এবারের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের যে আসনগুলি নিয়ে সবথেকে বেশি চর্চা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম নিঃসন্দেহে ব্যারাকপুর। হয়তো বা সবথেকে বেশি আগ্রহ রয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার এই কেন্দ্রটিকে নিয়ে। তার একমাত্র কারণ, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন এলাকার ডাকাবুকো নেতা অর্জুন সিংহ। কিন্তু বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল যদি মিলে যায়, তাহলে বিজেপি-তে গিয়েও অর্জুনের সাংসদ হয়ে দিল্লি যাত্রা সম্ভবত এ বারে আর হচ্ছে না। কারণ এবিপি আনন্দ-নিয়েলসেন সমীক্ষা অনুযায়ী ব্যারাকপুরে হারতে চলেছেন অর্জুন। সেখানে সম্ভাব্য জয়ী হিসেবে তৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদী বলে এক্সিট পোলে দাবি করা হয়েছে।
অর্জুন ছাড়াও ভোটের আগে দলবদলের বাজারে আরও একটি বড় চমক ছিল মালদহ উত্তর কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূরের তৃণমূলে নাম লেখানো। ওই কেন্দ্রের এবারের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুও অবশ্য সিপিএম ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। মৌসমের তৃণমূলে যোগদান যেমন চমক ছিল, সেরকমই এক্সিট পোলের ফলেও চমক রয়েছে মালদহ উত্তর কেন্দ্রের জন্য। এবিপি আনন্দ-নিয়েলসেন সমীক্ষা বলছে, দলবদল করে বিজেপি-তে আসা খগেন মুর্মু এবার মালদহ উত্তর কেন্দ্র থেকে জিততে চলেছেন, হারের মুথ দেখতে হতে পারে বিদায়ী সাংসদ মৌসমকে।
অর্জুনের মতোই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে আসার সুফল সম্ভবত পাবেন না যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা। এমনিতেই তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী, তার সঙ্গে বামেদের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য়ের সঙ্গে লড়াইটা একটু বেশিই কঠিন ছিল অনুপমের। এক্সিট পোলের ফলেও তাঁকে পরাজিত হিসেবেই দেখানো হয়েছে।
অর্জুন, অনুপমের ভাগ্য শিঁকে ছেঁড়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও দলবদল করে বিজেপিতে আসা অন্য দুই প্রাক্তন তৃণমূল নেতার অবশ্য দিল্লি যাত্রা একরকম নিশ্চিত বলেই এবিপি আনন্দ-নিয়েলসেন সমীক্ষায় দাবি করা হচ্ছে। এক্সিট পোল অনুযায়ী, কোচবিহার কেন্দ্র থেকে জিততে চলেছেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। অন্যদিকে আদালতের নির্দেশে ভোটের সময় বিষ্ণুপুরে প্রচারে না গিয়েও ফের বিষ্ণুপুর থেকেই জিতে সংসদে যেতে পারেন সৌমিত্র খাঁ। একসময় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসে সাংসদ হওয়া সৌমিত্র ভোটের আগেই যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি-তে। এবিপি আনন্দ- নিয়েলসেন সমীক্ষায় সৌমিত্রকে সম্ভাব্য জয়ী হিসেবেই দেখানো হয়েছে।
এক্সিট পোলের ফল কতটা মিলল, তা বৃহস্পতিবারের আগে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি এই ফলের ধারেকাছেও সংখ্যাটা যায়, সেক্ষেত্রে বাংলায় দলবদলকারী নেতার তালিকা যে আরও দীর্ঘ হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।