মঙ্গলবার ঘরির কাটায় তখন সন্ধে ৬টা । তখনও নিয়মিত যান চলাচল চলছে ধর্মতলা চত্বরে। ঠিক ৬টা বেজে ১০ হতেই অসংখ্য মানুষের ঢল ইডেন গার্ডেন্সের সামনে। টার্গেট একটি সাদা নাম করা সংস্থার গাড়ি। পাশাপাশি ট্রফিক জামে বন্ধ গোষ্ঠ পাল সরণী থেকে ধর্মতলা যাওয়ার রাস্তা। রাস্তায় তখন একটাই ধ্বনি লং লিভ সৌরভ ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জিন্দাবাদ। তবে না ধর্মতলার দিকে এগিয়ে যাওয়া কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিল নয়। আতসবাজির ফোয়ারা ও মানুষের ঢলে এভাবেই মঙ্গলবার সিএবিতে প্রবেশ করলেন নব নির্বাচিত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ও প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ফুলের ফোয়ারা সঙ্গে আতসবাজি ও গোলাপের মালা দিয়ে এদিন রেড কার্পেটে হেটেই ইডেনে প্রবেশ করলেন বোর্ড সভাপতি।
বোর্ডের সভাপতি হিসাবে বিসিসিআইয়ের মসনদে ২৩ অক্টোবর বসছেন বাংলার গর্বের মহারাজ। আর সেই দায়িত্ব নেওয়ার আগে মঙ্গলবার শহরে এলেন সৌরভ। বিকেল ৫টা বিমানবন্দরে নামার পর সোজা সিএবিতে পা রাখলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। রাজকীয় ভাবে বরণ করে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি মঙ্গলবার সিএবিতে কেক কেটে সেলিব্রেট করা হল সৌরভের সাফল্য। হাজির ছিলেন সিএবির প্রতিটি কর্মকর্তা। একই সঙ্গে মঙ্গলবার কলকাতার সংবাদ মাধ্যমের সামনে নস্টালজিয়া প্রকাশ করলেন মহারাজ। জীবনের প্রতিটি ধাপেই জয় পেয়েছেন গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির ছোট ছেলে। আর যেই জায়গায় স্বীকৃতি মেলেনি সেই জায়গায় নিজের দক্ষতা দেখিয়েছে সৌরভ। মঙ্গলবার সিএবিতে এসে মহারাজ বলেন, 'ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করেছি। ভালো ক্রিকেট খেলেছি। ভারতের হয়ে ১০০টির বেশি টেস্ট খেলেছি। ৩০০র বেশি একদিনের ম্যাচ খেলেছি। আশা করি সব কিছু একটু হলেও আমাকে সাহায্য করবে। ভালো লাগছে এমন একটা পদ পেয়ে। এটা বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে।'
১৯৯৬ সালে সফল ক্রিকেটার হওয়ার পর কলকাতায় ফিরে এমন একটা অবস্থা হয়েছিল শহর কলকাতায়। ইডেনের সামনে ভির ও মানুষের ঢল ছিল ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখার। এবার বোর্ড সভাপতি সৌরভকে ঘিরেও ছিল একই রকম উন্মাদনা। তবে সব কিছুকে উপেক্ষা করে সৌরভ কিন্তু নিজের ক্রিকেটীয় কেরিয়ারকেই এগিয়ে রাখলেন মঙ্গলবার। সৌরভ বলেন, 'আগে অবশ্যই ক্রিকেট। সেটা প্রধান। ক্রিকেটার হিসাবে নিজেকে এগিয়ে রাখবো। তবে দুটো সম্পূর্ণ দিক। এখানে কাজটা সোজা। ক্রিকেটার হিসাবে অধিনায়ক হিসাবে কাজটা কঠিন ছিল।'
ভারতীয় দলে থাকা কালিন বেশ কিছু বার নিজের জায়গায় বিনা কারণে হোচোট খেতে হয়েছিল সৌরভকে। এমনকি রাজনীতির শিকারও হতে হয় তাঁকে। তবে কি এবার সেই সব কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। এই প্রশ্নের উত্তরে মহারাজ বলেন, 'এমন কিছুই হয়নি। কিছু সময় এমনটা হয়ে থাকে। তবে যদি আমার সঙ্গে এমনটা হত তাহলে আমি ৩০০র বেশি একদিনের ম্যাচ ও ১০০র বেশি টেস্ট খেলতে পারতাম না।' মঙ্গলবার সিএবিতে এসে সতীর্থ কর্মীদের সঙ্গে তেমন ভাবে সময় কাটাতে পারেননি সৌরভ। তাই বাকিদের সঙ্গে সেভাবে সিএবি সভাপতি পদ নিয়ে এখনও কথা হয়নি বলেই জানান মহারাজ। তবে আগামী সিএবি সভাপতি ঠিক করে দিয়েই বোর্ডের চেয়ারে বসবেন মহারাজ এমনটা ইঙ্গিতও দিয়ে গেলেন তিনি। এবার সিএবি সভাপতি হিসাবে এগিয়ে রয়েছেন জগমোহন ডালমিয়া পুত্র, অভিষেক ডালমিয়া।