রাজ্যে একের পর এক বাউল শিল্পীর আত্মহত্যা, চরম আতঙ্কে দিন গুনছে হাজার হাজার পরিবার

  • অতিমারি করোনার ছোবল
  • প্রায় দেড় থেকে দুবছর ধরে উপার্জন বন্ধ লোকসঙ্গীত শিল্পীদের
  • অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন শিল্পীরা
  • অনেকে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথও

যন্ত্রে ধুলো জমেছে, কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে প্রায় মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলার কয়েক হাজার বাউল, ভাওইয়া, খন সহ সমস্ত লোকসংগীত শিল্পীরা। কারন একটাই ভয়াবহ অতিমারি করোনার ছোবল। প্রায় দেড় থেকে দুবছর ধরে সরকারি বেসরকারি সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন শিল্পী ও তাঁদের সঙ্গতেরা। অনেকে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথও। 

রাজ্য সরকারের মাসিক এক হাজার টাকা করে বেশকিছু শিল্পী ভাতা পেলেও তা দিয়ে সংসার চলে না। শিল্পীদের দাবি রাজ্যের সরকার তাঁদের ভাতা একটু বৃদ্ধি করে বাঁচার পথ করে দিক।  ২০২০ সালের প্রায় শুরুর সময় থেকেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে গোটা পৃথিবী জুড়ে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে শুরু হয় লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত ধর্মীয় উৎসব থেকে নানা সরকারি বেসরকারি সব ধরনের অনুষ্ঠান। আর এতেই মুখ থুবড়ে পড়েন বিভিন্ন পেশার শিল্পীরা। 

Latest Videos

বাউল থেকে ভাওইয়া, খন থেকে কবিয়াল সহ সমস্ত শিল্পী ও তাঁদের সঙ্গতদের বন্ধ হয়ে যায় রুজি রুটি। উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রায় তেরো থেকে চোদ্দ হাজার লোকসংগীত শিল্পী সহ উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতি জগতের ত্রিশ হাজার শিল্পী ও তাঁদের বাদকেরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। সরকারি বেসরকারি নানান অনুষ্ঠানে গান বাজনা ও সঙ্গীত পরিবেশন করে যে রোজগার হত তা দিয়েই চলত তাঁদের পরিবার প্রতিপালন। গতবছরই আনলক প্রথম পর্ব থেকে তৃতীয় পর্ব শুরু হলেও বন্ধই থেকে যায় তাঁদের রোজগারের পথ। 

শিল্পীরা ভেবেছিলেন বিষের ২০ সাল বিদায় নিতেই খুলে যাবে তাঁদের জীবন জীবিকার পথ। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই আবারও লকডাউন, আবারও উৎসব অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা। ফলে আজ প্রায় দেড় বছর ধরে জীবন জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একপ্রকার অনাহার অর্ধাহারে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন এই শিল্পীরা। 

রায়গঞ্জ তথা উত্তরবঙ্গের প্রথিতযশা বাউল শিল্পী তরনী সেন মহন্ত আক্ষেপের সুরে জানালেন তাঁদের দুঃখ কষ্টের কথা। বহু শিল্পী না খেতে পেয়ে মারাও গিয়েছেন, কেউবা আবার উপার্জনহীন হয়ে সংসার প্রতিপালন করতে না পারায় আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে রাজ্যের সরকার বেশকিছু শিল্পীদের মাসিক এক হাজার টাকা করে শিল্পী ভাতা প্রদান করলেও নিজেদের জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকারের দেওয়া এক হাজার টাকার পরিবার প্রতিপালন কি করে সম্ভব প্রশ্নটা থেকেই যায়। 

তাই উত্তর দিনাজপুর জেলার হাজার হাজার শিল্পীদের দাবি রাজ্য সরকার এই সঙ্কটময় মুহুর্তে তাঁদের শিল্পী ভাতার পরিমান বাড়িয়ে দিয়ে বাঁচার রসদ জোগাক। নইলে একদিন এই শিল্পীদের যন্ত্রে ধূলোর পাহাড় জমবে আর তাঁদের কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে হারিয়ে যাবে অন্ধকারের অতল গহ্বরে। জেলার ঐতিহ্য বাউল আর খন বা ভাওইয়াতে শোনা যাবেনা মধুর গান। 

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে মহা মিছিল শুভেন্দুর, দেখুন সরাসরি
'রোহিঙ্গারা মমতার ভোট ব্যাঙ্ক তাই তিনি বিএসএফকে জমি দিচ্ছে না' বিস্ফোরক মন্তব্য অগ্নিমিত্রার
ED Raid News: কলকাতায় ফের ইডির দুঃসাহসিক অভিযান! ফাঁস হলো বড় দুর্নীতি, দেখুন
'ভাইপোর চাকর পুলিশ কেন বিজেপি পোলিং এজেন্টদের গ্রেফতার করল?' গর্জে উঠে প্রশ্ন তুললেন শুভেন্দু
হতবাক সবাই! হাওড়া স্টেশন থেকে এ কী উদ্ধার হলো, দেখুন | Howrah News Today