ভ্যাকসিনের মুনাফায় বিলিয়নেয়ার, মহামারি কালেই সম্পত্তি উপচে পড়ল এই ৯ জনের

করোনার ধাক্কায় বেহাল অর্থনীতি

চারিদিকে টিকে থাকার সংগ্রাম করছে মানুষ

আর এই সর্বনাশে পৌষমাস হয়েছে ৯ জনের

ধনকুবের তালিকায় নাম জুড়েছে তাদের

 

amartya lahiri | Published : May 20, 2021 4:20 PM IST

২০২০-র প্রায় শুরু থেকেই চলছে কোভিড-১৯ মহামারি। প্রথম তরঙ্গের সময় দীর্ঘদিন চলেছে লকডাউন, দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় আবার রাজ্যে রাজ্য়ে চলছে লকডাউনের মতোই বিধিনিষেধ। তাতে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন, পকেটের অবস্থা শোচনীয়। অথচ এই মহামারির কারণেই পৃথিবীতে অন্তত পক্ষে ৯ জন নতুন বিলিয়নিয়ার অর্থাৎ ১০০ কোটি ডলারের বেশি সম্পত্তি থাকা ধনকুবের-এর আবির্ভাব ঘটেছে। বলাই বাহুল্য, এই ৯ জন নতুন ধনকুবেরই বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকার 'অত্যধিক মুনাফা'র ফল। 'পিপলস ভ্যাকসিন' বা 'জনগণের টিকা' নামে এক সংগঠন সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে টিকার এই একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধের আহ্বান করেছে।

'পিপলস ভ্যাকসিন'  সংস্থা জানিয়েছে, কোভিড টিকার সাফল্যের জোরে এই যে নতুন ধনকুবেররা আত্মপ্রকাশ করেছেন, তাদের শীর্ষে রয়েছেন মার্কিন মডার্না এবং জার্মান বায়োএনটেক সংস্থার সিইও-রা। দুজনেরই সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তালিকায় রয়েছেন মডার্নারই দুই প্রতিষ্ঠাতা বিনিয়োগকারী এবং সংস্থার চেয়ারম্যানও। এমনকী, মডার্না-র তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন উৎপাদন ও প্যাকেজিং-এর দায়িত্বে থাকা অন্য একটি সংস্থার সিইও-ও মহামারিকালে বিলিয়নেয়ারে পরিণত হয়েছেন। বাকি তিনজন চিনা ভ্যাকসিন সংস্থা ক্যানসিনো বায়োলজিক্স-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

এই নয়টি নতুন ধনকুবের, যাদের 'ভ্যাকসিন বিলিয়নেয়ার' বলা হচ্ছে, তাদের মিলিত সম্পদের পরিমাণ ১৯.৩ বিলিয়ন ডলার! এই পরিমাণ সম্পদে নিম্ন আয়ের দেশগুলির সমস্ত জনসংখ্যাকে একবারের বেশি (১.৩ বার) টিকা দেওয়া যাবে বলে দাবি করেছে 'পিপলস ভ্যাকসিন'। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশই বাস করেন এই নিন্ম আয়ের দেশগুলিতে। অথচ,  বিশ্বব্যাপী যা টিকা সরবরাহ করেছে বিভিন্ন সংস্থা, তার মাত্র ০.২ শতাংশ পেয়েছে এই দেশগুলি।

এখানেই শেষ নয়, 'পিপলস ভ্যাকসিন' জানিয়েছে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করা ফার্মা কর্পোরেশনগুলির মধ্যে এমন আটজন রয়েছেন, যাঁদের সম্পদ আগেই ১০০ কোটি ডলারের বেশি ছিল, অর্থাৎ করোনার আগেই তাঁরা বিলিয়নেয়ার ছিলেন। মহামারির দেড় বছরে তাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে  ৩২.২ বিলিয়ন ডলার! এই অর্থে ভারতের সকলকে সম্পূর্ণরূপে অর্থাৎ দুই ডোজ করে কোভিড টিকা দেওয়া যাবে।

'পিপলস ভ্যাকসিন'এর মতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের উপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সংস্থাগুলির। তাই টিকা বিক্রি করে তারা বিশাল লাভ করবে, এই প্রত্যাশায় এই সংস্থাগুলির স্টকের মূল্য দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকার উপর এই একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের কারণেই ফার্মাসিউটিক্যাল কর্পোরেশনগুলি ভ্যাকসিনের সরবরাহ ও দামের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে রেখেছে। এর ফলে, তাদের মুনাফা আরও বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু, গরীব দেশগুলির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ডোজের টিকা সংগ্রহ করাটাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

 

Share this article
click me!