শিব হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-লয়রূপ তিন কারণের কারণ, পরমেশ্বর- এটা তার প্রণাম মন্ত্রেই বার বার উঠে এসেছে। শিবমূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল তার তৃতীয় নয়ন, গলায় বাসুকী নাগ, জটায় অর্ধচন্দ্র, জটার উপর থেকে প্রবাহিত গঙ্গা, অস্ত্র ত্রিশূল ও বাদ্য ডমরু। শিবকে সাধারণত ‘শিবলিঙ্গ’ নামক বিমূর্ত প্রতীকে পুজো করা হয়।
শিব পুজো দু'রকম ভাবেই হয় মূর্তি এবং লিঙ্গ। পূবেই বলা হয়েছে লিঙ্গ শব্দে অনেক গুলো অর্থ আছে। লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন বা প্রতীক। সাকার রূপে এরূপ লিঙ্গ শরীর বা চিহ্ন আমরা সর্বত্রই ব্যবহার করি। একটি দেশের পরিচয় বহন করে একটি পতাকা। বিষ্ণুমন্ত্রের যারা অনুসারী তাদের পরিচয় তারা দেন দেহতে তিলক ফোঁটা অঙ্কিত করে। ঘটে আমরা দেবদেবীর পুত্তলী এঁকে দেবতার চিহ্ন বা প্রতীক বসাই। এরূপ দুটি প্রতীক বা লিঙ্গ বা চিহ্ন আমরা পুজোয় ব্যবহার করি। একটি শিব লিঙ্গ আরেকটি নারায়ণ শিলা।
এই শ্রাবণ মাসকে মনে করা হয় শিবের মাস ৷ তাই এই মাসে কিছু নিয়ম মেনে শিব পুজো বা আরাধনা করলে জীবনে দারুণ সুফল পাওয়া যায়। যেমন মনে করা হয়, শ্রাবণ মাসে শিবলিঙ্গের উপর রূপার নাগ স্থাপন করে তাতে জলে ও দুধ মিশিয়ে অভিষেক করলে কালসর্প দোষের প্রভাব কমে যায়। আবার আয়ের পথে প্রশস্থ করতে গঙ্গাজল বা সাধারণ জলের সঙ্গে কাঁচা দুধ, কেশর এবং মিছরি মিশিয়ে অভিষেক করলে দ্রুত ফল দেয়। ঘি, চিনি, আবির ও গঙ্গাজল বা কলের জলে মিশিয়ে অভিষেক করলে সরকারী চাকরি প্রাপ্তি হয়।
আকন্দ ফুল গঙ্গাজলে বা কলের জলে দিয়ে শিবলিঙ্গে অভিষেক করলে কোনও দিন অন্নের অভাব হয় না। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে মুক্তি দিতে গঙ্গাজল বা কলের জলে রুদ্রাক্ষ দিয়ে অভিষেক করুন। সাদা তিল, গঙ্গাজল বা কলের জলের সঙ্গে মিশিয়ে অভিষেক করলে মনষ্কামনা পূর্ণ হয়। গুড়, গঙ্গাজল বা কলের জলের সঙ্গে মিশিয়ে শিব লিঙ্গেঅভিষেক করলে প্রেম সফল হয়। বিবাহের বাধা কাটাতে পাঁচটি বাতাসা এবং এক চামচ তিল গঙ্গাজলে দিয়ে অভিষেক করুন। শ্রাবণ মাসে এই সমস্যা অনুযায়ী এই নিয়মগুলি মেনে চললে দূর হবে সমস্ত সমস্যা।