করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যত বাড়ছে ততই বেআব্রু হয়ে যাচ্ছে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। বাদ যায়নি এই রাজ্যে। হাসপাতালে শয্যা অপ্রতুল। অক্সিজেন থেকে ওষুধ সবই বাড়ন্ত। এই অবস্থায় রীতিমত প্রকট হচ্ছে মানবিকাতা। সেই মানবিকতা সজ্ঞা নতুন করে এই রাজ্যে লিখছে রেড ভল্যান্টিয়ার্সের সদস্যরা। করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে তাঁদের অক্সিজেন সরবরাহ করা এমনকি প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ-- সব কিছু নিয়েই হাজির রেড ভলান্টিয়ার্স । সেই রেড ভলান্টিয়ার্সের একজন সদস্য হলেন রানা।
বেহালার ঠাকুরপুকুর রোডের বাসিন্দা রানা। পেশায় অটো চালক। শুরু থেকেই রেড ভলান্টিয়ার্সের সঙ্গে যুক্ত তিনি। জানিয়েছেন, কাল রাতে একটি একটি ফোন পান। সাহায্যের আর্তি জানিয়ে রাতেই একটি ফোন আসে তাঁর কাছে। সেই ফোনেই জানিয়ে দেওয় হয় আক্রান্ত বেহালার বাসিন্দা। অবস্থা খুবই শোচনীয়। অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। রানা জানিয়েছেন এই ফোন পাওয়ার পরেই তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা শলাপরামর্শ শুরু করেন। কিন্তু শত চেষ্টাতেই অ্যাম্বুলেন্সে জোগাড় করতে না পেরে কিছুটা হতাশার সঙ্গে আক্রান্তের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। জানিয়েদেন তাঁরা অটো করে করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চান। পরিবারের সদস্যরা রাজি হলে রাতের অন্ধকারে নিজের অটো ও দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে রেড ভলান্টিয়ার্সের কমরেড রানা।
বেহালা চার তলা বাড়ি থেকে কাপড়ে মুড়ে কোনও ক্রমে তিন জনে মিলে নামিয়ে আনেন করোনা আক্রান্তকে। একটি অটোতে করেই আক্রান্তকে নিয়ে যান হাসপাতাল। রাত আড়াইটে নাগাদ বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। করোনাযুদ্ধে রানাদের সম্বল ছিল তিনটি পিপিই কিট আর একটি অটো। তাতেই যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস লিখলেন রেড ভলান্টিয়ার্স সদস্যরা।
রানা জানিয়েছেন এটাই জয় নয়। আরও বড় যুদ্ধে তাঁরা সামিল হতে চান। আক্রান্ত করোনা রোগীদের দিকে তাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চান। এটা শুধু তাঁর নয় রেড ভল্যান্টিয়ার্সের সকল সদস্যদের উদ্দেশ্য এটাই। এই মহৎ উদ্দেশ্যে তাঁরা সামিল হয়ে একটি মাত্রই বার্তা দিচ্ছেন, তাঁদের মত বাকিও যেন করোনা রোগীদের দূরে ঠেলে না দেয়। সাবধানতা অবলম্বন করে যতটা পারা যায় সহযোগিতার হাত যেন বাড়িয়ে দেয়। সকলে যদি তৎপর হয় তাহলেই করোনার বিরুদ্ধে অর্ধেক যুদ্ধ জয় করা সম্ভব হবে।