বেশ কিছু পুন্যার্থী আগে থেকেই চলে এসেছিলেন। সেই জন্যই বুধবার সরকারি নির্দেশিকা মানা সম্ভব হয়নি। বুধবার তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে বৈঠকে বসে প্রশাসন।
রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা (Covid)। দৈনিক সংক্রমণের হারও ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হচ্ছে। কিন্তু মহাপীঠ তারাপীঠে (Tarapith) ভক্ত সমাগম দেখে কিন্তু অতিমারি করোনা যে ফের মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে সে কথা বোঝাই বড় দায়...করোনার বাড়বাড়ন্তে (Covid) যখন রাজ্য সরকার বিভিন্ন নির্দেশিকা জারি করছে তখন সেই সব নির্দেশিকাকে এক প্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে করোনা পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করেই ভিড়ে ঠাসা তারাপীঠের (Tarapith) চিত্র উঠে এল সকলের সামনে। করোনার সমস্ত বিধিনিষেধকে একপ্রকার অমান্য করে (Break The Goverment Rules), সমস্ত নির্দেশিকাকে শিকেয় তুলে পূনার্থীরা ভিড় করে পুজো দিয়ে পুন্যলাভ করলেন। ৫ জানুয়ারী বুধবার এমন চিত্রটাই উঠে এল তারাপীঠ চত্বর থেকে। কোথাও দেখা মিলল না পুলিশ প্রশাসনের। অবাধে চলছে বহিরাগত পুন্যার্থীদের প্রবেশ। আর মাস্ক তো কোন ছাড়...তারাপীঠ প্রাঙ্গনে যেভাবে পুন্যার্থীরা বিনা মাস্কে অবাধ বিচরণ করে চলেছে তাতে যেন মনেই হচ্ছে না গোটা বিশ্বে ইতিমধ্যেই আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ ওরফে ওমিক্রন। এদিকে পুন্যার্থীদের আদরে আমন্ত্রন জানাতে তৈরি হোটেল মালিকরাও। সহজেই ঘর দিয়ে দিচ্ছেন তারাপীঠে আসা পুন্যার্থীদের। হোটেল মালিকরা উল্টে বলছেন, এখনও নাকি তাঁদের কাছে সরকারি নির্দেশিকাটাই (Goverment Guideline) আসেনি।
বুধবার তারাপীঠ মন্দির প্রাঙ্গণে কোনও পুলিশ প্রশাসন না থাকার জন্যই এদিন উপচে পড়া ভিড় সকলের নজরে এসেছে। সকলে রীতিমত গাদাগাদি করে ভিড়ে ঠাসা মন্দিরের ভিতড়েই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সকলের মঙ্গলকামনার প্রার্থনা করলেন। এই প্রসঙ্গে তারাপীঠ মন্দিরে সেবাইত বিমান চট্টোপাধ্যায় বলেন, বেশ কিছু পুন্যার্থী আগে থেকেই চলে এসেছিলেন। সেই জন্যই বুধবার সরকারি নির্দেশিকা মানা সম্ভব হয়নি। তবে বুধবারের এই ঘটনার পুরনাবৃত্তি আর হবে না, সেই বিষয়টি অবশ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ৫০ জনের বেশি পুন্যার্থীকে তারাপীঠ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। রাজ্য সরকার রবিবার সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে। তারাপীঠ ধর্মীয়স্থান হলেও জেলা প্রশাসনের কাছে সেটা কিন্তু পর্যটন কেন্দ্র। তাই বুধবার তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে বৈঠকে বসে প্রশাসন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাট মহকুমা শাসক সাদ্দাম নাভাস, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সায়ন আহমেদ, পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায়, হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুনীল গিরি, মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় এক সঙ্গে মন্দিরে ৫০ জনের বেশি পুন্যার্থী থাকতে পারবে না। হোটেলেরও সমস্ত বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হবে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, তারাপীঠে ঢোকার সমস্ত রাস্তায় নাকাচেকিং করে বহিরাগত প্রবেশ আটকানো হবে।
আরও পড়ুন-সকাল থেকেই ভক্তদের ঢল তারাপীঠে, মুখে নেই মাস্ক, শিকেয় দূরত্ববিধি
আরও পড়ুন-Tarapith Temple: তারাপীঠে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা সৌর উনুন, আহত ৪
পুরুলিয়া থেকে তারাপীঠে পুজো দিতে আসা যাত্রী মিঠু সিংহ বলেন, তাঁরা নাকি দীঘা ঘুরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে সমস্ত কিছু বন্ধ থাকার দরুণ তাঁরা তারাপীঠ চলে আসেন। আর সেখানে বেশ সহজেই হোটেলও পেয়ে যান। অন্যদিকে এক হোটেল ম্যানেজার দেবাশিষ ঘোষের মতে, হোটেল বন্ধের কোনও রকম সরকারি নির্দেশিকা না পাওয়ার জন্য এবং কোনও রকম মাইকিং-ও না হওয়ার দরুণ তাঁরা হোটেলের ঘর ভাড়া দিচ্ছিলেন।