করোনা যুদ্ধে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
ফাইজারের টিকা পাবে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীরাও
আরও অনেক সংস্থাই শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন তৈরি করছে
করোনার তৃতীয় তরঙ্গে ঝুঁকি বেশি শিশুদেরই
কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার, সেই দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ১২ বছর থেকে ১৫ বছর বসয়ী শিশুদের ফাইজার সংস্থার তৈরি কোভিড-১৯ টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এই বয়সসীমার শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শিশুরা স্কুলে ফিরে আসার আগেই তাদের করোনার বিরদ্ধে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যেই তাদের টিকা দেওয়া হবে।
বর্তমানে, বিশ্বব্যাপী যেসব করোনা টিকা অনুমোদন পেয়েছে, তার সবগুলিই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। আমেরিকায় ফাইফাইজারের ভ্যাকসিন অবশ্য ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদেরও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কানাডা, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ১২ বছর এবং তার বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের টিকাটিকে অনুমোদন দিয়েছে। তবে সেই দেশেও এখনও শিশুদের টিকাকরণ শুরু হয়নি।
মার্কিন এফডিএ জানিয়েছে, ফাইজার ভ্যাকসিনটি ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মার্কিন কিশোর-কিশোরীকে ডামি শট দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, ফাইজারের টিকাটি শিশুদের জন্য নিরাপদ শুধু নয়, পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের থেকেও শিশুদের মধ্যে এই টিকা বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি করে। আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও একেবারে প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই - বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাত-পা ফোলা, ফ্লু জাতীয় জ্বর, সর্দি বা গায়ে ব্যথা হতে দেখা গিয়েছে। এগুলি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার সংকেত।
ফাইজার সংস্থা এবং তাদের জার্মান অংশীদার বায়োএনটেক সংস্থা, সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে তাদের টিকা শিশুদের জন্য অনুমোদন দেওয়ার অনুরোধ করেছে। তবে, শিশুদের জন্য করোনা টিকা অনুমোদন শুধু যে ফাইজার চাইছে তা নয়। মডার্নাও জানিয়েছে, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য তাদের টিকা কার্যকরী এবং সুরক্ষিত। নোভাভ্যাক্স-ও তাদের ভ্যাকসিনটি শিশুদের মধ্যে পরীক্ষা করা শুরু করেছে। ফাইজার এবং মডার্না আবার ৬ মাস থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্যও টিকা তৈরির গবেষণা চালাচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থাও কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনটি ব্রিটেনের ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রয়োগকরে গবেষণা করছে। চিনের সিনোভ্যাক সম্প্রতি জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিনটি ৩ বছরের শিশুদেরও দেওয়া যাবে।
করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গে, দেখা গিয়েছে শিশুদের কোভিড-১৯'এ গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে অনেক কম। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় তরঙ্গের ঘাতটা বেশি পড়বে শিশুদের উপরই। প্রথম তরঙ্গে বেশি কাবু হয়েছিলেন বয়স্করা, দ্বিতীয় তরঙ্গের ঘাত বেশি পড়েছে যুবদের উপর। এবার পালা শিশুদের, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তাই, দ্রুত শিশুদের টিকাকরণের প্রচেষ্টা চলছে।