কথায় বলে বন্ধুত্ব গাঢ় হয় তিনজনের মিলমিশে। থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের গল্প সেখান থেকেই এসেছে। তিনটি মানুষের বন্ধুত্বে থাকে ভিন্নতা। কেউ বুঝদার, তো কেউ নয়, আবার কেউ দুটিকেই মেপে এগিয়ে চলে। এভাবেই তৈরি হয় তিন ইয়ারি কথা। বলিউড থেকে হলিউড তিন বন্ধুর উদাহরণ দিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ছবি। বৈচিত্রময় বন্ধুত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক ছবি। যা অন্যান্য বন্ধুত্বের ছবি থেকে বেশ আলাদা। আকাশ-সিড-সমীর থেকে ব়্যাঞ্চো-ফারহান-রাজুর বন্ধুত্বে দর্শক খুঁজে পেয়েছে নিজেদের। কীভাবে কলেজের চার বছর, রোডট্রিপ, বদলে দেয় তিনজনের বন্ধুত্বকে। সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না, মান অভিমান মিলিয়েই তৈরি হয় এই তিন ইয়ারি কথা।
দিল চাহতা হ্যয়ঃ ফারহান আখতার পরিচালিত এই ছবি বন্ধুত্বের এক ভিন্ন স্বাদ এনে দিয়েছিল বলিউডে। গতে বাঁধা কোনও কমার্শিয়াল ছবির মত নয় যেখানে, বন্ধুত্ব হল, ত্রিকোণ প্রেমের সমস্যা দেখা দিল তারপর বন্ধুত্ব ভেঙে গিয়ে তৈরি হল নতুন রসায়ন। এই ছবি আজও সকলের মনের মণিকোঠায়। বলিউডে তখন রোডট্রিপ, ক্যাজ্যুয়াল স্টাইল, গোটি রাখা দাড়ি, গতানুগতিক ভাবনাচিন্তারও বাইরে। সেই সময় বন্ধুত্বের গভীরতা কী, বুঝিয়েছিল দিল চাহতা হ্যয়।
থ্রি ইডিয়টসঃ বন্ধুর জন্য কত দূর যাওয়া যায়, কতখানি বলিদান দেওয়া যায়। বেশি দূর নয়, একটা ফ্লাইট মিস আর নিজের প্যান্ট বাড়িতে ভুলে আসা। বছরের পর বছর কেটে গিয়েছে তবে 'ব়্যাঞ্চোকে খুঁজে পেয়েছি' তিনটি শব্দ ফারহান ও রাজুর কাছে 'দোজ থ্রি ম্যাজিকাল ওয়ার্ডস'। যা শুনেই ফারহান নিজের ফ্লাইটের এমারজেন্সি ল্যান্ডিং করায়। রাজু কিছু না ভেবেই প্যান্ট না পরেই বেরিয়ে পরে ব়্যাঞ্চোকে দেখার আসায়। অন্যদিকে ব়্যাঞ্চোও নিজের প্রেমের বলিদান দেয় বন্ধুদের খাতিরে।
কাই পো ছেঃ আদ্যপান্ত বন্ধুত্বের ছবির মত কোনও হ্যাপি এন্ডিং নেই। তবে রয়েছে তিনটে জগতের মিলে যাওয়া। ঈশান, ওমি, গোবিন্দের বন্ধুত্বে দর্শক খুঁজে পেয়েছিল নিজেদের। সিনেপর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠেছিল তাদের বন্ধুত্ব। পাড়ার বন্ধুত্ব যেমন হয়, ঈশান, ওমি, গোবিন্দের বন্ধুত্বও ঠিক তেমনই। তবে এই বন্ধুত্বের শেষ যে ঈশানের মৃত্যু দিয়ে হবে তা কেউ দঃস্বপ্নেও ভাবেনি।
জিন্দাগি মিলেগি না দোবারাঃ তিন বন্ধুর মধ্যে কেউ হয় বুঝদার, তো কেউ আবেগপ্রবণ। এবং এদের মাঝে একজন থাকে যে এই দুটি বিষয়কে মানিয়ে গুছিয়ে চলে। তেমনই ইমরান ছিল আবেগপ্রবণ, যার কারণে অর্জুনের প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। স্পেনের যাত্রা বদলে দেয় অর্জুন এবং ইমরানের বন্ধুত্ব। সঙ্গে কবীরের জীবনেও আসে বিপুল পরিবর্তন।
হেরা ফেরিঃ বাবুরায়ের বয়সের সঙ্গে শ্যাম এবং রাজুর বয়সের আকাশ পাতাল তফাত। অথচ তাদের বন্ধুত্বের এক ভিন্ন ছোঁয়া পায় দর্শকমহল। হাস্যরসের মধ্যেই লুকিয়ে বন্ধুত্বের নয়া রূপ।
ইয়ে জাওয়ানি হ্যয় দিওয়ানিঃ অদিত, অভি এবং বানির বন্ধুত্বের বেশিরভাগটাই মান-অভিমানের পালা। যা নিমেষে মিটে যায় অদিতির বিয়ের সময়। বছরের পর বছর দেখা না হলেও, কথা না হলেও বন্ধুত্বে কোনও চিড় ধরে না। তা প্রমাণ করেছিল এই তিনজন। মানালির ট্রেক থেকে উদয়পুরের ডেস্টিনেশন ওয়েডিং। তিনটে মানুষ বদলালেও বদলায়নি তিনজনের বন্ধুত্ব।
দোস্তানাঃ নেহাকে প্রাণের থেকে বেশি ভালবেসে ফেলেছিল সমীর এবং কুণাল। কথায় বলে বন্ধুত্বের প্রেম ঢুকে পড়লেই চিড় ধরবেই। অথচ এই কথাটি ভুল প্রমাণ করে এই তিনজন। নেহার প্রতি দু'জনের ভালবাসা এক ফোটাও প্রভাব ফেলেনি তাদের বন্ধুত্বে। বরং নেহার জন্য সঠিক পাত্র খোঁজাই হয়ে উঠেছিল তাদের কাজ।