পুজোর ফুল নৈবেদ্য অর্পণ থেকে শুরু করে, যে কোনও শুভ কাজ আমরা ডান হাত দিয়েই করে থাকি। এমনকী পুজোর প্রসাদ বা হাত দিয়ে নিলে ছেলেবেলায় বকা দিতেন বড়রা। তবে ভাই ফোঁটার মত এমন পবিত্র একটি কাজ কেন বা হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে দিতে হয়! কোন কারণে এই নিয়ম পালন করা হয়। কখনও কি এই বিষয়ে প্রশ্ন জাগেনি আপনার মনে।
হিন্দুধর্মকে বলা হয় পৃথিবীর প্রাচীনতম ধর্ম। কারন এটি প্রাচীনযুগে আর্বিভূত হয়েছে। এই ধর্মাবলম্বীরা একে সনাতন ধর্ম যা চিরন্তন নিয়ম বা চিরন্তন পথ বলে মনে করা হয়। পশ্চিমা পন্ডিতরা হিন্দুধর্মকে বিভিন্ন ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ এবং সংশ্লেষণ হিসেবে গন্য করেন। পুজোর ফুল নৈবেদ্য অর্পণ থেকে শুরু করে, যে কোনও শুভ কাজ আমরা ডান হাত দিয়েই করে থাকি। এমনকী পুজোর প্রসাদ বা হাত দিয়ে নিলে ছেলেবেলায় বকা দিতেন বড়রা। তবে ভাই ফোঁটার মত এমন পবিত্র একটি কাজ কেন বা হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে দিতে হয়! কোন কারণে এই নিয়ম পালন করা হয়। কখনও কি এই বিষয়ে প্রশ্ন জাগেনি আপনার মনে।
তাই এই বিষয়ে সনাতন হিন্দু ধর্মের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মানুষের হাতের ৫টি আঙ্গুল ৫ টি ইন্দ্রিয়ের প্রতীক। এই ৫টি আঙ্গুলের মধ্যে কড়ে আঙ্গুলকে মনে করা হয় মহাশূন্যের প্রতীক। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোমের মধ্যে ব্যোমই হচ্ছে মহাশূন্যে যা কড়ে আঙ্গুলকে মনে করা হয়।
এর কারণ হল শাস্ত্র মতে ভাই ও বোনের সম্পর্ক মহাশূণ্যের অসীম ভালবাসার মত। সেই কারণের প্রতিটি বোন তাঁর ভাই বা দাদার মঙ্গল কামনায় বা হাতের কড়ে আঙ্গুল দিয়েই ফোঁটা দেন। তিথি মেনে দ্বিতীয়াতে ভাইয়ের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যে উপবাস থেকে ফোঁটা দেন।
ভাইফোঁটা হিন্দুদের একটি উৎসব। এই উৎসবের পোষাকি নাম ভ্রাতৃদ্বিতীয়া অনুষ্ঠান। কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে কালীপূজার দুই দিন পরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বাঙালি হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, এই উৎসব কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে উদযাপিত হয়। মাঝেমধ্যে এটি শুক্লপক্ষের প্রথম দিনেও উদযাপিত হয়ে থাকে। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত।
ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা॥
যমুনার হাতে ফোঁটা পেয়ে যম হল অমর।
আমার হাতে ফোঁটা পেয়ে আমার ভাই হোক অমর॥
আরও পড়ুন- দীপাবলিতে রাশি অনুসারে করুন মায়ের পূজা, মা কালীর আশীর্বাদ পাবেন
আরও পড়ুন- দীপাবলির দিন এই ৫টি কাজ করুন, আপনি মায়ের আশীর্বাদ পাবেন
আরও পড়ুন- ঘরের এই দিকে প্রতিষ্ঠা করুন দেবী লক্ষ্মীর মূর্তি, সম্পদ ঐশ্বর্যে ভরে উঠবে সংসার
অনেক সময় এই ছড়াটি বিভিন্ন পরিবারের রীতিনীতিভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। অতঃপর, বোন তার ভাইএর মাথায় ধান এবং দুর্বা ঘাসের শীষ রাখে। এই সময় শঙ্খ বাজানো হয় এবং হিন্দু নারীরা উলুধ্বনি করেন। বোন চন্দন কাঠ জল দিয়ে ঘষে বা কেউ কেউ দইও মিশ্রিত করেন চন্দন কাঠের সঙ্গে, নিজের অনামিকা আঙ্গুল দিয়ে ভাইয়ের কপালে নিচের মন্ত্রটি পড়তে পড়তে তিনবার ফোঁটা দিয়ে দেয়।