রাজ্যের সর্বত্র ভ্যাকসিন নিয়ে হাহাকার। ভ্যাকসিন চেয়েও পাচ্ছেন না মানুষ। অথচ বীরভূমে তখন সম্পূর্ণ উলটো ছবি। সকাল থেকেই করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বসে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার মানুষের দেখা নেই। রাজ্যের সর্বত্র যখন ভ্যাকসিনের জন্য বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন না পেয়ে সরকারের মুণ্ডপাত করছেন মানুষ। তখন বীরভূমের মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালে ধরা পড়েছে উল্টো ছবি।
মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালে রীতিমত নষ্ট হচ্ছে ভ্যাকসিন। সচেতনতার অভাবেই মানুষ ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন বলে দাবি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের। রাজ্যের সর্বত্র হাসপাতাল থেকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। সেই তালিকায় রয়েছে মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালও। রয়েছে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত মজুত রয়েছে কোভ্যাকসিন এবং কোভিসিল্ড।
মঙ্গলবার সেখানে ভ্যাকসিন নিয়েছেন মাত্র ৪৯ জন। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন মাত্র ৪৬ জন। অথচ রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালের অধীনে দুটি পুরসভা এবং আটটি ব্লকের মধ্যে আক্রান্তের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুরারই ১ নম্বর ব্লক। মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্লক এলাকায় ১৩৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন সাড়ে ১৪ হাজার মানুষ। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫ হাজারে।
যদিও প্রথম ভ্যাকসিন নেওয়ার চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার নিয়ম। স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে বাড়ি বাড়ি জানিয়ে এলেও দ্বিতীয় ডোজ নিতে হাসপাতাল মুখী হচ্ছেন না মানুষজন বলে অভিযোগ।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আসিফ আহমেদ বলেন, এখন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কাজ চলছে। আমাদের এখনে দুটি ভ্যাকসিনই পর্যাপ্ত রয়েছে। কিন্তু মানুষ নিতে আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তারা দ্বিতীয় ডোজ নিতে অস্বীকার করছেন। কারন গ্রামের দিকে এখনও কুসংস্কার রয়েছে যে ভ্যাকসিন নিলে মানুষ মারা যাচ্ছে। তাও আমরা মানুষকে বুঝিয়ে এদিন ৪৬ জনকে ভ্যাকসিন দিতে পেরেছি।
তিনি আরও জানান যারা ভ্যাকসিন নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন তাদের তালিকা বিডিওকে দেওয়া হয়েছে। এখন দেখা যাক প্রশাসনিকভাবে কতটা সচেতন করা যায় মানুষকে। তবে সব থেকে বেশি ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন ব্লকের খানপুর, সন্তোষপুর গ্রামের মানুষ। এর ফলে ভ্যাকসিন নষ্ট হচ্ছে। তারা যদি প্রথম ডোজ না নিতেন, তাহলে এই সমস্যা হত না। নতুন কাউকে দেওয়া যেত সেই ভ্যাকসিন। কিন্তু এখন তা আর সম্ভব নয়।
মুরারই ১ নম্বর ব্লকের বিডিও প্রনব চট্টরাজ বলেন, “আমি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে অনিচ্ছুকদের তালিকা চেয়েছি। সেই তালিকা ধরে অনিচ্ছুকদের বাড়িতে বাড়িতে আশা কর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাঠাব। অনিচ্ছুকরা যাতে দ্বিতীয় ডোজ নেন তার জন্য আরও একবার চেষ্টা চালাব”।