কৌশিক সেনঃ 'আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে'। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০ তম জন্মজয়ন্তীতে কবিগুরু এই লাইনকেই স্বার্থক করে তুললেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের মিক্কিমেঘা কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক বাঙালির। কিন্তু বর্তমানে কোভিড আবহে গোটা বাংলা যখন আতঙ্কিত, চলছে মৃত্যু মিছিল তখন কবিগুরুর জন্মদিনে কোভিড রোগীদের মানসিক শান্তি দেওয়ার অভিনব প্রচেষ্টা করল মিক্কিমেঘা কোভিড হাসপাতাল।
পরনে নেই পাজামা-পাঞ্জাবি, সাদা শাড়ি ও বকুল ফুলেও সেজে উঠতে পারেননি কেউই। কিন্তু তাতে কি হয়েছে। বিশ্বকবি নিজেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মন্ত্র শিখিয়েছেন বারবার। তাইতো পিপিই কিট পড়েই কোভিড ওয়ার্ডেই হল রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন। হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রোগীদের নিয়ে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও সর্বস্তরের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। গাওয়া হল রবীন্দ্র সঙ্গীতও। রোগীদের মন থেকে কোভিড আতঙ্ক কাটানোর পাশাপাশি রোগীদের মনোরঞ্জন ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। এমনটাই জানালেন মিক্কিমেঘা হাসপাতালের নার্সিং ইনচার্জ বাপি বিশ্বাস।
রবিবার রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর সন্ধ্যায় আনন্দ উৎসবে মেতে উঠলেন কোভিড আক্রান্ত রোগীরা। কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করার পাশাপাশি কোভিড আক্রান্ত রোগীরাই গাইলেন, 'প্রান ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে মোড়ে আরও আরও দাও আরও প্রান'। কোভিডের লাগামহীন সংক্রমণ, মৃত্যুমিছিলেও কবিগুরু আরও একবার হয়ে উঠলেন বাঙালির 'প্রাণ পুরুষ'। হাসপাতালের এই অভিনব উদ্যোগে খুশি চিকিৎসাধীন রোগীরাও। আজ রাতে একটু হাসি মুখে, নিশ্চিন্তেই ঘুমোতে যাবেন সকলে।