প্রায় বন্ধের মুখে আরোগ্য সেতু অ্যাপ, আপনার সমস্ত নথি সুরক্ষীত তো?

মহামারির প্রকোপ কমতেই রমরমা কমেছে আরোগ্য সেতু অ্যাপেরও। গত ২ বছর ধরে যে প্রত্যেকের মোবাইলেই এই অ্যাপের দেখা মিলত। কোভিড পরিস্থিতিতে ট্রেন হোক বা প্লেন আরোগ্য সেতু অ্যাপ ফোনে থাকা ছিল বাধ্যতামূলক। এমনকি কর্মক্ষেত্রেও এই অ্যাপ ছাড়া মিলত না প্রবেশাধিকার। এবার প্রশ্ন উঠছে মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে কী ভাবে কাজ করবে এই অ্যাপ? 

Ishanee Dhar | Published : Aug 8, 2022 1:31 PM IST / Updated: Aug 08 2022, 07:05 PM IST

মহামারির প্রকোপ কমতেই রমরমা কমেছে আরোগ্য সেতু অ্যাপেরও। গত ২ বছর ধরে যে প্রত্যেকের মোবাইলেই এই অ্যাপের দেখা মিলত। কোভিড পরিস্থিতিতে ট্রেন হোক বা প্লেন আরোগ্য সেতু অ্যাপ ফোনে থাকা ছিল বাধ্যতামূলক। এমনকি কর্মক্ষেত্রেও এই অ্যাপ ছাড়া মিলত না প্রবেশাধিকার। এবার প্রশ্ন উঠছে মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে কী ভাবে কাজ করবে এই অ্যাপ? 


কেন্দ্রের দাবি আরোগ্য সেতু অ্যাপের মাধ্যমে আপনার আশেপাশে কেউ করোনা আক্রান্ত থাকলে তা এই অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। কোনও অফিস, রেঁস্তোরা ইত্যাদি জনবহুল জায়গায় প্রবেশের আগে এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি করোনা আক্রান্ত কী না নিশ্চিত করে নেওয়া হত। কিন্তু মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে প্রয়োজন এবং প্রাসঙ্গিকতা দুই হারিয়েছে এই অ্যাপ। এমনকি বহু মানুষ এই ব্যবহার ইতিমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয় কেন্দ্রের তরফ থেকেও এই অ্যাপের ডেটা অ্যাক্সেস ও শেয়ারিং প্রোটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে এই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ব্যবহারকারীর থেকে নানা তথ্য নেওয়া হয়েছিল। যেমন, ব্যক্তির কোভিডের কোনও লক্ষ্যণ দেখা দিয়েছে কী না, ব্যক্তি কোভিডে আক্রান্ত কী না ইত্যাদি। আচমকাই অ্যাপের ডেটা আক্সেস ও শেয়ারিং প্রোটোকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই বিপুল পরিমাণ ডেটা কোথায় গেল। দেশবাসীর এই ডেটা কি আদৌ সুরক্ষীত রয়েছে? দানা বাঁধছে নানা প্রশ্ন। 


দ্যা ইন্টারন্যাশানাল ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (IFF) এই মর্মে একটি আরটিআই-এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আরোগ্য সেতু সংক্রান্ত নথি জানতে চেয়েছে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয় গত ১০ মে ২০২২ থেকেই এই অ্যাপের ডেটা আক্সেস এবং শেয়ারিং প্রোটোকল বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্যা ন্যাশানাল ইনফরমেটিকস সেন্টার (NIC)-এর মুখপাত্র তথা আরোগ্য সেতুর নির্মাতা এই প্রসঙ্গে জানান এই অ্যাপের প্রাসঙ্গিকতা কমে যাওয়ায় এর ডেটা আক্সেস ও শেয়ারিং প্রোটোকল বন্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই কোভিড পরিস্থিতিতে আপনার আশেপাশে কোনও করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি রইয়েছে কী না জানতে এই অ্যাপ ব্যবহার করা হত, কিন্তু বর্তমানে অ্যাপের প্রয়োজনীয়তা অনেক গিয়েছে। ভবিষ্যতে এই অ্যাপকে জাতীয় স্বাস্থ অ্যাপে পরিণত করা যেতে পারে। 

আরও পড়ুন 'আরোগ্য সেতু' নিয়ে সাফাই কেন্দ্রের, তথ্য কমিশনের সমন পেয়ে কী জানালো মোদী সরকার


করোনা পরিস্থিতিতে এই অ্যাপ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিল মোদী সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতায় সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী সহ একাধিক বিরোধী নেতারা। বিরোধীদের মতে এই অ্যাপের মাধ্যমে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য হাতানো সহ তাঁদের উপর নজরদারি চালাতে চাইছে মোদী সরকার। তবে দাবি ফু দিয়ে উড়িয়ে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল এই অ্যাপ। এমনকি মহামারির পরেও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছিল। আরোগ্য সেতু যেহেতু কো-উইনের সঙ্গেও যুক্ত তাই বহু মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করে টিকাগ্রহণ সংক্রান্ত নথিও ডাউনলোড করতেন। সমীক্ষা বলছে প্রায় দশ কোটিরও বেশি মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে। 
এই বিপুল পরিমাণ জনতার নথি তাহলে গেল কোথায়? আদৌ কি সেই নথি সুরক্ষীত? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আরও পড়ুনলক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের গোপনীয়তা কি আদৌ সুরক্ষিত, 'আরোগ্য সেতু' নিয়ে কিছুই জানাতে পারল না কেন্দ্র

Share this article
click me!