গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কোভিড ১৯ মহামারির কারণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। মারাত্ম ছোঁয়াচে এই জীবাণু নিয়ে একের পর এক গবেষণা চলছে। আগেই বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা জানিয়ে ছিলেন মহিলাদের তুলনায় করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু হওয়ার সম্ভবনা পুরুষদের অনেকটাই বেশি। নতুন একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন কী কারণে পুরুষদের ঝুঁকি বেশ। তাঁদের কথায় টেস্টোস্টেরনের মাত্রার জন্য পুরুষদের ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।
সেন্ট লুইয়ের ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন সম্প্রতি একটি সমীক্ষা করেছিল। তাদের গবেষণার রিপোর্টই প্রকাশিত হয়েছিল জ্যামা নেটওয়ার্ক ওপেন জার্নালে। সেই রিপোর্ট বলা হয়েছে, পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের স্তর কম থাকার জন্যই এই তাদেরে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। মহামারির চলাকালীন সময়ে একটি প্রচলিত ধারনা বিজ্ঞানীরা পুরুষদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকেই চিহ্নিত করেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হওয়ার সময় যদি পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যায় তাহলে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গবেষকরা ১৫২ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণা করেছিলেন।
Cyclone Yaas-এর তাণ্ডব, বিপর্যস্ত বাংলা ও ওড়িশার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ছবিগুলি দেখুন ...
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ৯০ জন পুরুষ আর ৬২ জন মহিলার মধ্যে এই সমীক্ষা করা হয়েছিল। ১৫২জনই ছিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেন্ট লুইসের বার্ন জিউস হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৪৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছিল। গবেষকরা বিস্তারিত পরীক্ষার পর জানিয়েছেন গবেষণা চলাকালীন ২৫ জন পুরুষসহ ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
Cyclone Yaasর দাপটে বিপর্যস্ত পুরুলিয়া, বান এসেছে রুক্ষ কংসাবতীতে ...
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন কেবলমাত্র টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষদের মধ্যে কোভিড ১৯এর তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। ৯০ জনের মঝ্যে ৮৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৬ জনের অবস্থা ছিল গুরুতর। ৬৬ জনের মধ্যে ৩৩ জনই হাসপাতালে মারা যায়। হাসপাতালে থাকার সময়ই ৩৫ জন পুরুষের শারীরিক অবস্থার তীব্র অবনতি হয়। মৃতদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে প্রত্যেকের শরীরে টেস্টোস্টেরেনের ঘনত্ব অনেকটাই কম ছিল। তাতেই গবেষকরা মনে করছেন টেস্টোস্টেরেনের ঘনত্বই পুরুষদের কোভিড ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। আগামী দিনে এই বিষয়টি করোনা চিকিৎসায় গুরুত্ব পাবে বলেও দাবি করা হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে স্থূলতা, বিপাক সনড্রোম টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও দীর্ঘকালীন অসুস্থতাই পুরুষদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন সম্ভবত তাদের করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। তাই ইস্ট্রজেন থেরাপি কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।