আইপিএল ২০২২ (IPL 2022) -এ টানা ষষ্ঠ হার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians)। ১৮ রানে ম্য়াচ জিতল লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Ginats)। ম্য়াচে প্রথমে ব্য়াট করে ১৯৯ রান করে লখনউ। সেঞ্চুরি করে কেএল রাহুল (KL Rahul)। জবাবে ১৮১ রানে শেষ মুম্বইয়ের ইনিংস।
ব্য়াটে-বলে অনবদ্য লখনউ সুপার জায়ান্টস। প্রথমে ব্য়াট হাতে কেএল রাহুলের দাপুটে সেঞ্চুরি। পরে বল হাতে আবেশ খান, রবি বিষ্ণোইদের দুরন্ত বোলিং। যার সুবাদে আইপিএল ২০২২-এ ১৮ রানে রোহিত শর্মার দলকে হারাল কেএল রাহুলের দল। টানা ষষ্ঠ হার মুম্বইয়ের। যা আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার। ম্য়াচে টস হেরে প্রথমে ব্য়াটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান করল লখনউ সুপার জায়ান্টস। ৬০ বলে ১০৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন কেএল রাহুল। এরপর ৩৮ রান করেন মনীশ পাণ্ডে ও ২৪ রান করেন কুইন্টন ডিকক। মুম্বইয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন জয়দেব উনাদকাট। রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রানে থামে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন সূর্যকুমার যাদব। লখনউয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আভেশ খান।
এদিন ব্য়াট হাতে শুরুটা দুরন্ত করেছিল লখনউ সুপার জায়ান্টসের দুই ওপেনার কেএল রাহুল ও কুইন্টন ডিকক। ইনিংসের শুরু থেকেই মারকাটারি ভঙ্গিতে ব্য়াট করতে শুরু করেন দুই তারকা ক্রিকেটার। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই নিজেদের অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ পূরণ করে ফেলেন রাহুল-ডিকক জুটি। দলের ৫২ রানের মাথায় ২৩ রানের ইনিংস খেলে ফ্যাবিয়ান অ্যালেনের বলে এলবিডব্লু আউট হন ডিকক। এরপর মনীশ পাণ্ডে ও কেএল রাহুল দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান। একদিক থেকে মনীশ পাণ্ডে ধরে খেললেও অপরদিক থেকে একের পর এক আক্রমণাতমক শট খেলে যান কেএল রাহুল । নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন তিনি। ৭২ রানের পার্টনারশিপ করার পর দ্বিতীয় উইকেট পড়ে। ৩৮ রান করে মুরগান অশ্বিনের বলে আউট হন মনীশ পাণ্ডে। এরপর ক্রিজে এসেই আক্রমণাত্মক ব্য়াটিং করার চেষ্টা করলেও ১০ রান করে আউট হন মার্কাস স্টয়নিস। জয়দেব উনাদকাট উইকেট নেন অজি তারকার। এরপর দীপক হুডা যোগ দেন কেএ রাহুলের সঙ্গে। লখনউ অধিনায়ক চালিয়ে যান নিজের মারকাটারি ইনিংস। একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি মেরে নিজের শতরানও পূরণ করেন তিনি। শেষ ওভারে গিয়ে উনাদকাটের বলে আউট হন দীপক হুডা। ৪৩ রানের পার্টনারশিপ করেন কেএল রাহুলের সঙ্গে। শেষ ওভারে খুব একটা রানে আসেনি। ১৯৯ রানে থামে লখনউয়ের ইনিংস। ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন কেএল রাহুল। ৫টি ছয় ও ৯টি চারে সাজানো তার ইনিংস।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। গলের ১৬ রানে প্রথম উইকেট পড়ে। ৬ রান করে আভেশ খানের বলে আউট হন তিনি। এরপর ক্রিজে এসে আক্রমমাত্মক ব্য়াটিং করা শুরু করেন ডিওয়াল্ড ব্রেভিস। ইশান কিশানের সঙ্গে ৪১ রানের পার্টনারশিপ করেন। কিন্তু বেশি বড় ইনিংস খেলতে পারেননি ব্রেভিস। ১৩ বলে ৩১ রান করে আবেশ খানের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ৫৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ার পর একই রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে মুম্বইয়ের। ১৩ রান করে মার্কাস স্টয়নিসের বলে আউট হন ইশান কিশান। এরপর সূর্যকুমার যাদব ও তিলক ভার্মা একটা পার্টনারশিপ করে মুম্বইয়ের জয়ের আশা টিকিটে রেখেছিল। কিন্তু তাদের জুটিও ভাঙে ৬৪ রানের পার্টনারশিপ করার পর। দলের ১২১ রানের মাথায় আউট হন তিলক ভার্মা। ২৬ রান করে জেসন হোল্ডারের বলে আউট হন তিনি। এরপর প্য়াভেলিয়নে ফেরেন সূর্যকুমার যাদবও। দলের ১২৭ রানে ব্যক্তিগত ৩৭ রান করে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট সূর্যকুমার যাদব। এরপর পোলার্ড একদিকে লড়াই করার চেষ্টা করেন। অপরদিকে ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ৮ রান করে আবেশ খানের তৃতীয় শিকার হন। ১৫৩ রানে পড়ে মুম্বইয়ের ষষ্ঠ উইকেট। তারপর উনাদকাট কিছুটা সঙ্গ দেন পোলার্ডকে। ক্যারেবিয়ান তারকা কয়েকটি আক্রমণাত্মক শট খেলেন। দলের ১৭৫ রানে ব্যক্তিগত ১৪ রানে রান আউট হন উনাদকাট। ৬ রান করে রান আউট হন মুরগান অশ্বিন। শেষ ওভারে ব্যক্তিগত ২৫ রানে দুষ্মান্তা চামিরার বলে আউট হন পোলার্ড। ১৮১ রানে থামে মুম্বই। এই জয়ের ফলে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল লখনউ সুপার জায়ান্টস।