কারা এই তাবলিগি? কীভাবে এদের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে জঙ্গি নেটওয়ার্কের? এমনই এক বিতর্কিত বিষয় নিয়ে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছিলেন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ তথা প্রখ্যাত রাজনৈতিক টিকাকারী এবং অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ স্বামীনাথন গুরুমূর্তি। যার পরিণামে তাঁকে এবং তিনি যে সংবাদমাধ্যমে এই প্রবন্ধটি প্রকাশ করেছিলেন তার ও তার এডিটোরিয়াল ডিরেক্টর, সংবাদপত্রের মালিকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিস জারি করা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর প্রাইম ল অ্যাসোসিয়েটস নামে একটি আইনি অফিস থেকে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই আইনি নোটিসে জানানো হয়েছে, শেখ মেহবুব আব্বাস নামে এক তাবলিগি জামাত এই নোটিস জারি করেছেন।
এই আইনি নোটিসে তাবলিগি জামাতকে বিশ্বজুড়ে সর্ববৃহৎ ইসলামিক মুভমেন্টকারী গোষ্ঠী হিসাবে দাবি করা হয়েছে। ১০০ বছরেরেও বেশি সময় ধরে এই গোষ্ঠীর অস্তিত্ব রয়েছে বলেও এই আইনি নোটিসে দাবি করা হয়েছে। এমনও দাবি করে বলা হয়েছে বরাবরই সরকারি নির্দেশ-কে সম্মান দেখিয়ে তাবলিগি জামাতরা কাজ করে আসছে। এই নোটিসে সবমিলিয়ে মোট ১৫টি পয়েন্ট-এর অবতারণা করা হয়েছে। শেষ পয়েন্টে শেখ মেহবুব আব্বাস-এর হয়ে জানানো হয়েছে,অভিযুক্ত গুরুমূর্তি এবং বাকিদের বিরুদ্ধে ৪৯৯ নম্বর ধারায় মামলা করা হয়েছে।
কী লিখেছিলেন গুরুমূর্তি এই বিতর্কিত আর্টিকলে? গুরুমূর্তি শুরু থেকেই দাবি করেছেন যে নিজামুদ্দিনকাণ্ডের আগে খুব কম সংখ্যক মানুষই আছেন যারা তাবলিগি জামাত মুসলিমদের কথা জানতেন। বলতে গেলে নিজামুদ্দিনকাণ্ডে তাবলিগি জামাত-রা সবচেয়ে বেশি প্রচারে এসেছেন বলেও ওই প্রবন্ধে দাবি করেন গুরুমূর্তি। এমনকী তিনি ওই প্রবন্ধে দাবি করেছেন, তাবলিগি জামাতরা বড় বড় মুখ করে ছয়টি নীতি কথা আওড়ালেও এরা চরম ইসলামের পক্ষে। আসলে এই ছয় নীতি দেখিয়ে সদ্য তরুণ মুসলিম যুবকদের কাছাকাছি যায় তাবলাগি জামাতরা। এরপর সময় হলেই এই তরুণদের মগজ ধোলাই করে চরম ইসলামের শিক্ষা দেওয়া হয়। আর এই শিক্ষার মধ্যে দিয়ে ওই সব তরুণের মধ্যে জঙ্গি-সন্ত্রাসের মনোভাবকে জাগিয়ে তোলা হয় বলেও এই প্রবন্ধে দাবি করেন গুরুমূর্তি।
এমনকী এই প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে গুরুমূর্তি ডক্টর ফারহান জাহিদ বলে একজনের অবতারণা করেছেন। যিনি আবার পাকিস্তানের সন্ত্রাস মোকাবিলা এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। গুরুমূর্তি তাঁর লেখায় দাবি করেছেন, এই ডক্টর ফারহান তাবলিগি জামাত এবং তাদের সঙ্গে জঙ্গি নেটওয়ার্কের সম্পর্ক কীভাবে স্থাপন হয় তা হাতে কলমে দেখিয়েছেন। তাবলিগি জামাতরা ইউরোপ এবং আমেরিকায় সন্ত্রাস হামলার সঙ্গেও জড়িত বলে দাবি করেছেন ফারহান জাহিদ।
এস গুরুমূর্তির এই লেখা নিয়ে বিতর্ক যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি এমন অনেক মানুষ-ই আছেন যারা লেখাটির প্রশংসা করে সমর্থন করেছেন। এই আইনি নোটিসের অবশ্য জবাব দেওয়া হয়েছে। আরএসএন ল চেম্বার্স বলে একটি ল'ফার্ম থেকে এই নোটি প্রাইম অ্যাসোসিয়েটস এবং তাদের ক্লায়েন্ট শেখ মেহবুব আব্বাসকে পাঠানো হয়েছে। এই পাল্টা আইনি নোটিসে এস গুরুমূর্তি এবং সংবাদপত্র, সংবাদপত্রের মালিক এবং এডিটোরিয়াল ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে অস্বীকার করা হয়েছে।