২০২২-এর মাঝামাঝি সময়েই করোনার অবসান ঘটাতে চাইছে IMF
৫০ বিলিয়ন ডলারের চমকে দেওয়া প্রস্তাব দিল তারা
বিশ্বের সকল দেশের অন্তত ৬০ শতাংশ জনগণকে টিকা দেওয়া তাদের লক্ষ্য
কিন্তু, কোথা থেকে আসবে এই বিপুল অর্থ
বিশ্বের অনের মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশই যখন করোনার টিকা সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছে, সেই সময় উচ্চ আয়ের দেশগুলি প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকাকরণ প্রায় শেষ করে ফেলে, শিশুদের টিকা দেওয়ার কথা ভাবছে। নিঃসন্দেহে অর্থনৈতিক বৈষম্যের একটা বড় প্রভাব পড়ছে টিকাকরণে। করোনা টিকা নিয়ে এই বৈষম্যের মধ্যেই, কোভিড-১৯ মহামারির অবসান ঘটাতে, শুক্রবার এক অভূতপূর্ব প্রস্তাব দিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ (IMF)।
তাদের লক্ষ্য ২০২২ সালের মধ্যেই করোনাকে বিদায় জানানো। এর জন্য ২০২১ সালের মধ্যে সমস্ত দেশে জনসংখ্যার কমপক্ষে ৪০ শতাংশকে এবং ২০২২ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে কমপক্ষে ৬০ শতাংশকে টিকা দেওয়া। আর এই লক্ষ্যপূরণের জন্য ৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অঙ্কের অর্থ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। এর মধ্যে অনুদান হিসাবে ৩৫ বিলিয়ন ডলার দেবে সমৃদ্ধ দেশগুলি এবং বেসরকারী ও বহুপাক্ষিক দাতারা। বাকি ১৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বিভিন্ন দেশের সরকারগুলি। এর জন্য তারা বহুমাত্রিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলি থেকে স্বল্প-বা বিনা সুদে ঋণ নিতে পারবে।
আইএমএফ কর্মকর্তাদের আশা, ২০২২ সালের প্রথমভাগের মধ্য়ে মহামারির অবসান ঘটাতে পারলে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারেও দ্রুততা আসবে। ২০২৫ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ যুক্ত হবে বলে আশা করছে তারা। তবে বলাই বাহুল্য সমৃদ্ধ দেশগুলিই সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। আইএমএফ জানিয়েছে, কোভিড সংকটের ফলে বিশ্বজুড়ে ৩.৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চরম অসাম্য দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থাটা পৃথিবীর জন্য 'মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ' বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। তাই যত দ্রুত সম্ভব কোভিড মহামারির অবসান ঘটাতে চাইছেন তাঁরা।
আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ এবং আরেক কর্মী তথা অর্থনীতিবিদ রুচির আগরওয়াল এই খসড়া প্রস্তাবটি তৈরি করেছেন। এই পরিকল্পনায় ব্যাপক হারে অর্থায়ন, ভ্যাকসিন অনুদান এবং কাঁচামাল ও ভ্যাকসিনগুলির বিনামূল্যে আন্তঃসীমান্ত প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আহ্বান করা হয়েছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, টিকা প্রস্তুতকারী দেশগুলি যদি তাদের জনগণকে অগ্রাধিকারও দেয়, তাহলেও এই বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডোজ অনুদান দেওয়া যেতে পারে। আর ২০২২ সালের প্রথম দিকে বুস্টার ডোজ হিসাবে ১ বিলিয়ন অতিরিক্ত ডোজ সরবরাহ করা যেতে পারে।