একেই বলে কোভিড যোদ্ধা, পুলিশের কোলে চড়ে টিকা নিতে পারলেন অশীতিপর বৃদ্ধা


একদিকে বাড়ছে কালোবাজারি

নিহত হচ্ছে মানবতা

আবার অন্যদিকে আছেন কোভিড-যোদ্ধারা

যেমন দিল্লি পুলিশের কনস্টেবল কূলদীপ সিং

amartya lahiri | Published : May 18, 2021 10:02 AM IST / Updated: May 18 2021, 03:35 PM IST

করোনা মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। কিন্তু, তারপরেও মানবতা জাগ্রত হওয়া তো দূর, বরং, এর সুযোগ নিচ্ছে অনেকেই। কালোবাজারির মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। আবার অন্যদিকে রয়েছেন কোভিড-যোদ্ধারা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যাঁরা এই অসম যুদ্ধে একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছেন। সেইরকমই এক কোভিড যোদ্ধার দেখা মিলল দিল্লিতে, পুলিশ কনস্টেবল কূলদীপ সিং।

শৈল ডি'সুজা বয়স ৮২। বছর দুয়েক হল ইংরেজি ভাষার এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা চলৎশক্তি হারিয়েছেন। হুইলচেয়ারই ভরসা। এক মহিলা পরিচারিকাই তাঁর দেখাশোনা করেন। তিনি বাইরে না বের হলেও, করোনা এখন বাইরে থেকে বাড়ির ভিতরেও ঢুকে পড়ছে। তাই সম্প্রতি তাঁর মনে হয়েছিল কোভিড-১৯'এর টিকাটা নিয়ে নেওয়া দরকার। কিন্তু, কীভাবে তার জন্য নাম নথিভুক্ত করতে হয়, কীভাবেই বা টিকা নিতে যাবেন - কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না অশীতিপর বৃদ্ধা। এই সময়ই তাঁর মাথায় আসে কুলদীপ সিং-এর কথা।

দিল্লির কাশ্মির গেট থানায় কনস্টেবলের কাজ করেন কুলদীপ। তবে পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়েও তিনি অনেক কিছুই করে থাকেন। যেমন শৈল ডি'সুজার সঙ্গে কুলদীপের পরিচয় হওয়ারই কথা নয়। আসলে, তিনি থাকেন কুলদীপের বিট এলাকার মধ্য়ে। কোভিড পরিস্থিতিতে এলাকার সমস্ত প্রবীণ নাগরিকদেরই মাঝে মাঝে সুস্থতা পরীক্ষা করে যান, খোঁজ খবর নিয়ে যান কুলদীপ সিং। এরপর, ওই বৃদ্ধা কূলদীপের কাছে করোনার টিকা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে কূলদীপ জানিয়েছেন, শৈল ডি'সুজা এবং তাঁর টিকা নেওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে তাঁর এসএইচও-র সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কাশ্মীরগেট থানার এসএইচও-র সহায়তায় কূলদীপ ওই বৃদ্ধার নাম কোউইন অ্যাপে টিকাকরণের জন্য নিবন্ধিত করে দেন। সোমবারই ছিল তাঁর টিকা গ্রহণের দিন। কূলদীপই বৃদ্ধাকে টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে যান, তাও একেবারে কোলে করে।

এএনআই-কে কূলদীপ জানিয়েছেন, স্ট্রেচার বা হুইলচেয়ার ছাড়া ওই বৃদ্ধার চলার উপায় নেই। ওই এলাকার টিকাদান কেন্দ্রটি, নিকটবর্তী এক হাসপাতালের দ্বিতীয় তলে করা হয়েছে। সিঁড়ি দিয়ে স্ট্রেচার বা হুইলচেয়ার উপরে নিয়ে যাওয়া যায়নি। তাই তিনি মাস্ক ও পিপিই পরা শৈলকে কোলে করেই দোতলায় নিয়ে যান। তারপর টিকা নেওয়ার পর, একইভাবে নিচে নামিয়ে আনেন এবং বাড়ি পৌঁছে দেন।

কূলদীপ জানিয়েছেন, কর্মসূত্রে তাঁকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকতে হয়, তার উপর মহামাকরির মধ্যে বাড়ি ফেরারও উপায় নেই। পরিবারের থেকে এই দূরত্বই তাঁকে এই আর্তের সেবায় উৎসাহিত করেছে। শৈল বা তাঁর মতো আরও অন্যান্য অসহায় নাগরিকদের মধ্য়ে কূলদীপ এক এক নতুন আত্মীয়তা এক নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর মতে, সকলেরই অসহায় মানুষদের সাহায্য করা উচিত, তাহলেই আমরা এই মহামারি থেকে মুক্তি পাব।

Share this article
click me!