১৪ মাসে ৭৮বার কোভিড পজিটিভ, নেই স্বাদ-গন্ধের অনুভুতি - তুরস্কের এই ব্যক্তি কাহিনি বিস্ময়কর

তুরস্কের (Turkey) মুজাফ্ফর কায়সান গত ১৪ মাস ধরে কোভিড-১৯'এ আক্রান্ত। কেন ৭৮ বার তাঁর করোনাভাইরাস পরীক্ষার পরও তাঁর ফল এল ইতিবাচক, কী বলছেন ডাক্তাররা?
 

Web Desk - ANB | Published : Feb 16, 2022 7:41 AM IST / Updated: Feb 16 2022, 02:28 PM IST

গত ৩ বছরে অনেকেই বেশ কয়েকবার কোভিড-১৯ (COVID-19) পজিটিভ হিসাবে সনাক্ত হয়েছেন। তবে, তুরস্কের (Turkey) মুজাফ্ফর কায়সানের মতো কোভিড অভিশাপ সম্ভবত কারোর জীবনে আসেনি। গত ১৪ মাসে ৭৮ বার তাঁর করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়েছে, আর প্রত্যেকবারই ফল এসেছে ইতিবাচক। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে প্রথমবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল কায়সান। তারপর নয় মাস হাসপাতালে এবং বাকি পাঁচ মাস ইস্তান্বুলের (Istanbul) বাড়িতে নিভৃতবাসে তিনি করোনার সঙ্গে লড়াই করে চলেছেন।  

কেন এমনটা হল, কেন একবার আক্রান্ত হওয়ার পর, আর কোনওভাবেই তিনি কোভিড-১৯ মুক্ত হতে পারছেন না? চিকিত্সকদের মতে, তাঁর এই অবস্থা সম্ভবত তাঁর দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে হয়েছে। আসলে, ৫৬ বছর বয়সী কায়সান একজন লিউকোমিয়ার (Leukaemia) রোগী, রক্তকলার ক্যান্সারে (Cancer) ভুগছেন। তার কেসটি এখন তুরস্কের কোভিড-১৯ সংক্রমণের দীর্ঘতম কেস হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে। কায়সান টিকাও (Coronavirus Vaccine) নিতে পারছেন না। কারণ, তুরস্কের করোনা প্রোটোকল অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি পুরোপুরি ভাইরাস মুক্ত হওয়ার আগে তাঁকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। 

এই অবস্থায়, স্ত্রী, ছেলে, নাতনি-সহ পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কায়সান একটি কাচের দরজা দিয়ে কথা বলেন। যোগাযোগ আছে ঠিকই, কিন্তু পরিবারের সদস্যদের স্পর্শের অভাব বোধ করেন তিনি। কিন্তু, কিছু করার নেই। ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন, করোনার অন্য কোনও ভেরিয়েন্টের যাতে তাঁকে ছুঁতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন হল, তাঁর স্বাদ এবং গন্ধের অনুভূতিও চলে গিয়েছে। তবে, এত কিছুর পরও কায়সানের মেজাজ ফুরফুরেই রয়েছে। তাঁর আশা তিনি দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন। 

সম্প্রতি, প্রথম পরীক্ষার ৪৪১ দিন পর তাঁর ফের কোভিড পরীক্ষা হয়েছে, ৭৮ তম বারের জন্য। ফল এসেছে ইতিবাচক। তিনি মজা করে বলেছেন, সম্ভবত কোভিডের কোনও মহিলা সংস্করণ তাঁর শরীরের ঢুকে পড়েছে। সে তাঁর প্রতি এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে, যে আর যেতেই চাইছে না। 

গবেষণা বলছে কায়সানের মতো যারা ইমিউনোসপ্রেশন (Immunosuppression) রয়েছে, অর্থাৎ যাদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম থাকে, তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে দীর্ঘ সময় ধরে ভুগতে পারে। আমেরিকার স্বাস্থ্য বিভাগ এই ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনের চারটি করে ডোজ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সিডিসি-র মতে, চিকিৎসাধীন এইচআইভি রোগী, টিউমার আছে যাদের বা রক্তের ক্যান্সার ও অন্যান্য ক্যান্সারের রোগীদের মাঝারি বা গুরুতরভাবে 'ইমিউনোকম্প্রোমাইজড' (Immunocompromised) বলে বিবেচনা করতে হবে। 

Share this article
click me!