ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র ৫ দিন বাকি। প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হচ্ছে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ভারত অভিযান শুরু করছে আগামী ৫ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই। এইবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে হলেও যে সময়ে ম্যাচ ফেলা হয়েছে তাতে ভারতীয় দর্শকদের খেলা দেখতে বিশেষ সমস্যায় পড়তে হবে না। বেশিরভাগ ম্য়াচই পড়েছে বিকেল ৪টে থেকে। আর কয়েকটি সন্ধ্যা ৭টায়।
এরপরেও চাকরি-ব্যবসা-পড়াশোনা বা অন্য বিভিন্ন কারণে সব খেলা হয়তো ক্রিকেট প্রেমী পক্ষে দেখা সম্ভব হবে না। কিন্তু এইবার যে ফর্ম্যাটে খেলা হচ্ছে তাতে ১০টি দলই একে অন্যের বিরুদ্ধে একার করে খেলবে। কাজেই বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারত-পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া, ক্রিকেট বিশ্বের এই সবচেয়ে তীব্র দুই ক্রিকেট প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে পাওয়াটা নিশ্চিত হয়েছে। ক্রিকেট প্রেমীরা যথাক্রমে ১৬ ও ২৫ জুন তারিখের এই দুই ম্যাচ নিশ্চয়ই ছাড়বেন না। এরসঙ্গে ক্যালেন্ডারের দাগ দিয়ে রাখুন আরও ৫টি তারিখ। বিশ্বকাপের এই পাঁচটি ম্যাচও কিন্তু ছাড়লে অনেক বড় কিছু হারাবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া, ৮ জুন
সম্ভবত সেই ইডেন গার্ডেন্সে সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়- স্টিও ওয়া ঘটনার সময় থেকেই প্রা.য় ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে টক্কর দিচ্ছে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেটের যে কোনও ফর্ম্যাটেই এই দুই দলের ম্যাচে টান টান উত্তেজনা থাকে। চলতি বছরের শুরুতেই দুই দলের মধ্যে দুটি একদিনের সিরিজ খেলা হয়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বিরাটরা অজিদের হারিয়ে আসলেও, ফিরতি সিরিজেই ভারতীয় দলকে ৩-২ ফলে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবার তাঁদের দুই নির্বাসিত খেলোযাড় স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারও থাকবেন।
ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্টইন্ডিজ, ১৪ জুন
যাঁরা চার-ছক্কার ধুন্ধুমার ক্রিকেট দেখতে ভালোবাসেন, তাঁরা এই ম্যাচ কিছুতেই ছাড়বেন না। একদিকে থাকবেন, জস বাটলার, জনি বেয়ারস্টো, ইয়ন মর্গান, বেন স্টোকস-করা। অন্যদিকে থাকবেন, গেইল, ব্রাভো, রাসেল, হেটমায়ার-রা। য়োগ্যতা অর্জ পর্ব খেলে বিশ্বকাপের টিকিট জোগার করলেও এই ওয়েস্টইন্ডিজ দল কী করতে পারে তার প্রমাণ মিলেছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদারদের সিরিজ ২-২ ফলেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। চতুর্থ ম্যাচে ইংল্যান্ড ৪১৮ রান তুলেছিল। ওয়েস্টইজ থামে মাত্র ২৯ রান পিছনে। ওই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ডও হয়।
অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ৬ জুলাই
ক্রিকেট রোমান্টিকদের মনে গেঁথে রয়েছে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের রোমহর্ষক সেমিফাইনাল। সেই থেকে এই বিশ্বকাপে এই দুই দলের লডা়ইটা সবসময়ই জমজমাট। সেইসঙ্গে এই বার রয়েছে স্মিথয়ার্নারের প্রত্যাবর্তর ঘটনাও। ২০১৮ সালের শুরুতে প্রোটিদের বিরুদ্ধে টেস্টেই তাঁদের বল বিকৃতির লজ্জায় পড়তে হয়েছিল। তারপর এই প্রথম তাঁদের মুখোমুখি হবেন। এর পাশাপাশি দুই দলের দুর্দান্ত সব জোরে বোলারদের টক্করও জমে উঠতে পারে।
পাকিস্তান বনাম আফগানিস্তান, ২৯ জুলাই
ভালো ক্রিকেট ম্যাচ হওয়ার জন্য যে সবসময়ে একেবারে উচ্চ দরের দল থাকে হবে তার কোনও মানে নেই। এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও কিন্তু ভারত বনাম বাংলাদেশের মতো ক্রমশ জমে উঠছে। এশিয়া কাপে পাকিস্তান কোনও রকমে পরাজয় এড়ালেও, বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্য়াচে কিন্তু আফগানিস্তান পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এইবারের টুর্নামেন্টের সেরা স্পিন বোলিং আক্রমণ রয়েছে আফগানদের হাতে। অন্যদিকে নিজেদের দিনে পাকিস্তানকে হারানো প্রায় অসম্ভব। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন এই বিশ্বকাপের মোকাবিলাই পাকিস্তান-আফগানিস্তান ক্রিকেট-শত্রুতাকে পরের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
ভারত বনাম ইংল্যান্ড, ৩০ জুন
১৪ জুলাই লর্ডসে ফাইনাল। তার আগে এই ম্যাচ সেই ফাইনাল ম্যাচের মহড়া হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আইসিসি ক্রমতালিকায় এখন ইংসল্যান্ড রয়েছে ১ নম্বরে, পরের স্থানেই ভারত। এতদিন ভারতীয় ব্যাটিং শক্তিশালী ছিল, আর ইংরেজদের শক্তি ছিল বোলিং। কিন্তু এইবার অবস্থাটা অনেকটাই অদল বদল হয়ে গিয়েছে। ইংরেজ ব্য়াটিং-এর যা গভীরতা তাতে তারা প্রতি ম্যাচেই ৩৫০ এর বেশি রান তুলছে। অপরদিকে ভারতীয় বোলিং একধিক ম্যাচে ৩৫০ রান তোলার উইকেটে প্রতিপক্ষকে ২৫০-এর মধ্যে আটকে দিয়েছে। কাজেই ধারে ভারে সব দিক থেকেই লিগ পর্যায়ে এই ম্য়াচেরই আসন্ন বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।