করোনার কোপ ভাতের থালায়, বন্ধ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, না খেয়ে দিন কাটছে হাজার হাজার শিশুর

  • প্রায় অভুক্ত আসানসোলের সালানপুর ব্লকের সাত হাজার শিশু
  • করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র
  • খাবার পাচ্ছে না ব্লকের কোনও পরিবার
  • মিলছে না শুকনো খাবারও

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি। এতে করোনা হয়তো ঠেকানো গিয়েছে, কিন্তু কোপ পড়েছে ভাতের থালায়। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা থাকলে তাও দুবেলা খাবার জুটত ওদের। কিন্তু এখন প্রায় অভুক্ত আসানসোলের সালানপুর ব্লকের সাত হাজার শিশু। 

কোনও শিশুই খাবার পাচ্ছে না অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র (আইসিডিএস) থেকে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ থাকলেও, উপভোক্তাদের বাড়িতে চাল-আলু পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিগত দুইমাস ধরে কোনও উপভোক্তাই খাবার পায়নি বলে অভিযোগ। 
কেউ কেউ শুকনো খাবার বিলি নিয়ে বিভ্রান্তিতেও রয়েছেন। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক উপভোক্তা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও আইসিডিএস কেন্দ্রগুলিতে খাবার না মেলায় ক্ষুব্ধ বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তা।

Latest Videos

সালানপুর ব্লকের টাবাডি আদিবাসীপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তা এক শিশুর মা পানু মুর্মু বলেন,এই স্কুলে লকডাউনের পর থেকে দুই একমাস শুকনো খাবার মিললেও আর কোন খাবার দেওয়া হয় না এখন। আগে চাল, ডাল, সোয়াবিন, আলু দিত। এখন প্রায় ছয় সাত মাস হল তাও দেওয়া হয় না। 

মল্লাডি আদিবাসি পাড়ার অঙ্গনবাড়ী শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী অর্পিতা টুডু বলে সে আজ প্রায় বহুদিন স্কুলে যায়নি। তাছাড়া তাদের যে শুকনো খাবার দেওয়া হত তাও এখন বন্ধ । 
গ্রামের এক ছাত্রের বাবা শ্যামলাল মুর্মু  জানান, বাচ্চাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই আইসিডিএস কেন্দ্র যেমন বন্ধ রাখা হল, তেমনই খাবারের নিশ্চয়তা ও শিশুদের পুষ্টির বিকাশের দিকটাও খেয়াল রাখা উচিত ছিল। এখন এই লকডাউনে শিশুদের মুখে কী খাবার তুলে দেবেন তাঁরা, সেই চিন্তায় রয়েছেন। 

উল্লেখ্য, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ০-৫ বছর পর্যন্ত শিশুদের পড়াশোনা করানো হয়। ওই সব শিশু, তাদের মা এবং গর্ভবতী মহিলাদের রান্না করা পুষ্টিকর খাবার (ডিমের ঝোল-ভাত, সয়াবিন দিয়ে খিচুড়ি, পৌষ্টিক লাড্ডু ইত্যাদি) দেওয়া হয়। সালানপুর ব্লকে মোট ২৪৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে যার মধ্যে কয়েক হাজার  শিশু, গর্ভবতী এবং প্রসূতি মা রয়েছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই সাত হাজারের কিছু বেশি। 

প্রশাসনের একটি সূত্রের হিসেবে, ব্লকপিছু গড়ে ৬-৮টি চরম অপুষ্ট শিশু আছে। মাঝারি অপুষ্ট শিশু আছে গড়ে ১০-১২টি। সেই সংখ্যা শূন্যতে নামিয়ে আনতে জেলা জুড়ে বিশেষ উদ্যোগ চলছিল। কিন্তু করোনার কোপে সেই প্রয়াস ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকেরা। শিশু এবং মায়েদের ডাক্তারি পরীক্ষার কী হবে, সে প্রশ্নও রয়েছে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

পুলিশি অভিযানে বড়সড় সাফল্য! উত্তেজনা রানাঘাটে, দেখুন | Ranaghat News Today
ইসকনের পাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কড়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশকে? Narendra Modi
অসাধ্য সাধন! যথেষ্ট পরিকাঠামো না থাকার সত্ত্বেও ৮০০ গ্রামের শিশুকে বড় করে তুলল বারাসাত মেডিক্যাল
ফের ইডির ভয়াল থাবা! মধ্যমগ্রাম কাঁপলো ইডির দুঃসাহসিক অভিযানে, দেখুন | North 24 Parganas | ED Raid
'রোহিঙ্গারা মমতার ভোট ব্যাঙ্ক তাই তিনি বিএসএফকে জমি দিচ্ছে না' বিস্ফোরক মন্তব্য অগ্নিমিত্রার