আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে কিন্তু আপনাকেও নির্দিষ্ট পরিমান কর দিতে হবে। ফ্রিল্যান্সদের জন্য কর ব্যবস্থায় বিশেষ নিয়ম রয়েছে। ফ্রিল্যান্স কর্মীরা যেমন আয়করের আওতায় পড়বেন তেমনই আবার আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধা রয়েছে। একজন ফ্রিল্যান্সার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করতে চাইলে আইটিআর ৩ এবং আইটিআর ৪ এর অপশন পেয়ে যাবেন।
আয়ের সীমার ওপরই আয়কর দাখিলের (Income Tax Return) সমস্ত নিয়ম নির্ভর করে। চাকুরিজীবী মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সকলেই নিজস্ব বেতনের ভিত্তিতে আয়করের আওতায় আসেন। কিন্তু যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন, অর্থাৎ ফ্রিল্যান্স কাজকর্মের (Freelance Working) মাধ্যমে টাকা উপার্জন করেন তাদের জন্যও কিন্তু আয়করের বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে। অনেকেই মনে করেন ফ্রিল্যান্স (Freelancer) থেকে উপার্জন করা অর্থের ওপর কোনও আয়কর বসানোর নিয়ম নেই। কিন্তু এই ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। যারা জানেন না, তাঁরা জেনে নিন, আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে কিন্তু আপনাকেও নির্দিষ্ট পরিমান কর দিতে হবে। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, ফ্রিল্যান্সদের জন্য কর ব্যবস্থায় কী নিয়ম রয়েছে। আয়করের (Income Tax)sআওতায় যেমন পড়বেন তেমনই আবার আয়কর ছাড়েরও বিশেষ সুবিধা রয়েছে। গোটা বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
একজন ফ্রিল্যান্সার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন (ITR) ফাইল করতে চাইলে আইটিআর ৩ (ITR-3) এবং আইটিআর ৪ (ITR-4) এর অপশন পেয়ে যাবেন। অনেকে আবার চাকরি করার পাশাপাশিও ফ্রিল্যান্সিং করে থাকে। সেক্ষেত্রেও সেই ব্যক্তি আইটিআর ফাইল করার জন্য এই দুটি ফর্মের অপশন পেয়ে যাবেন। নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে চাকরির বাইরে ফ্রিল্যান্সিং থেকে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় জেনে রাখা দরকার। ফ্রিল্যান্স কাজের ক্ষেত্রে যদি বেশি টাকা লেনদেন করা হয় অর্থাৎ আয়করের আওতায় আসা টাকার পরিমান যদি লেনদেন করা হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু আয়কর দফতর থেকে বাড়িতে নোটিশ আসবে।
এবার জেনে নেওয়া যাক ফ্রিল্যান্স ওয়ার্কারদের জন্য আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রে কী কী সুবিধা রয়েছে। প্রসঙ্গত, যারা ফ্রিল্যান্স থেকে আয় করেন, তাদের নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রতি তিন মাসে অগ্রিম কর দিতে হবে। তবে এটা তখনই হবে, যখন সেই ব্যক্তির করযোগ্য আয়ের পরিমাণ ১০ হাজার টাকার বেশি হবে। আসুন এবার আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রে আর্থিক সীমা জেনে নেওয়া যাক। ব্যবসার আয়ের মতো ফ্রিল্যান্স আয়েও কর ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ফ্রিল্যান্সের কাজ করার জন্য যে খরচ হয়, তা মোট আয় থেকে বাদ দেওয়ার অপশন রয়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আয়ের উপরে কর ছাড় পেতে পারেন করদাতারা।
কোন কোন ক্ষেত্রে করদাতারা ছাড় পেতে পারেন সেটা এবার জানতে হবে। ফ্রিল্যান্সের কাজ করার জন্য যে যন্ত্র ভাড়া নেওয়া হয়, এর মধ্যে ল্যাপটপ বা ব্যক্তিগত কম্পিউটারও পড়তে পারে। কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যে কোনও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, অফিস খরচ, ইন্টারনেট বিল এবং ফোন বিল, কাজের জন্য কোথাও যাওয়ার খরচের মতো খরচগুলিতে আয়করে ছাড় পাওয়ার বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এক্ষেত্রে আরও একটা বিষয় জানার রয়েছে যেমন ফোনের বিল মেটানোকে কর্মক্ষেত্রে করদাতা, ব্যয়ের একটি অংশ হিসাবে প্রতিস্থাপন করে করছাড়ের আওতায় চলে আসার সুযোগ পায়।
আয়কর দাখিলের সময় ফ্রিল্যান্সারদের মাথায় রাখতে হবে, ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করার সময় ফ্রিল্যান্সারদের ৫০ হাজার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন দাবি করার অনুমতি নেই। তবে যদি কোনও ব্যক্তি চাকুরিজীবী হন ও নিজে কোথাও ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও আয় করেন,সেক্ষেত্রে তিনি নিজের চাকরির বেতনের উপরে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন দাবি করার সুযোগ পাবেন। আয়কর দাখিলের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল জমা দেওয়ার সময় টিডিএসের (TDS) উল্লেখ থাকা বাঞ্ছনীয়।