মঙ্গলবারই তিনি জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন তিনি। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, ৩০ মে প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি থাকবেন না। এর জন্য বিজেপি-র মিথ্যে প্রচারকেই দায়ী করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন দুপুরে টুইট করে নিজের সিদ্ধান্তে বদলের কথা জানিয়েছেন মমতা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, "নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজিকে অভিনন্দন। সাংবিধানিক নিমন্ত্রণ গ্রহণ করে আমি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকব ভেবেছিলাম। কিন্তু গত এক ঘণ্টায় সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন রিপোর্টে দেখছি বিজেপি দাবি করছে, এ রাজ্য ৫৪জন রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাংলায় কোনও রাজনৈতিক খুন হয়নি। এই মৃত্যুগুলি হয় ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক কলহ অথবা অন্য কোনও বিবাদের জেরে ঘটে থাকতে পারে, কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। আমাদের কাছে এরকম কোনও রেকর্ড নেই। ফলে আমি দু্ঃখিত নরেন্দ্র মোদীজি, এই মিথ্যে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে আমায় বাধ্য করেছে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান গণতন্ত্রকে উদযাপন করার একটি পবিত্র মুহূর্ত মুহূর্ত। এটাকে হাতিয়ার করে কোনও রাজনৈতিক দলের নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা উচিত নয়। দয়া করে আমায় ক্ষমা করবেন।"
গোটা নির্বাচন পর্বেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথার লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। যে কোনও মূল্যে নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ডাক দিয়েছিলেন মমতা। পাল্টা নরেন্দ্র মোদীও এ রাজ্যে তৃণমূল শাসনের অবসান ঘটানোর ডাক দেন। লোকসভা ভোটে দুরন্ত ফল করে এবার বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই তৃণমূলে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে। এই অবস্থাতেও নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। মঙ্গলবারই তিনি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার আমন্ত্রণ পান বলে জানান মমতা। এর পরে বেশ অন্যান্য রাজ্যের কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সাংবিধানিক রীতি মেনে এবং তাকে সম্মান দিয়েই তিনি দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সিদ্ধান্ত বদলে ফেললেন তৃণমূল নেত্রী। যার দায় বিজেপি-র উপরে চাপিয়ে রাজনৈতিক চালই দিলেন মমতা।