ভয়ঙ্কর হচ্ছে মিউকরমাইকোসিস
সতর্ক করলেন ডা. রণদীপ গুলেরিয়া
মাটি, বায়ু এবং এমনকী খাবারেও থাকতে পারে এর বীজ
তবে সহজেই এড়ানো যেতে পারে এই সংক্রমণ
করোনার পাশাপাশি ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে মিউকরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাক সংক্রমণ। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ওড়িশা - একের পর এক রাজ্য থেকে করোনা রোগীদের দেহে দ্বিতীয় সংক্রমণ বা সেকেন্ডারি ইনফেকশন হিসাবে এই ছত্রাক ঘটিত সংক্রমণের খবর আসছে। ভারতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব যে বাড়ছে, তা শনিবার স্বীকার করে নিলেন দিল্লির এইমস হাসপাতালের প্রধান ডাক্তার রণদীপ গুলেরিয়া।
এদিন তিনি জানিয়েছেন, কালো ছত্রাক সংক্রমণ বা মিউকরমাইকোসিস কোনও নতুন সংক্রমণ নয়। কিন্তু, কোভিড-১৯ মহামারি এবং তার চিকিত্সা পদ্ধতির কারণে হঠাৎই এই সংক্রমণের ঘটনার সংখ্য়া দারুণভাবে বেড়েছে। ডাক্তার গুলেরিয়া জানিয়েছেন শুধু কোভিড সংক্রামিতদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস যাদের থাকে, তাদের অনাক্রম্যতা এমনিতেই কম থাকে। আর কোভিড চিকিত্সার সময় অনেক ক্ষেত্রেই স্টেরয়েড-এর অপব্যবহারে আরও কমে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এটাই বর্তমানে কালো ছত্রাক সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ। এইমস-প্রধান আরও জানিয়েছেন, ২০০৩ সালে সার্স মহামারির সময়ও একইভাবে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া গিয়েছিল।
কীভাবে এর থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে? ডাক্তার গুলেরিয়া জানিয়েছেন, এই ছত্রাকের বীজ ছড়িয়ে থাকে মাটি, বায়ু এবং এমনকী খাবারেও। তবে, সাধারণত এগুলি এতই কম শক্তির, যে এর সংস্পর্শে আসলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেউ সংক্রমিত হন না। তাই কোভিড আসার আগেও এই সংক্রমণ থাকলেও খুব কমই ঘটতে দেখা যেত। কিনতু, কোভিডের কারণেই এখন প্রচুর সংখ্যায় এই সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়ছে। তাই এই সেকেন্ডারি সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতেও মাস্ক পরাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কোনও নির্মাণক্ষেত্রের বায়ুমণ্ডলে এই ছত্রাকের বীজ বেশি থাকে। তাই, এইসব জায়গায় গেলে মাস্ক পরতেই হবে।
একইসঙ্গে হাসপাতালগুলিকে এই ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার জন্য আহ্বান করেছেন ডাক্তার গুলেরিয়া। এইমস প্রধানের মতে এই গৌণ ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ কিনতু, কোভিড রোগীদের শারীরিক অবস্থা আরও জটিল করে তোলে। অনেক ক্ষেত্রেই এই সেকেন্ডারি সংক্রমণের কারণেই মৃত্যু হচ্ছে কোভিড রোগীদের। তিনি জানিয়েছেন বর্তমানে দিল্লির এইমস হাসপাতালে মিউকরমাইকোসিস আক্রান্ত হওয়ার ২৩টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০জন রোগী এখনও কোভিড সংক্রামিত, বাকিরা সদ্য কোভিড-মুক্ত হয়েছিলেন।