ একাধিক এলাকা জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে। তবে আগামীকাল এই উৎসবে গা ভাসানোর আগে জেনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য...
দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত জন্মাষ্টমীর এই উৎসব। কোথাও শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী, কোথাও গোকুলাষ্টমী, কোথাও অষ্টমী রোহিনী, আবার কোথাও শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী নামেও পরিচিত।
প্রতি বছর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিবস পালন করা হয়ে থাকে। এই দিন অনেকেই উপোশ করেন। কেউ সারাদিন তো কেউ সারারাত। শ্রীকৃষ্ণকে পুজো দেওয়ার পরই তাঁরা উপোস ভাঙেন।
জন্মাষ্টমীর দিন অনেকে বাড়ির গোপালকে পুজো করেন। একইভাবে গোপালকে সাজিয়ে পুজো করা হয়। গীতাপাঠের পাশাপাশি শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা ঘটনার কথা শোনানো হয়।
জন্মাষ্টমীর দিন ছাপ্পান্ন ভোগ দেওয়া হয় কৃষ্ণকে। এটা ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ থাকে। তবে এই ছাপ্পান্ন ভোগের একটা কাহিনি রয়েছে। পুরাণ মতে, যশোদা বালক কৃষ্ণকে আট প্রহর খেতে দিতেন। কিন্তু, একটা সময় ইন্দ্রের রোষে পড়ে মহাপ্রলয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় প্রাণীদের রক্ষা করতে নিজের কনিষ্ঠ আঙুলে গোবর্ধন পাহাড় তুলে নিয়েছিলেন তিনি। সাতদিন ওইভাবেই ছিলেন। খাবার ও জল কোনও কিছুই মুখে দেননি। প্রলয় বন্ধ হওয়ার পর সেই পাহাড় নামিয়ে রেখেছিলেন। এদিকে যে ছেলে দিনে আটবার খাবার খেত তাকে টানা সাতদিন অনাহারে থাকতে দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন যশোদা। তখন ব্রজবাসী-সহ যশোদা সাতদিন ও আট প্রহরের হিসেবে কৃষ্ণের জন্য ৫৬টি পদ পরিবেশন করেছিলেন। আর সেই থেকেই ছাপ্পান্ন ভোগ চলে আসছে।
পুজোতে তালের তৈরি পদও পরিবেশন করতে হয় শ্রীকৃষ্ণকে। তালের বড়া এই পুজোর প্রসাদের মূল আকর্ষণ। এছাড়াও তালের তৈরি আরও পদও এদিন দেওয়া হয় শ্রীকৃষ্ণকে।
মহারাষ্ট্রে জন্মাষ্টমীতে 'দহি হান্ডি' উদযাপিত হয় মহা ধুমধাম করে। যেখানে বহু মানুষ একত্রিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণের মাখন চুরির আদলে দই বা মাখনের হাঁড়ি ভাঙেন।