Durga Puja- শিলা রূপে মা দুর্গা পুজিত হন জঙ্গলমহলে

পুজোর মূল বৈশিষ্ট্য হল সারাবছর অব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের কর্মকার পুরোহিতের কাছ থেকে পুজো নেন মা। কিন্তু, পুজোর পাঁচ দিন মা দুর্গা ব্রাহ্মণ পুরোহিতের কাছ থেকে পুজো নেন। বছর ভর সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার ঝালদা মুচি গড়িয়ায় শিলা রুপি মা দুর্গার এই পুজো করেন কর্মকার সম্প্রদায়ের পুরোহিত দুলাল কর্মকার।

এখানে প্যান্ডেল নেই, মন্দির নেই, আলো নেই, ডিজে মিউজিক এবং আলোর ব্যবস্থা কোনটাই নেই। এখানে আছে শুধুমাত্র একটি বট গাছ আর তার নিচে শিলা। এই কালো রঙের এই পাথরকে ভক্তি আর বিশ্বাস ভরে আজও শিলা রুপি মা দুর্গা বলে পুজো করেন এলাকার মানুষ। কোলাহলহীন জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার ঝালদা শহরে আদিকাল থেকে এভাবেই দুর্গারূপে শিলা পুজো হয়ে আসছে। 

পুজোর মূল বৈশিষ্ট্য হল সারাবছর অব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের কর্মকার পুরোহিতের কাছ থেকে পুজো নেন মা। কিন্তু, পুজোর পাঁচ দিন মা দুর্গা ব্রাহ্মণ পুরোহিতের কাছ থেকে পুজো নেন। বছর ভর সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার ঝালদা মুচি গড়িয়ায় শিলা রুপি মা দুর্গার এই পুজো করেন কর্মকার সম্প্রদায়ের পুরোহিত দুলাল কর্মকার। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম নয়। ঝালদা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জঙ্গলের মধ্যে বটগাছের নিচে শিলা রূপে আবহমানকাল ধরে হয়ে আসছে দুর্গাপুজো। এখনও তৈরি হয়নি কোনও মন্দির। পুজোয় বাজানো হয় না কোনও সাউন্ড সিস্টেম। থাকে না আলোর রোশনাই। কোলাহল হীন নিস্তব্ধ পরিবেশে এভাবেই পুজো নেন মা। খোলা আকাশের নিচে বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে রয়েছে পাহাড়ের কালো পাথরের অংশ। এই পাথরের অংশকেই মা দুর্গা রূপে পুজো করেন কর্মকার সম্প্রদায়ের পুরোহিত দুলাল কর্মকার। 

Latest Videos

আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোর ঘরোয়া টোটকাতেই মিলবে জীবনের সমস্যা থেকে মুক্তি

বহু বছর ধরে বংশ পরম্পরায় এইভাবে পুজো হয়ে আসছে। জায়গাটা পৌরসভা বা শহরের অংশ হলেও বেশ কিছুটা জঙ্গল এবং কাঁচা পাকা রাস্তা পেরিয়ে ওই বটগাছের নিচে পৌঁছতে হয়। জঙ্গলের ভেতরে মাথা ঝুঁকিয়ে  মায়ের কাছে পৌঁছাতে হয়। তারপরে দেখতে পাওয়া যাবে শিলা রূপে বিরাজমান মা দুর্গা। মায়ের কাছে পৌঁছেই  মনে হবে যেন ছোট্ট  কৈলাস পাহাড়ের একটি অংশে  রয়েছেন মা। পরতে  পরতে যেন অনুভব হবে মা দুর্গার উপস্থিতি। এটাই ভক্তি এটাই বিশ্বাস বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন- নীলমণি ঠাকুরের আমলে দুর্গাপুজো শুরু হলে ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে ধুমধাম শুরু দ্বারকানাথ ঠাকুরের আমলেই

এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষী কালিন্দী ও পুরোহিত দুলাল কর্মকার জানান। আমরা ছোট্ট থেকে দেখে আসছি।বয়স্কদের কাছ থেকে শুনেছি পূর্বপুরুষ ধরে চলে আসছে এই দূর্গা পুজো। এখানে কোনো মা দুর্গার  মূর্তি পুজা হয় না। পাথর পুজো হয়। এবং বাঙালি মতে নিয়ম মেনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীতে পুজো হয়। খুব জাগ্রত তাই প্রচুর ভক্ত আসেন পুজো দিতে।মানত  থাকলে মানত পূরণ করেন।

আরও পড়ুন-দ্বিতীয় বারাণসী মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জে রানি ভবানীর ঐতিহাসিক বারোয়ারি পুজো

এই পুজো স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় হয়ে আসছে যদিও কোভিড পরিস্থিতিতে সেই সহযোগিতাও মিলছে না বলে জানান পুজোর উদ্যোক্তারা। তবু বিধিনিষেধ মেনে পাঁচ দিন পুজো হবে। এই পুজো সারা বছর নাইয়া বা অব্রাহ্মণ কর্মকার সম্প্রদায়ের পুরোহিত দিয়ে পুজো হলেও পুজোর পাঁচ দিন নিয়ম-নীতি মেনে ব্রাহ্মণ পুরোহিত দিয়ে পুজো করানো হয়। তবে এই দুর্গাপুজো পুরুলিয়া সহ ঝালদার অনেকেই জানেন না। কারণ এই পুজোয় বাজে না ডিজে, হয় না মণ্ডপ। নেই সেইভাবে আলোর ব্যাবস্থা। তাই এই পুজো আজও অজানা। রয়েছে শুধু ভক্তিভরে বিশ্বাস। তাই লাখ লাখ টাকার বাজেট, অভিনব থিম আলোর কারসাজি আর সাউন্ড সিস্টেমে যখন গমগম করছে জেলা থেকে রাজধানী শহর। যখন শারদ উৎসবে মাতোয়ারা সারা দেশ। তখন রাজ্যের প্রান্তিক জেলার প্রান্তিক শহর ঝালদায় এক টুকরো সম্পূর্ণ দূষণহীন সবুজ গাছগাছালি পরিবেশে এক অন্যরকম দুর্গাপুজো যেন প্রকৃতির সৃষ্টি করা কোন থিম। যা বারে বারে হাতছানি দিয়ে ডাকে দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীদের।

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Dev Adhikari : এবার কী আসছে খাদান ২? খাদান সাফল্য পেতেই বড়সড় ঘোষণা দেব-যীশুদের
‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari
Narendra Modi : 'কুয়েত যেন মিনি হিন্দুস্তান', কুয়েত সফরে এসে কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী?