করোনা মহামারির প্রায় অবসান ঘটল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্বের বিধি তুলে দেওয়া হল
১১৪ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ দিয়েছে আমেরিকা
এরপরই এই নির্দেশ জারি করল সিডিসি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারির অবসান ঘটল, এমনটা বলেই দেওয়া যায়। বৃহস্পতিবার, সেই দেশের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র তথা সিডিসি বলেছে, টিকার সম্পূর্ণ ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের এখন বাড়ির ভিতরে বা বাইরে কোথাওই আর মাস্ক পরার দরকার নেই। বৃহস্পতিবার, সিডিসি এই ঘোষণার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস-কে মাস্ক ছাড়াই হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হতে দেখা যায়। প্রসঙ্গত গত বছর মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় এই মাস্ক পরা না পরা, একটা বড় দ্বন্দ্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
মাত্র ১১৪ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ দিয়েছে আমেরিকা। এর ফলে সেখানকার ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৪৯টিতেই সংক্রমণ উল্লেযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস-ওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঠিক এক বছর আগে, ২০২০ সালের এপ্রিলে মহামারী শুরু হওয়ার সময় থেকে আর কখনও হাসপাতালে এত কম সংখ্যক কোভিড রোগীকে ভর্তি থাকতে দেখা যায়নি। ২০২০ সালের এপ্রিলের থেকে বর্তমানে আমেরিকায় করোনায় মৃত্যুর হারও ৮০ শতাংশ কমেছে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন বাইডেন বলেন, এত বেশি সংখ্যক আমেরিকান নাগরিককে যে এত দ্রুত টিকা দেওয়া গিয়েছে, তা এক অসাধারণ সাফল্য। সিডিসির সর্বশেষ নির্দেশিকাগুলি উল্লেখ করে বাইডেন জানান, টিকার সম্পূর্ণ ডোজ যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের কোভিড-১৯ সমক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। তাই তাঁদের আর মুখোশ পরার দরকার নেই। তবে যদি এখনও টিকা না নেওয়া হয়, বা দুটি ডোজের ভ্যাকসিন একটিমাত্র ডোজ নেওয়া হয়, তাহলেও মাস্ক পরতে হবে। আর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরও অন্তত দুই সপ্তাহ অবধি মাস্ক পরতে হবে।
আর মহামারি থেকে মুক্তির আশায় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে মার্কিন অর্থনীতিও। সিডিসি-র সর্বশেষ নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে, পুরোপুরি ভ্যাকসিন পাওয়া ব্যক্তিরা কোনও মাস্ক না পরেই এবং শারীরিক দূরত্বের বিধি না মেনেই ফের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন। এতে করে স্থানীয় ব্যবসা এবং কর্মক্ষেত্রে ফের জোয়ার আসার সম্ভাবনা দেখছে আমেরিকা। এমনকী আমেরিকার ভিতরে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও মার্কিনীদের আর করোনা পরীক্ষা করাতে হবে না বা নিভৃতবাসে যেতে হবে না। সিডিসি জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদিত ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত কোভিড-১৯ টি ভ্যাকসিনগুলি যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের জন্যও সিডিসি-র নির্দেশিকাগুলি কার্যকর হবে।