সমানে সমানে ভোট ভাগাভাগি তৃণমূল ও বিজেপির - বাংলায় তৈরি হল নয়া ভোট ব্যাঙ্ক

শুরু হয়ে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এর ভোট গণনা। ভোট প্রাপ্তির শতাংশ হার থেকে আসন সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি টক্কর চলছে বিজেপির। তবে কি রাজ্যে সংখ্যাগরীষ্ঠের ভোটব্যাঙ্ক তৈরি হল?

 

amartya lahiri | Published : May 23, 2019 5:38 AM IST

শুরু হয়ে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এর ভোট গণনা। ভোট প্রাপ্তির শতাংশ হার থেকে আসন সংখ্যা - পশ্চিমবঙ্গে একেবারে সমানে সমানে টক্কর চলছে বিজেপি ও তৃণমূলের। চতুর্থ রাউন্ডের গণনা চলাকালীন, এখনও পর্যন্ত ৪২টি আসনের মধ্যে ২১টি আসনে এগিয়ে টিএমসি। আর ১৯ টি কেন্দ্রে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস তাঁর ভোট পকেট ধরে রাখলেও প্রায় ধুয়ে মুছে গিয়েছে বামেরা। আর এরফলেই পশ্চিমবঙ্গের ভোটে এক নতুন ট্রেন্ড তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে শুধু আসন সংখ্যাই নয়, দেখা যাচ্ছে ভোট প্রাপ্তির শতাংশ হারেও অনেক এগিয়ে এসেছে বিজেপি। চতুর্থ রাউন্ডের গণনার শেষে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ভোট পেয়েছে ৪৫ শতাংশের মতো। আর বিজেপির পেয়েছে ৩৮.৫ শতাংশ। বামেরা গত নির্বাচনে ভোট পেয়েছিলেন ৩০ শতাংশের মতো। তাদের ভোট প্রাপ্তি প্রায় ৭ শতাংশের কাছে নেমে গিয়েছে। আর কংগ্রেস ২টি আসনে এখনও এগিয়ে থাকলেও তাদের ভোট প্রাপ্তি মাত্র ১.২৯। অর্থাত তৃণমূল মোটামুটি তাদের ভোটব্য়াঙ্ক ধরে রাখলেও, ধস নেমেছে বামেদের ভোটব্যাঙ্কে।

দেখা যাচ্ছে, বাম-কংগ্রেসকে প্রায় নস্যাত করে পশ্চিমবঙ্গে মূলত ভোট ভাগাভাগি হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যেই। অর্থাত ভোটে মেরুকরণ হয়েছে তা স্পষ্ট। প্রচার পর্বে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বারে বারে সংখ্য়ালঘু তোষণের অভিযোগ করেছেন। জয় শ্রীরাম স্লোগান নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অপরদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে ত্রাতা হিসেবে মমতা বন্দোপাধ্যায়কেই বেছে নিয়েছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়।

এর ফলে এই ভোটে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এতদিন পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ই ব্যাঙ্ক হিসেবে ভোট দান করতেন। অর্থাত, নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলকেই সম্প্রদায় হিসেবে সমর্থন দিতেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘসময় এই ভোট ব্যাঙ্ক ছিল বামেদের হাতে। তারপর তাঁরা আশীর্বাদ করেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে।

এইবারও তৃণমূল তাদের ভোট প্রাপ্তির হার ধরে রাখবে বলেই এখনও অবধি ভোটের ট্রেন্ড বলছে। কিন্তু, পাশাপাশি তৃণমূল বিরোধী ভোট অধিকাংশটাই বিজেপির ঝুলিতে যাওয়ায় সংখ্যাগুরুরাও ইভিএম-এ সম্প্রদায় হিসেবেই ভোট দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। উন্নয়ন, দুর্নীতি, র্মসংস্থান - সব বিষয় পিছনে ফেলে ভোট হয়েছে ধর্মীয় মেরুকরণের ভিত্তিতেই। যা এর আগে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে দেখা যায়নি।

১৯৪৬ সালের ভয়াবহ দাঙ্গার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত ধর্মের ভিত্তিতে ভা হতে দেখা যায়নি পশ্চিমবঙ্গকে। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরও পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় ছিল। কখনও  ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগাভাগি হতে দেখা যায়নি পশ্চিমবঙ্গে। এই নির্বাচন সেইদিক থেকে নতুন ট্রেন্ড তৈরি করল বাংলায় - এরকমটাই মত রাজনৈতিক মহলের।

 

Share this article
click me!