হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী শ্রাবন মাসকে ভগবান শিবের জন্মমাস বলে মনে করা হয়। পুরাণ অনুযায়ী এই শ্রাবন মাসেই বিশ্বভ্রাহ্মাণ্ডের দায়িত্ব শিবের হাতে তুলে দিয়ে অনন্তশয্যায় গিয়েছিল শিব। অনেকেই বলে থাকেন এই শ্রবান মাস শিবের অত্যান্ত প্রিয় মাস।
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী শ্রাবন মাসকে ভগবান শিবের জন্মমাস বলে মনে করা হয়। পুরাণ অনুযায়ী এই শ্রাবন মাসেই বিশ্বভ্রাহ্মাণ্ডের দায়িত্ব শিবের হাতে তুলে দিয়ে অনন্তশয্যায় গিয়েছিল শিব। অনেকেই বলে থাকেন এই শ্রবান মাস শিবের অত্যান্ত প্রিয় মাস। শ্রাবন মাস জুড়েই শিব ঠাকুরের বিশেষ পুজোর রীতি রয়েছে। অনেকেই আবার সোমবার শিবের বিশেষ পুজো করেন। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী মনে করা হয় এই সময় শিবের পুজো করলে বিশেষ ফল পাওয়া যায়। শিব ঠাকুর আশীর্বাদন করেন। জীবনের সমস্যা দূর হয়। তবে শিব পুরাণ অনুযায়ী কয়েকটি জিনিস কখনই পুজোর সময় শিবলিঙ্গে অর্পণ করা উতিৎ নয়। তাতে শিব ঠাকুর অপ্রসন্ন হতে পারে। জানুন সেই জিনিসগুলি কী কী-
হলুদ-
শিবলিঙ্গে ভুলেও হলুদ অর্পন করবেন না। কারণ হলুদের সঙ্গে নারী বা মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। আর শিব ঠাকুর হলে চির যোগী। যাকে সংসারী করার চেষ্টা করেছিলেন দেবী পার্বতী। জ্যোতিষ অনুযায়ী শিব পুজোয় হলুদ ব্যবহার করলে কোনও ফল পাওয়া যায় না। অনেকে মনে করেন হলুদের প্রভাব গরম, যে কারণে এটি শিবলিঙ্গে নিবেদন করা যায় যায়। শিব লিঙ্গে বেলপাতা, চন্দন, গঙ্গাজল, চন্দন, কাঁচা দুধ, গাঁজার মত ঠান্ডা জিনিস নিবেদন করতে হয়।
সিদুঁর -
শিবের পুজোর সিঁদুর রাখবেন না। সিঁদুর শিবকে অর্পণ করা অশুব বলে মনে করা হয়। কারণ সিঁদুর সংসারের প্রতীক। আর শিব বা ভোলেনাথ নির্জনে ত্যাগীর মতই থাকতে পছন্দ করেন।
ভাঙা চাল
শাস্ত্রে রয়েছে ভাঙা চাল কখনই শিব ঠাকুরকে নিবেদন করা হয় না। এটি অসম্পূর্ণ বলে ধরে নেওয়া হয়। শিব পুজোয় ভাঙা চাল অশুদ্ধ বলে বিবেচিত হয় ।
তুলসী
শিব পুজোয় কখনই তুলসীর ব্যবহার করবেন না। তাহলে শিবের পাশাপাশি তুলসীর কোপে পড়বেন আপনি। কারণ শিবপুরাণ অনুযায়ী জলন্ধর নামে এক রাক্ষসকে বধ করেছিলেন শিব। কিন্তু প্রবল যুদ্ধেও জলন্ধরকে পরাজিত করতে পারছিলেন তাঁর স্ত্রীর কারণে। কারণ জলন্ধরের স্ত্রী তুলসী নিজের পবিত্রতা আর সতীত্বের জন্য আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। ভগবান বিষ্ণু ছদ্মবেশে তুলসীর পবিত্রতা নষ্ট করেন। তাতেই ক্ষুব্ধ তুলসী শিব ঠাকুরকে ত্যাগ করেছিলেন। সব পুজোয় তুলসীর ব্যবহার হলেও শিব পুজোয় হয় না।
তিল-
তিল বা তিলের তৈরি কোনও সামগ্রী শিব পুজোর ব্যবহার করা যায় না। কারণ তিল হল বিষ্ণুর শরীরের নোংরা থেকে সৃষ্টি বলে মনে করা হয়।
কেতকী ফুল-
শিব পুরাণের গল্প অনুসারে, একবার ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর মধ্যে বিবাদ দেখা দেয় যে দুজনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ? ব্রহ্মাজী মহাবিশ্বের স্রষ্টা হিসেবে নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করছিলেন এবং ভগবান বিষ্ণু সমগ্র সৃষ্টির রক্ষণাবেক্ষণকারী হিসেবে নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলছিলেন। তখন সেখানে হাজির হন বিরাট লিঙ্গ। উভয় দেবতার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে এই লিঙ্গের শেষ প্রথম খুঁজে পাবে তাকেই শ্রেষ্ঠ বলে গণ্য করা হবে। তাই দুজনেই শিবলিঙ্গের প্রান্ত খুঁজতে উল্টো দিকে চলে গেল। শেষ না হওয়ায় বিষ্ণু ফিরে আসেন। ব্রহ্মাজিও সফল হননি, কিন্তু তিনি এসে বিষ্ণুকে বললেন যে তিনি শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছেন। তিনি এর সাক্ষী হিসেবে কেতকি ফুলকে জানান। মিথ্যা কথা বলার পর শিব স্বয়ং সেখানে উপস্থিত হন এবং তিনি ব্রহ্মাজির একটি মস্তক কেটে দেন এবং কেতকি ফুলকে অভিশাপ দেন যে শিবের পূজায় কেতকি ফুল কখনো ব্যবহার করা হবে না।
শঙ্খ
শিব পুজোয় শাঁখ বাজান হয় না। বিশ্বাস করা হয় শঙ্খচূড় নামের এক রাক্ষসকে বদ করেছিলেন শিব। শঙ্খচূড় ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। তাই শিব পুজোয় শাঁখ বাজান হয় না।